‘আগামী নির্বাচনে উল্লেখ্যযোগ্য হারে ইভিএম ব্যবহার বাড়াতে হবে’

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন-ইভিএম ব্যবহার বাড়ানোর পক্ষে। আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে উল্লেখ্যযোগ্য হারে ইভিএম ব্যবহার বাড়াতে হবে। রাখঢাক করার কিছু নেই। দিস ইজ লাউড অ্যান্ড ক্লিয়ার। আওয়ামী লীগ মনে করে সুষ্ঠু, অবাধ নির্বাচনের জন্য ইসির গ্রহণযোগ্যতা, নিরপেক্ষতা ও সক্ষমতা গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া ইসির দায়িত্বশীল নিরপেক্ষ আচরণ, সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত ও ইভিএমে ভোটগ্রহণের পদ্ধতি বৃদ্ধি করতে হবে।

আজ (২৮ জুন) মঙ্গলবার রাজধানীর নির্বাচন ভবনে নির্বাচন কমিশন-ইসিআয়োজিত বৈঠকে অংশ গ্রহণ শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। প্রতিনিধি দলের সদস্যরা হলেন দলের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য কাজী জাফরুল্লাহ ও লে কর্ণেল (অব.) ফারুক খান, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সাহাবুদ্দিন চুপ্পু, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়–য়া ও সহ দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান।

ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ মনে করে, ইসির কার্যক্রমে ইভিএমসহ প্রযুক্তি বৃদ্ধির কারণে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ইভিএম ব্যবহারের ফলে ভোট ডাকাতি, কেন্দ্র দখল, নির্বাচনে জালিয়াতি ও ভোট চুরি বন্ধ হবে। আওয়ামী লীগ মনে করে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের জন্য ইসির গ্রহণযোগ্যতা, নিরপেক্ষতা ও সক্ষমতা গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া ইসির দায়িত্বশীল নিরপেক্ষ আচরণ ও সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য ইভিএমে ভোটগ্রহণ জরুরি।

তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের অধীনে নয়, বরং ইসির অধীনেই নির্বাচন হবে। নির্বাচন সম্পর্কিত সব ধরনের কর্তৃত্ব থাকবে স্বাধীন কমিশনের। নির্বাচনকালে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ নির্বাচন পরিচালনার জন্য আবশ্যকীয় সব সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান ইসির তত্ত্বাবধানে ন্যস্ত থাকবে। নির্বাচনকালীন সরকারের কর্মপরিধি কেবলমাত্র আবশ্যকীয় দৈনন্দিন রুটিন কার্যাবলির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে। বর্তমান সরকার ইসির কোনো কাজে হস্তক্ষেপ করবে না। একটা কথা কেউ কেউ বলে থাকে তারা বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবে না। বর্তমান সরকারের অধীনে কিন্তু নির্বাচন হচ্ছে না, নির্বাচন হবে ইসির অধীনে। ইসিকে স্বাধীন ও কর্তৃত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের জন্য বর্তমান সরকার ফ্যাসিলেটেড করবে, সম্পূর্ণ সহযোগিতা আমরা দেবো।

তিনি আরো বলেন, নির্বাচনের সময় আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসহ যেসব বিষয় নির্বাচন রিলেটেড, সেগুলো ইসির অধীনেই থাকবে। এখানে সরকারের করণীয় কিছু নেই। সরকার (নির্বাচনে) কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ করতে মোটেও আগ্রহী নয়। নির্বাচন কমিশন দলগুলোর সঙ্গে কারিগরি বিষয়ে ভোটদান নিয়ে আলোচনার আয়োজন করেছে। আমাদের আমন্ত্রণ জানানোয় আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আপনাদের ধন্যবাদ। এছাড়া বিতর্কিত কাউকে পর্যবেক্ষক হিসেবে নিয়োগ না দেওয়া, প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের রিটার্নিং অফিসার থেকে পোলিং অফিসার নিয়োগসহ একগুচ্ছ দাবির কথা বলেন তিনি। সংলাপে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দল সদ্য শেষ হওয়া কুমিল্লা সিটি করপোরেশন-কুসিক নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ায় কমিশনকে ধন্যবাদ জানায়।

আজকের সভায় আমন্ত্রিত ১৩টি দলের মধ্যে ১০টি দলের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। অংশ নেওয়া দলগুলো হলো- বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল-এমএল, গণতন্ত্রী পার্টি, বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টি, বিকল্প ধারা বাংলাদেশ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি- ন্যাপ, বাংলাদেশ বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি ও বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট।