| |
               

মূল পাতা জাতীয় ভারতের আধিপত্যবাদ বিরোধী লড়াইয়ের প্রথম শহীদ আবরার ফাহাদ


ভারতের আধিপত্যবাদ বিরোধী লড়াইয়ের প্রথম শহীদ আবরার ফাহাদ


রহমত নিউজ     07 October, 2024     11:38 AM    


জুলাই বিপ্লবে ছাত্র-জনতার অভূত্থানে পতন হয় স্বৈরাচারি সরকার শেখ হাসিনার। আপাতদৃষ্টিতে শেষ হয় ভারতীয় আধিপত্য। তবে ভারতের এই আধিপত্যবাদ বিরোধী লড়াইয়ের শুরুটা হয়েছিল বুয়েটের ১৭তম ব্যাচের ইলেকট্রিক অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদের মৃত্যুর মাধ্যমে। সেই সূত্রে ভারতের আধিপত্যবাদ বিরোধী লড়াইয়ের প্রথম শহীদ আবরার ফাহাদ। দেশব্যাপী আলোচিত ছাত্রলীগের সেই নির্মম হত্যাকাণ্ডের আজ পাঁচ বছর পূর্ণ হলো। 

সোশ্যাল মিডিয়ায় ভারতবিরোধী স্ট্যাটাস দেওয়ায় ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর দিবাগত রাতে বুয়েটের শেরেবাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষ থেকে ডেকে নিয়ে নির্মমভাবে তাকে পিটিয়ে হত্যা করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। রাত ৩টার দিকে হলের দ্বিতীয় তলা থেকে আবরারের লাশ উদ্ধার করে কর্তৃপক্ষ।

স্ট্যাটাসটি দেওয়ার সময় তিনি কুষ্টিয়ায় গ্রামের বাড়িতে ছিলেন। পর দিন (৬ অক্টোবর) বিকালে তিনি বাড়ি থেকে বুয়েটের হলে ফেরেন।

হলে ফেরার কয়েক ঘণ্টার মাথায় আবরারসহ দ্বিতীয় বর্ষের সাত-আটজন ছাত্রকে শেরেবাংলা হলের দোতলার রাত ৮টার দিকে ২০১১ নম্বর কক্ষে ডেকে পাঠান তৃতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাত-আটজন নেতা। এসময় তারা আবরার ফাহাদের মোবাইল ঘাটতে থাকে। পরে আবরার ফাহাদের উপর শিবিরের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগ তুলে দফায় দফায় স্টাম্প দিয়ে পিটিয়ে তাকে হত্যা করা হয়। 

হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর রাজধানীর চকবাজার থানায় মামলা করেন শহীদ আবরার ফাহাদের বাবা মুহাম্মাদ বরকতুল্লাহ। 

আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করা হয় ২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর। রায়ে ২০ জনের ফাঁসির আদেশ দেন আদালত। এছাড়া এ মামলার অপর পাঁচ আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিল এখনো নিষ্পত্তি হয়নি। সব আসামির দ্রুত ফাঁসি কার্যকরের জোর দাবি আবরার ফাহাদের পরিবারের। এ বিষয়ে আবরারের ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ গণমাধ্যমকে বলেন, তিনজন আসামি এখনো পলাতক। তারা সবাই মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। এই আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও যেসব আসামি কারাগারে রয়েছেন, তাদের রায় দ্রুত কার্যকর করতে হবে।

ত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলো : বুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল (সিই বিভাগ, ১৩তম ব্যাচ), সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান রবিন (কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, ১৫তম ব্যাচ), তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকার (মেকানিক্যাল ইঞ্জনিয়ারিং,   ১৫তম ব্যাচ), সাহিত্য সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির (ওয়াটার রিসোর্সেস ইঞ্জিনিয়ারিং, ১৬তম ব্যাচ), ক্রীড়া সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন (মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং, ১৫তম ব্যাচ), উপসমাজসেবা সম্পাদক ইফতি মোশারফ সকাল (বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, ১৬তম ব্যাচ), সদস্য মুনতাসির আল জেমি (এমআই বিভাগ), সদস্য মুজাহিদুর রহমান (ইইই বিভাগ, ১৬তম ব্যাচ), সদস্য হোসেন মোহাম্মদ তোহা (এমই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), সদস্য এহতেশামুল রাব্বি তানিম (সিই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), শামীম বিল্লাহ (মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), মাজেদুল ইসলাম (এমএমই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভীর (মেকানিক্যাল, ১৭তম ব্যাচ), মাহমুদুল জিসান (ইইই বিভাগ, ১৬তম ব্যাচ), এ এস এম নাজমুস সাদাত (এমই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), মোর্শেদ অমর্ত্য ইসলাম (এমই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), মিজানুর রহমান (ওয়াটার রিসোসের্স, ১৬ ব্যাচ), শামসুল আরেফিন রাফাত (মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং), উপ-দপ্তর সম্পাদক মুজতবা রাফিদ (কেমিকৌশল), মাহামুদ সেতু (কেমিকৌশল), এহতেশামুল রাব্বি তানিম (সিই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), মাহমুদুল জিসান (ইইই বিভাগ, ১৬তম ব্যাচ) এবং মুজতবা রাফিদ (কেমিকৌশল)। এর মধ্যে শেষের তিনজন পলাতক রয়েছে।

যাবজ্জীবনের ৫ আসামি হলো : বুয়েট ছাত্রলীগের সহসভাপতি মুহতাসিম ফুয়াদ (১৪তম ব্যাচ, সিই বিভাগ), গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক ইসতিয়াক আহমেদ মুন্না (মেকানিক্যাল, তৃতীয় বর্ষ), আইনবিষয়ক উপসম্পাদক অমিত সাহা (সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং), সদস্য আকাশ হোসেন (সিই বিভাগ, ১৬তম ব্যাচ) ও মোয়াজ আবু হোরায়রা (সিএসই, ১৭ ব্যাচ)।