রহমত নিউজ ডেস্ক 06 December, 2023 12:17 PM
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার দেশে সবসময় গণতন্ত্র, সংবিধান, আইনের শাসন ও মানবাধিকার সমুন্নত রাখতে অঙ্গীকারবদ্ধ। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ’৯০ পরবর্তী সময় থেকে দেশে গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার রক্ষায় দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করে আসছে। ২০০৯ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেয়ে আমাদের সরকার দেশে গণতন্ত্রের ভিত্তিকে শক্তিশালী করতে এবং প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগ সরকার দেশে সবসময় গণতন্ত্র, সংবিধান, আইনের শাসন ও মানবাধিকার সমুন্নত রাখতে অঙ্গীকারবদ্ধ। সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের পথ বন্ধ হয়েছে। দেশে গণতন্ত্র আরো সুসংহত হয়েছে।
আজ (৬ ডিসেম্বর) ‘গণতন্ত্র মুক্তি দিবস’ উপলক্ষ্যে দেয়া এক বাণীতে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ৬ ডিসেম্বর ‘গণতন্ত্র মুক্তি দিবস’। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের ইতিহাসে এক তাৎপর্যপূর্ণ দিন। দীর্ঘ ৯ বছরের স্বৈরাচার বিরোধী অব্যাহত লড়াই-সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় ১৯৯০ সালের এই দিনে তৎকালীন স্বৈরশাসকের পতনের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হয়। জনগণ ফিরে পায় ভোটাধিকার। এ মহান দিবসে গণতন্ত্রের অতন্দ্র প্রহরী সংগ্রামী দেশবাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দূরদর্শী ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাঙালি জাতি পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙ্গে ছিনিয়ে এনেছিল আমাদের মহান স্বাধীনতা। সদ্য স্বাধীন যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব যখন সোনার বাংলাদেশ গড়ার সংগ্রামে নিয়োজিত, তখনই স্বাধীনতা বিরোধী-যুদ্ধাপরাধী চক্র তাঁকে পরিবারের বেশিরভাগ সদস্যসহ হত্যা করে। ইতিহাসের এই বর্বরতম হত্যার মাধ্যমে অসাংবিধানিক ও অবৈধ সরকার ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে জনগণের ভোটের অধিকার হরণ করে। গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ধ্বংস করে। মহান স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসকে বিকৃত করে দেশে সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য কায়েম করে। ইনডেমনিটি অর্ডিনেন্স জারি করে বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচারের পথ বন্ধ করে দেয়। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, জনগণের ভোট ও মৌলিক অধিকারসমূহ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আওয়ামী লীগ আবারো দীর্ঘ সংগ্রাম করে যেখানে দেশের মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করে, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের এই সংগ্রামে যুবলীগ নেতা নূর হোসেন, নূরুল হুদা, বাবুল, ফাত্তাহ, ছাত্রলীগ নেতা সেলিম-দেলোয়ার, পেশাজীবী নেতা ডা. শামসুল আলম খান মিলন, কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরের ক্ষেতমজুর নেতা আমিনুল হুদা টিটোসহ আরো নাম না জানা অগণিত গণতন্ত্রকামী মানুষের রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার রাজপথ।
তিনি আরো বলেন, অব্যাহত আন্দোলনের ফলে স্বৈরাচারী শাসক গণআন্দোলনের কাছে ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর নতি স্বীকার করে পদত্যাগে বাধ্য হয়। বহু শহীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে বাংলাদেশে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয় ভোটের অধিকার। গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠায় জাতি সকল শহীদের অবদান শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে। গণতন্ত্র মুক্তি দিবসে গণতন্ত্র ও অধিকার আদায়ের সংগ্রামে জীবন উৎসর্গকারী সকল শহীদের আত্মার মাগফেরাত ও শান্তি কামনা করেন। স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রবিরোধী চক্র এখনও নানাভাবে গণতন্ত্র ও দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র করছে, গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রায় শহীদের রক্ত বৃথা যেতে দিব না- গণতন্ত্র মুক্তি দিবসে এই হোক আমাদের সুদৃঢ় প্রত্যয়। আসুন, সকলে মিলে গণতন্ত্র ও দেশবিরোধী সকল চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে গণতন্ত্রের ভিত্তিকে আরো শক্তিশালী করি এবং দেশের উন্নয়ন ও জনগণের কল্যাণে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলি।