| |
               

মূল পাতা জাতীয় বিশ্বজুড়ে সংকট সত্ত্বেও ইইউ রোহিঙ্গাদের ভুলে যায়নি : গিলমোর


বিশ্বজুড়ে সংকট সত্ত্বেও ইইউ রোহিঙ্গাদের ভুলে যায়নি : গিলমোর


রহমত নিউজ ডেস্ক     31 July, 2023     10:53 AM    


ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) মানবাধিকারবিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি ইমন গিলমোর জানিয়েছেন, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে আরও কী কী করা দরকার সে বিষয়ে তারা অন্যান্য দেশের সঙ্গে আলোচনা করবেন। বিশেষত এই বছরে তাদের (রোহিঙ্গাদের) খাবার বরাদ্দ কমানোর বিষয়টি তাদের নজরে রয়েছে।

রবিবার (৩০ জুলাই)  ইউএনবিকে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন। গিলমোর সম্প্রতি বাংলাদেশে পাঁচ দিনের সফর শেষে ফিরে গেছেন। তিনি কক্সবাজারে একটি পুরো দিন কাটান। এসময় তিনি ৬ বছর আগে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের সঙ্গে দেখা করেন এবং তাদের অভিজ্ঞতা ও সমস্যার কথা শোনেন। গিলমোর চার বছর আগেও রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেছিলেন।

ইমন গিলমোর বলেন, বিষয়টির সমাধান করতে হবে এবং মিয়ানমারেই এর সমাধান করতে হবে। এই সংকটের সমাধান হতেই হবে। তাই এমন পরিস্থিতি তৈরি করা দরকার; যাতে বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গা শরণার্থীরা স্বেচ্ছায়, নিরাপদে ও সসম্মানে নিজ দেশে ফিরতে পারেন। আন্তর্জাতিক দাতাদের অর্থায়ন কমায় কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য খাবার বরাদ্দ প্রথমে ১২ ডলার থেকে ১০ ডলার (প্রতি মাসে জনপ্রতি) এবং পরবর্তী সময়ে ৮ ডলার করা হয়েছে।

এবারের সফরে ইমন গিলমোররোহিঙ্গাদের আশ্বস্ত করেছেন, বিশ্বজুড়ে বর্তমান সংকট সত্ত্বেও ইইউ রোহিঙ্গাদের ভুলে যায়নি। বাংলাদেশ সরকার ও শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের (আরআরআরসি) অফিসের প্রশংসা করে তিনি বলেন, আমরা প্রতিবেশী ও আসিয়ান দেশগুলোর সঙ্গে মিলে কাজ করছি।

আরআরআরসি মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় সরকার ও রহমানের ‘বীরত্বপূর্ণ’ কাজের প্রশংসা করে গিলমোর বলেন, বাংলাদেশ সরকার ও আরআরআরসি কৃতিত্বের সঙ্গে কাজ করছে। এছাড়া আরও কী করা দরকার তা নিয়ে তারা অন্যান্য দেশের সরকারের সঙ্গে আলোচনা করছেন। আমরা স্বীকার করি, এক্ষেত্রে সমর্থনের প্রয়োজন আছে। আমরা এ বিষয়ে কাজ চালিয়ে যাব এবং আমরা এটিকে আন্তর্জাতিক এজেন্ডা হিসেবে আলোচনায় রাখব।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিরাপত্তার দিক নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ইইউর এই বিশেষ প্রতিনিধি জানান, তিনি সরকারের প্রতিনিধি এবং সেখানে বসবাসকারী জনগণের সঙ্গে কথা বলে অভিভূত হয়েছেন। তারা আরও বেশি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চায় এবং তা করার জন্য কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কাজ করতেও তারা খুব আগ্রহী।’

এর আগে গিলমোর রোহিঙ্গাদের নিজদেশে ‘নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ ও স্বেচ্ছায়’ প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করার জন্য কী প্রয়োজন তা নিয়ে মিয়ানমারের তৎকালীন সরকারের সঙ্গে আলোচনা করেছিলেন। তিনি বলেন, ‘তারা এ বিষয়ে কাজ শুরু করেছিলেন। কিন্তু এরপর সামরিক বাহিনী দেশটির ক্ষমতায় বসে। অর্থাৎ অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতির সঙ্গে আরও একটি নতুন বিষয় যুক্ত হয়েছে; তাই অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে। আমরা মিয়ানমার সরকারের উপর সাত দফা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছি।

চলতি বছরের শুরুর দিকে ইইউ রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং বাংলাদেশে তাদের স্বাগতিক সম্প্রদায়ের মানবিক চাহিদা মেটাতে ৪৩ মিলিয়ন ইউরো সহায়তা করেছে। ইইউ জানিয়েছে, তারা রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশকে ২৩ মিলিয়ন ইউরো সহায়তা অব্যাহত রাখবে। যার একটি অংশ দেশে দুর্যোগ প্রস্তুতি কর্মসূচি বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখবে। এই মাসে ইইউ রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং বাংলাদেশে স্থানীয় জনগণের মানবিক চাহিদা পূরণের জন্য অতিরিক্ত ১২ দশমিক ৫ মিলিয়ন ইউরো সহায়তা দিয়েছে। ইইউ ১৯৯৪ সাল থেকে মিয়ানমারে এবং ২০০২ সাল থেকে বাংলাদেশের জনগণকে মানবিক সহায়তা দিয়ে আসছে। বাংলাদেশ কক্সবাজার জেলা ও ভাসানচরে ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে।