| |
               

মূল পাতা আন্তর্জাতিক আরব বিশ্বের বাইরে যে দেশে সবচেয়ে বেশি ফিলিস্তিনির বসবাস


বিবিসি বাংলার প্রতিবেদন

আরব বিশ্বের বাইরে যে দেশে সবচেয়ে বেশি ফিলিস্তিনির বসবাস


আন্তর্জাতিক ডেস্ক     19 November, 2023     01:34 PM    


গাজা বা পশ্চিম তীর থেকে দূরত্ব ১৩ হাজার কিলোমিটারের বেশি হবে। কিন্তু আরব বিশ্বের বাইরে যে দেশটিতে সর্বোচ্চ সংখ্যক ফিলিস্তিনি থাকেন সেটি হল দক্ষিণ আমেরিকার দেশ চিলি - যেখানে প্রায় পাঁচ লাখের মতো ফিলিস্তিনি বসবাস করেন। চিলিতে বসবাসকারী এই ফিলিস্তিনিরা সেখানে থেকেই ইসরায়েলের বিরুদ্ধে জোরালো আওয়াজ তুলছেন। এক মাস আগে ইসরায়েল-হামাস সংঘাতের পর থেকে চিলির রাজধানী সান্তিয়াগোতে হাজারো ফিলিস্তিনি ইসরায়েলি হামলার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকবার বিক্ষোভ করেছে।

ইসরায়েলে হামাসের ৭ অক্টোবরের হামলায় ১৪০০ মানুষের মৃত্যু হয় আর ২০০ জনকে জিম্মি করে নিয়ে যাওয়া হয়। আর ইসরায়েলি সরকার গাজায় যে অভিযান ও বোমাবর্ষণ করছে তাতে মৃত্যু ছাড়িয়েছে ১০ হাজার, যার মাঝে ৪৩০০ জনই শিশু - বলছে গাজায় হামাসের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। সবশেষ শনিবারেও তারা ফিলিস্তিনের ঐতিহ্যবাহী স্কার্ফ 'কুফিয়া' পরে প্ল্যাকার্ড হাতে প্রতিবাদ করেছে। প্রতিকূলতা, নিপীড়নের বিরুদ্ধে জেগে ওঠার মতো বা “এটা যুদ্ধ নয়, গণহত্যা” এমন প্রতিবাদী নানা স্লোগান দিয়ে তারা মুখর করে তোলে সান্তিয়াগোর রাস্তা।

চিলিতে বাস করা ফিলিস্তিনিদের অনেকেরই আত্মীয়স্বজন গাজা উপত্যকায় বা এর কাছাকাছি থাকে। ইসরায়েল সেখানে যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ করার পর সেসব স্বজনদের সাথে যোগাযোগ করাটাও তাদের জন্য কঠিন হয়ে গেছে। তারা পুরো সংকটটাকে অন্তর থেকে অনুভব করে। একটি ঘটনা তো পুরো তাদের সাথে সরাসরি যুক্ত ছিল। ঘাসান সাহুরিয়ে নামের সাত বছর বয়সী চিলির এক ফিলিস্তিনি শিশুকে গাজায় বেশ কয়েকদিন ধরে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিলো না। পরবর্তীতে একটি স্থানীয় হাসপাতালে তাকে খুঁজে পাওয়া যায়। চিলির ফিলিস্তিনি কমিউনিটির নির্বাহী পরিচালক ডিয়েগো খামিস বলেন, গাজায় যা হচ্ছে সেটা আমাদের মনে নাড়া দিয়েছে। সেখানের অবস্থা দেখে আমরাও আক্রান্ত হচ্ছি।

দক্ষিণ আমেরিকায় দেশটিতে ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ভেরা বাবুন জানান, ঐতিহাসিকভাবেই ফিলিস্তিনে ঘটা সব ধরণের নৃশংসতার বিরুদ্ধে চিলির ফিলিস্তিনিরা সোচ্চার। কিন্তু কীভাবে চিলির লোকজনের সাথে ফিলিস্তিনিদের সাথে এতটা সুসম্পর্কের বন্ধন গড়ে উঠলো? এতো বেশি সংখ্যক ফিলিস্তিনিই বা কেন এত দূরের একটা দেশে পাড়ি দেয়ার সিদ্ধান্ত নিলো?

