রহমত ডেস্ক 29 January, 2022 10:36 PM
একাদশ জাতীয় সংসদে পাস হওয়া বহুল আলোচিত ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ বিল-২০২২’ অনুমোদন করেছেন মহামান্য রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। আজ (২৯ জানুয়ারি) শনিবার রাতে রাষ্ট্রপতি বিলটিতে স্বাক্ষর করেন বলে জানিয়েছেন সংসদ সচিবালয়ের গণসংযোগ শাখার পরিচালক মো. তারিক মাহমুদের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ একাদশ জাতীয় সংসদের ষোড়শ অধিবেশনে মহান জাতীয় সংসদে পাস হওয়া প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ বিল, ২০২২- এ তার সদয় সম্মতি প্রদান করেছেন।
সার্চ কমিটির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন-ইসি গঠনের জন্য জাতীয় সংসদে বিল উত্থাপন করা হয়েছে। এ বিলে একইসঙ্গে আগে গঠিত সব নির্বাচন কমিশনের বৈধতাও দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। রবিবার (২৩ জানুয়ারি) একাদশ জাতীয় সংসদের ষোড়শ অধিবেশনে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ বিল-২০২২’ উত্থাপন করেন। পরে বিলটি সাত দিনের মধ্যে পরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়। গত বৃহস্পতিবার স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অধিবেশনে সংবিধান নির্দেশিত ওই বিলটি বিরোধী দলের আপত্তির মুখে সংসদে পাস হয়।
সিইসি ও নির্বাচন কমিশনারদের যোগ্যতা : বিলে বলা হয়েছে সিইসি এবং নির্বাচন কমিশনার পদে কোনো ব্যক্তিকে সুপারিশ করার ক্ষেত্রে তিনটি যোগ্যতা থাকতে হবে- তাকে বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে। ন্যূনতম ৫০ বছর বয়স হতে হবে। কোনো গুরুত্বপূর্ণ সরকারি, বিচার বিভাগীয়, আধা সরকারি বা বেসরকারি পদে তার অন্যূন ২০ বছর কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
সিইসি ও নির্বাচন কমিশনারদের অযোগ্যতা : প্রস্তাবিত আইনে সিইসি এবং নির্বাচন কমিশনার পদের জন্য ছয়টি অযোগ্যতার কথা বলা হয়েছে। যদি আদালত কর্তৃক অপ্রকৃতিস্থ বলে ঘোষিত হন। দেউলিয়া হওয়ার পর দায় হতে অব্যাহতি না পেয়ে থাকেন। কোনো বিদেশি রাষ্ট্র্রের নাগরিকত্ব নেন বা বিদেশি রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য ঘোষণা বা স্বীকার করেন। নৈতিক স্খলনজনিত ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে অন্যূন দুই বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন। ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস (ট্রাইব্যুনালস) অ্যাক্ট-১৯৭৩ বা বাংলাদেশ কোলাবরেটরস (স্পেশাল ট্রাইব্যুনালস) অর্ডার-১৯৭২ এর অধীনে কোনো অপরাধেন জন্য দণ্ডিত হয়ে থাকেন। আইনের দ্বারা পদাধিকারীকে অযোগ্য ঘোষণা করছে না, এমন পদ ছাড়া প্রজাতন্ত্রের কর্মে লাভজনক পদে অধিষ্ঠিত থাকেন। বিলে বলা হয়েছে, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ অনুসন্ধান কমিটির কাজে সাচিবিক সহায়তা দেবে।
সার্চ কমিটি : খসড়া আইনে সার্চ কমিটির (অনুসন্ধান কমিটি) কাজ সম্পর্কে বলা হয়েছে, এই কমিটি স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতার নীতি অনুসরণ করে দায়িত্ব পালন করবে। আইনে বর্ণিত যোগ্যতা, অযোগ্যতা অভিজ্ঞতা, দক্ষতা ও সুনাম বিবেচনা করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার পদে নিয়োগের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ করবে। এই অনুসন্ধান কমিটি সিইসি এবং কমিশনারদের প্রতি পদের জন্য দুই জন করে ব্যক্তির নাম সুপারিশ করবে। কমিটির গঠনের দশ কার্যদিবসের মধ্যে সুপারিশ রাষ্ট্রপতির কাছে দেবে বলে খসড়া আইনে বলা হয়েছে।
কারা থাকবেন সার্চ কমিটিতে : বিলে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপতি সিইসি ও নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগের জন্য যোগ্য ব্যক্তিদের নাম সুপারিশের জন্য ছয় সদস্যের অনুসন্ধান কমিটি গঠন করবেন। এ কমিটির সভাপতি হবেন প্রধান বিচারপতি মনোনীত আপিল বিভাগের একজন বিচারক। সদস্য হিসেবে থাকবেন- প্রধান বিচারপতির মনোনীত হাইকোর্ট বিভাগের একজন বিচারক, মহা-হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, সরকারি কমিশনের চেয়ারম্যান এবং রাষ্ট্রপতি মনোনীত দুই জন বিশিষ্ট নাগরিক। তিন জন সদস্যের উপস্থিতিতে কমিটির সভার কোরাম হবে।