| |
               

মূল পাতা রাজনীতি আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগ বা শেখ হাসিনা কখনো পালিয়ে যায় না : প্রধানমন্ত্রী


আওয়ামী লীগ বা শেখ হাসিনা কখনো পালিয়ে যায় না : প্রধানমন্ত্রী


রহমত নিউজ ডেস্ক     01 August, 2023     06:49 PM    


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ সবসময় জনগণের পাশে আছে এবং ‘আওয়ামী লীগ বা শেখ হাসিনা কখনো পালিয়ে যায় না’, বরং তাঁর দলের একমাত্র লক্ষ্য দেশবাসীর জীবন ও জীবিকার উন্নয়ন। আমাদের বিরোধী দল, যদিও তারা সংসদে নাই, বলে-  আমরা নাকি পালাবার কোনো পথ খুঁজে পাব না। তারা হুমকি দিচ্ছে।যিনি এই ভাষণ দিয়েছেন-  তাকে তিনি মনে করিয়ে দিতে চান যে, ‘শেখ হাসিনা বা আওয়ামী লীগ কখনো পালায় না, পালিয়ে যায়নি কখনো’। 

মঙ্গলবার ( ১ আগস্ট) রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (কেআইবি) মিলনায়তনে বাংলাদেশ কৃষক লীগ আয়োজিত রক্তদান কর্মসূচি, আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, সংসদ উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী ও কৃষিমন্ত্রী ড. মুহাম্মদ আবদুর রাজ্জাক এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ ও আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম এতে বক্তব্য রাখেন। বাংলাদেশ কৃষক লীগের সভাপতি সমীর চন্দ্র চন্দের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক উম্মে কুলসুম স্মৃতি।  শুরুতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ১৫ আগস্টের অন্যান্য শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। আলোচনা শেষে শোকের মাস উপলক্ষে কেআইবিতে রক্তদান অভিযানের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১/১১ সরকারের সময় খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক জিয়া আর রাজনীতি করবেন না বলে মুচলেকা দিয়ে ২০০৭ সালে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। এখন তারা, যাদের দলের নেতা একজন দন্ডিত, তারা বড় বড় কথা বলছে। আপনারা (বিএনপি নেতারা) তো  ইতোমধ্যেই পলাতক রয়েছেন। একজন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামির অধিনে তারা কীভাবে এত বড় কথা বলতে পারে? তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হুমকি ও কঠোর বাধা সত্ত্বেও তিনি দেশে ফিরেছেন। সে সময় আমি বিদেশে ছিলাম। তারা (১/১১ সরকার) আমি দেশে ফিরি, তা চায়নি। তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমাকে আসতে দেয়নি। সব আন্তর্জাতিক এয়ারলাইন্সকে আমাকে নিয়ে ঢাকায় না নামতে বলা হয়েছিল। ঢাকায় তাদের অবতরণ করতে দেয়া হয়নি, এমন নির্দেশনা দেওয়ার পরও আমি জোর করে বাংলাদেশে ফিরে আসি। দলের নেতাকর্মীদের হুমকি দেওয়া হয়েছিল যে,  যারা বিমানবন্দরে যাবে-  তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে, কিন্তু “আমাদের নেতাকর্মীরা তাতে কর্ণপাত করেনি বরং আমি যখন ঢাকায় অবতরণ করি, তখন হাজার হাজার মানুষ বিমানবন্দরে জড়ো হয়েছিল। আমি সমস্ত রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে ফিরে এসেছি। খালেদা জিয়া ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর গণহত্যার মতো গণহত্যা চালিয়েছেন। আওয়ামী লীগের প্রায় ২১ হাজার নেতা-কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে, অনেককে নির্যাতন করা হয়েছে, বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়া এবং দখল করা হয়েছে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা এমন অপকর্ম করেও টিকে থাকতে পারেনি। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ সরকার গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে এবং সহনশীলতা দেখাচ্ছে। আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ওপর বিএনপি কর্তৃক ২০০১ সালের পর দমননিপীড়ন চালানো এবং ২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ সালে অগ্নিসন্ত্রাসের কথা উল্লেখ করেন, আমরা যদি এর এক শতাংশও প্রতিশোধ নিতাম, তাহলে এখন আপনার হদিস পাওয়া যেত না। আমরা প্রতিশোধে বিশ্বাস করি না।