চিলিতে কেন?
চিলিতে ফিলিস্তিনিদের অভিবাসন বুঝতে উনবিংশ শতকের শেষ দিকে যেতে হবে। জর্ডান নদী আর ভূমধ্যসাগরের মাঝে ফিলিস্তিন অঞ্চল শাসন করত অটোমানরা। মুসলমান, ইয়াহুদি ও খ্রিস্টান, সবার জন্যই জায়গাটা পবিত্র। ২০২১ সালে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ইউনিভার্সিটি অফ চিলির সেন্টার ফর অ্যারাব স্টাডিজের শিক্ষাবিদ রিকারডো মারজুকা বলেন, ফিলিস্তিনি, সিরিয়ান এবং লেবানিজরা এক অর্থনৈতিক সংকটের মাঝে দেশ ছেড়ে যেতে শুরু করে। তখন এ অঞ্চলে অটোমান সম্রাজ্যের পতন ও প্রথম আরব জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের দমনের সময় চলছিলো।

ফিলিস্তিনিদের মতো অনেকেই তখন সম্ভাবনাময় “নতুন বিশ্ব” হিসেবে আমেরিকার দিকের দেশগুলোকে দেখতে শুরু করেন। অনেক তরুণ ফিলিস্তিনিরা তখন স্থলপথে ইউরোপ এরপর সেখান থেকে সমুদ্র পাড়ি দিয়ে আর্জেন্টিনার বুয়েনোস আইরেসে যেতে থাকে। আর্জেন্টিনার রাজধানী ছিল তুলনামূলক ধনী এবং ইউরোপের মতো। কিন্তু সেখান থেকেও অনেকে আন্দিজ পাড়ি দিয়ে চিলির দিকে যেতে থাকে। হয়তো একরকম অজানা গন্তব্যের আকর্ষণেই। ১৮৮৫ থেকে ১৯৪০ সালের মাঝে চিলিতে আট থেকে দশ হাজারের মতো আরব ছিল। এই তথ্য লেখক লরেঞ্জো আগার করবিনসলার বই ‘দা অ্যারাব ওয়ার্ল্ড ইন ল্যাটিন আমেরিকা’র।

সেই আরবদের অর্ধেকই ছিল ফিলিস্তিনি যাঁদের অধিকাংশই তিনটি শহর থেকে এসেছিল - বেথলেহেম, বেইত জালা আর বেইত সাহুর। তিনটি শহরই জর্ডান নদীর পশ্চিম তীরে (ফিলিস্তিনের ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক অংশ) অবস্থিত। কিন্তু এরপর ভিন্ন ধরণের অভিবাসন শুরু হলো। যেমন প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর যখন অটোমান সাম্রাজ্য ভেঙ্গে যেতে শুরু করে এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর যখন ১৯৪৮ সালের ১৪ই মে যখন ইসরায়েল রাষ্ট্রের জন্ম হয়।

ইসরায়েল রাষ্ট্রের জন্মের দিনটি ফিলিস্তিনিদের কাছে ‘নাকবা’ বা বিপর্যয়ের দিন হিসেবে পরিচিত, কারণ তখন তাদের জন্য এক জাতীয় সংকটের শুরু হয়। সেই সময় প্রায় সাড়ে সাত লাখ ফিলিস্তিনিদের হয় অন্য দেশে পালাতে হয় নয়তো ইহুদি সেনাদের দ্বারা বিতাড়িত হতে হয়। নব্য অনেক দেশের মতো চিলির অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে এবং তাদের ভূখণ্ডকে জনবহুল করতে অভিবাসীদের প্রয়োজন ছিল। চিলির অভিজাতরা সাধারণত ইউরোপীয়দের পছন্দ করত, যাদেরকে উনবিংশ শতকের শুরু থেকে ভূমি ও নানা অধিকার দেওয়া হয়েছিল। তবে সেটার সুযোগ নেয় অনেক ফিলিস্তিনি এবং অন্যান্য আরবরা।

রিকারডো মারজুকা বলেন, এটা এক ধরণের চেইন এফেক্টের মতো ছিল, কোনো একটা দল চিলিতে আসতো, সাথে তাদের আত্মীয়-স্বজনদের নিয়ে আসতো। এই আবাসনের পেছনে বেশ কয়েকটি বিষয় কাজ করার কথা জানান তিনি। একটি হচ্ছে জলবায়ু, কারণ চিলির আবহাওয়ার সাথে ফিলিস্তিনের বেশ মিল রয়েছে। আরেকটি হচ্ছে “স্বাধীনতা যেটা অটোমান ও পরে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের দমনের কারণে তাদের জীবনে ছিল না!” আরো একটি কারণ অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি।

টেক্সটাইল শিল্প
যারা মধ্যপ্রাচ্য থেকে এসেছিল তারা বাণিজ্য এবং টেক্সটাইল শিল্পকে বেছে নিয়েছিল যেটা এ অঞ্চলকে সমৃদ্ধ করতে ভূমিকা রাখবে। তারা তাদের ঐতিহ্য অনুসরণ করেছিল। তারা দর কষাকষি করতে জানত। একই সাথে তারা একটা প্রয়োজনীয় চাহিদাও পূরণ করেছিল। তারা তাদের সাথে পণ্য নিয়ে এসেছিল। চিলির গ্রাম বা শহরাঞ্চলে কেনার মতো খুব বেশি কিছু ছিল না। রিকারডো মারজুকা বলেন, প্রথম দিকে ফিলিস্তিনিরা রাস্তার ধারে বিক্রি-বাট্টা শুরু করে। সেখান থেকে ছোট ব্যবসা, তারপর টেক্সটাইল উন্নয়নে এই পরিবারগুলির একটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান ছিল।

ফলে আবুমোহর পরিবারের প্রথম সদস্যরা চিলির ব্যবসার জগতে সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয় ও ক্রমশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। বাণিজ্য, আর্থিক খাত এবং এমনকি ফুটবলের ব্যবসার সাথেও তাদের নাম জুড়ে আছে এবং তারা দেশজুড়ে ঘুরে ঘুরে পাইকারি পণ্য বিক্রি করে। আরো একটি উদাহরণ ‘কাসা সাইয়েহ কোম্পানি। এটির মালিকানাও ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত পরিবারের যারা ১৯৫০ এর দশকে টালকা শহরে যাত্রা শুরু করেছিল। এই পরিবারের উত্তরসূরিরা পরবর্তীতে ব্যবসার জগতে পরিচিত হয়ে ওঠে। যেমন কর্প-গ্রুপ প্রতিষ্ঠানের প্রধান আলভারো সাইয়েহ। বর্তমানে আর্থিক খাত, খুচরা ব্যবসা এবং বিভিন্ন মিডিয়া, যেমন লা টেরসেরা সংবাদপত্রের সাথেও তাঁর বিনিয়োগ রয়েছে। অন্যান্য অভিবাসীরা নিজেরা তুলা বা সিল্ক তৈরি করে স্থানীয় কারিগরদের কাজ বা ব্যয়বহুল ইউরোপীয় আমদানির জায়গা নিয়ে নেয়।

ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূতদের উপাধি যেমন হিরমাস, সাইদ, ইয়ারুর এবং সুমার নামগুলো বললে মানুষের চোখে শক্তিশালী এক টেক্সটাইল শিল্পের ছবি ভেসে ওঠে। ১৯৮০ বা ১৯৯০ এর দশকে যখন অর্থনীতি খুলে দেয়া হয় তখন চীনাদের সাথে ব্যাপক প্রতিযোগিতা ছিল। তখন ফিলিস্তিনিরা নানা বৈচিত্র্যময় ব্যবসা, যেমন আর্থিক খাত, আবাসন, কৃষি, ওয়াইন উৎপাদন, খাদ্যদ্রব্য এবং মিডিয়ার মতো জায়গায় নিজেদের ব্যবসা বাড়াতে থাকে। অর্থনৈতিক উন্নয়নে তাদের ভূমিকার পাশাপাশি বৈচিত্র্যময় প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছিল তারা। এর মাঝে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল প্যালেস্টাইন ক্লাব, যেটি ১৯২০ সালে প্রতিষ্ঠিত চিলির প্রথম সারির একটি ফুটবল দল যারা দক্ষিণ আমেরিকার দেশের ফুটবল ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

রাষ্ট্রদূত ভেরা বাবুনের জন্য, এই দলটি চিলিতে ফিলিস্তিনিদের গুরুত্বের সবচেয়ে ‘উজ্জ্বল’ উদাহরণগুলির মধ্যে একটি। একটি দলের চেয়ে বেশি, একটি সম্পূর্ণ মানুষ। ফিলিস্তিনিরা সাফল্যের সাথে চিলি জুড়ে বিভিন্ন শহরে বসতি স্থাপন করেছিল যার মাধ্যমে চিলির মানুষের সাথে তাদের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