তিনি বলেন, আমরা তাদের (বিএনপি) রাজনীতি করতে কোনো বাধা বা বিধিনিষেধ আরোপ করিনি। পুলিশের বাধার কারণে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা তাদের দলীয় কার্যালয়ে প্রবেশ করতে পারতো না অথচ ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার সময় সেখানে পুলিশ ছিল না। বিএনপি নেতাদের মনে রাখা উচিত যে খালেদা জিয়াকে ভোট কারচুপির অভিযোগে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছিল এবং ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের পর ৪৫ দিনও তিনি ক্ষমতায় থাকতে পারেননি। বিএনপি ২০০৬ সালে দেড় কোটি ভুয়া ভোটার নিয়ে আরেকটি নির্বাচনের পরিকল্পনা করেছিল (জানুয়ারি ২০০৭-এ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল) কিন্তু শেষ পর্যন্ত নির্বাচন বাতিল করা হয়েছিল। তাদের অপকর্মের কারণে দু’টি নির্বাচন বাতিল হয়েছে, তারা এত বড় কথা কিভাবে বলে? এটা আমার প্রশ্ন। আমার প্রশ্ন হলো এত টাকা তারা পাচ্ছে কোথা থেকে? সব চুরির টাকা কি এখন বের হচ্ছে? প্রতি মিটিংয়ে কত টাকা খরচ হচ্ছে? শেখ হাসিনা বলেন, মা-বাবা ও ভাইকে হারিয়ে এদেশের দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়ে বাবার স্বপ্ন পূরণের প্রত্যয় নিয়ে এসেছি। বাংলাদেশের জনগণের ভাগ্য নিয়ে আর কেউ যাতে ছিনিমিনি খেলতে না পারে সেজন্য তিনি আওয়ামী লীগের সকল সহযোগী সংগঠনকে একইভাবে কাজ করার নির্দেশ দেন তিনি।

ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবের বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি এবং তাঁর দলের নেতাকর্মীদের এডিস মশা দমনে তাদের প্রজনন স্থান ধ্বংস করে, জমে থাকা পানি অপসারণ এবং তাদের বাড়িঘর ও এলাকা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার জন্য কাজ করতে বলেন। শেখ হাসিনা বিএনপি সরকারের শেষের দিকে এবং ২০২৩ সালে দেশের কৃষি খাতের মধ্যে পার্থক্য তুলে ধরে বলেন, মোট খাদ্য উৎপাদন ২০০৬ সালে ২.৬১ কোটি মেট্রিক টন থেকে বেড়ে ২০২৩ সালে ৯.৭৯ কোটি মেট্রিক টন হয়েছে। খাদ্যশস্যের উৎপাদন ২০০৬ সালে ১.৮০ কোটি মেট্রিক টন থেকে ২০২৩ সালে বেড়ে ৪.৯২ কোটি মেট্রিক টন হয়েছে, একই সময়ে মাছের উৎপাদন ২১.৩০ লাখ মেট্রিক টন থেকে বেড়ে ৫৩.১৪ লাখ মেট্রিক টন হয়েছে। এখন ৭৯ লাখ হেক্টর জমি সেচ ব্যবস্থার আওতায় এসেছে, যা ২০০৬ সালে ছিল ২৮ লাখ হেক্টর। এছাড়া তিনি কৃষি গবেষণা, অন্যান্য কৃষি পণ্য উৎপাদন এবং খাতের জন্য ভর্তুকি বাড়ানোর ক্ষেত্রে তাঁর সরকারের সাফল্য তুলে ধরেন।