সান্তিয়াগোতে প্রসিদ্ধ “প্যাট্রোনাটো নেইবারহুড" তারা চালায়, যে জায়গাটি রেস্তোরাঁ, শোয়ারমা বা আরব মিষ্টির জন্য বেশ জনপ্রিয়। সেখানে গিয়ে সঙ্গীতের সুর শুনলেও মনে হবে এক ছোট্ট ফিলিস্তিনে এসে পড়েছেন। আইন, সংস্কৃতি এবং ব্যবসার ক্ষেত্রে ফিলিস্তিনি নাম বেশ গুরুত্ব বহন করে। রাজনীতিতেও তাদের অবস্থান রয়েছে। দলের নেতা, সিনেটর, ডেপুটি, মেয়র এবং কাউন্সিলরদের অনেকেই ফিলিস্তিনি।

রাষ্ট্রদূত ভেরা বাবুনের কথায়, চিলিতে ফিলিস্তিনি সম্প্রদায় সম্পর্কে সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয় হল যে তারা চিলির সাথে পুরোপুরি মিশে গেছে, কিন্তু একই সাথে তারা তাদের মাতৃভূমির সাথে নিবিড়ভাবে যুক্ত এবং ফিলিস্তিনের সংকট তাদের মনে জীবন্ত এক নাম।

টার্কোফোবিয়া বা তুর্কি-ভীতি
ফিলিস্তিনিদের জন্য অবশ্য নিজেদের জায়গা করে নেয়াটা সহজ ছিল না, বিশেষত প্রাথমিক বছরগুলিতে। অভিবাসী হিসেবে চিলির মানুষজনের বিভিন্ন ধ্যানধারণার শিকার হতে হয়েছিল। তাদেরকে অপমানজনকভাবে তুর্কি বলা হত। এটা ফিলিস্তিনিদের যে শুধু ভুল জাতীয়তার পরিচয়ে দেখা তেমন না, বরং অটোমান সাম্রাজ্যের সময় তাদের নিপীড়কদের সাথে তুলনা করার শামিল।

রিকারডো মারজুকা বলেন, ল্যাটিন আমেরিকাতে, সেইসাথে বিশ্বের অনেক অংশে, সভ্যতাগত প্রাচ্যবাদী চিন্তাধারা কাজ করে এবং টার্কোফোবিয়া নামে পরিচিত ঘটনাটি এখানে ঘটেছে। চিলির উচ্চ পর্যায় থেকে শুরু করে কিছু অভিজাত শ্রেণির মধ্যে ফিলিস্তিনিদের প্রত্যাখ্যানের বা কিছুটা চোখ কুঁচকে দেখার মানসিকতা ছিল। বলা হতো যে তারা সমাজে অবদান রাখবে না, তারা উচ্চাভিলাষী, যৌন দৃষ্টিকোণ থেকে উদার। যদিও বর্তমানে চিলিতে বসবাসরত ফিলিস্তিনিরা মনে করেন ‘টার্কোফোবিয়া’ বা ‘তুর্কি-ভীতি’ আসলে অতীতের একটা বিষয়। যদিও ইসরায়েলে হামাসের হামলা এবং গাজায় ইসরায়েলিদের অভিযানের পর থেকে আবারো কিছুটা বৈষম্যের আভাস পাচ্ছেন তারা।

দিয়েগো খামিস বলেন, আমরা উদ্বিগ্ন কারণ আমরা বিশ্বাস করেছিলাম যে 'টার্কোফোবিয়া' সম্পূর্ণভাবে কেটে গেছে। এবং চিলিতে এত বছর ফিলিস্তিনিদের উপস্থিতির পরে এই ধরণের বৈষম্যের ভাব অগ্রহণযোগ্য, চিলির ফিলিস্তিনি সম্প্রদায় প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশন (পিএলও)-কে "ফিলিস্তিনি জনগণের একমাত্র বৈধ প্রতিনিধি" হিসাবে স্বীকৃতি দেয় - হামাসকে নয়। তবে যে সংকট কয়েক দশক ধরে ফিলিস্তিনিদের উপর প্রভাব বিস্তার করেছে তার সাথে গাজায় বর্তমান ইসরায়েলি বোমা হামলা চিলিতে ফিলিস্তিনিদের শেকড়ের সাথে সংযোগ আরো গভীর করে তুলতে পারে। একটা সময় ছিল যখন চিলিতে ফিলিস্তিনিদের অনুভূতি অতটা স্পষ্ট ছিল না। কিন্তু সেটা বদলে গেছে। আজ সেখানে যা ঘটছে তা আরও পরিষ্কার হয়ে উঠেছে এবং সমস্যাগুলোও আরো দৃশ্যমান হয়ে উঠেছে। আমরা এখানে যতই মিশে যাই না কেন, রক্ত পানির চেয়ে ঘন হয়। রক্তের মূল্যটা আলাদা।