রহমত নিউজ ডেস্ক 20 July, 2023 08:12 AM
দেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি যে মারাত্মক রূপ ধারণ করিয়াছে। ডেঙ্গুর এই ভয়াবহ পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার ব্যার্থতার পরিচয় দিচ্ছে। ডেঙ্গু পরিস্থিতিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার প্রদান করে যথাযথ দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপের য়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া।
বুধবার ( ১৯ জুলাই) গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় এসব কথা বলেন।
নেতৃদ্বয় বলেন, সারাদেশে ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ছে। প্রতিদিন বাড়ছে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর ও মৃত্যুর সংখ্যা। প্রায় সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। ঢাকাসহ সারাদেশে ডেঙ্গু ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। ডেঙ্গুর ভয়াবহতা ব্যাপক হারে বাড়লেও এডিস মশা নিধনে দৃশ্যমান কিছু পরিলক্ষিত হচ্ছে না। বরং মশা মারার যে ওষুধ ব্যাবহার করা হচ্ছে তা অনেকটাই অকার্যকর। কার্যকর ওষুধ জরুরি ভিত্তিতে আনা হচ্ছে না। ডেঙ্গুর ভয়াবহ বিস্তার সরকারের সার্বিক গাফিলতি ও দুর্নীতির ফল। ডেঙ্গু যে বাড়বে, সরকারের স্বাস্থ্য অধিদফতরেরই প্রতিবা্রই পূর্বাভাস দিয়ে থাকলেও সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো তা আমলে নেয় না। আর এই আমলে না নেয়াটা বিশাল দায়িত্বহীনতার পরিচয়। এরপর কীটনাশক ও ওষুধ ক্রয়ে দুর্নীতি ঘটেছে। পরিস্থিতি নাগালের বাইরে যাওয়ার পরই, অনেক প্রাণহানি ও জনবিক্ষোভের পর সরকারের টনক নড়ে। প্রাণঘাতী করোনার সঙ্গে ডেঙ্গুও প্রতিরোধ করতেই হবে। এ ব্যাপারে সরকার কালবিলম্ব না করে এখনই যথাযথ পদক্ষেপ না নিলে জনজীবন রক্ষা করা যাবে না। তাই ঢাকা সিটি করপোরেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়র ও কাউন্সিলররা কথার ফুলঝুড়ি বাদ দিয়ে এখনই এ ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ নেবেন বলে প্রত্যশা করে দেশের নগরিকরা।
তারা বলেন, যেখানে বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেই, সেখানে স্বভাবতই কয়েকদিন ধরে পানি জমে থাকে। বিশেষত নির্মাণকাজ চলছে এমন জায়গায় এটি বেশি দেখা যায়। এসব জায়গায় জমে থাকা পানি অপসারণের পাশাপাশি নিয়মিত মশার ওষুধ ছিটাতে হবে। মশা নিধনের ওষুধ কেনার ক্ষেত্রে অতীতে অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে তা তদন্তপূর্বক বিচার করতে হবে। যাতে কেউ ভবিষ্যতে এ ধরনের অনিয়ম-র্দুর্নীতি করার দুঃসাহস দেখাতে না পারে। মনে রাখতে হবে অন্য যেকোনো সভ্য দেশে এমন পরিস্থিতিতে কর্তব্যে অবহেলা, দুনীতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতা এবং অযোগ্যতার দায় নিয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও মেয়রদের পদত্যাগ করতে হতো। যেহেতু ডেঙ্গুর ব্যাপকতা বেড়েছে, ডেঙ্গু ঢাকার বাইরেও ছড়িয়ে পড়েছে, যেহেতু ডেঙ্গুর প্রকোপ প্রলম্বিত হবার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে, যেহেতু আগাম সতর্কতার পরও ডেঙ্গু মোকাবেলার প্রস্তুতি ও সক্ষমতায় ঘাটতি রয়েছে, তাই শুধু ঢাকার দুইটি সিটি কর্পোরেশন ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ওপরে দায়িত্ব ছেড়ে না দিয়ে জাতীয় ভিত্তিতে সমন্বিতভাবে ডেঙ্গু মোকাবেলা করা সময়ের দাবি। ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবেলায় এখন পর্যন্ত যতটুকু হয়েছে, তা যথেষ্ট নয়, সমন্বিতও নয়। খোদ রাজধানীতেই ডেঙ্গুর চিকিৎসা সেবার অপ্রতুলতা ও হিমশিম অবস্থা চলছে। ঢাকার বাইরে ডেঙ্গু চিকিৎসার প্রয়োজনীয় সামর্থে্যর অভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে। ঢাকায় এডিস মশার বিস্তার প্রতিরোধে এখনও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। বরং এ ক্ষেত্রে গাফিলতি ও ব্যর্থতা এখনও রয়েছে।
তারা আরো বলেন, ডেঙ্গু এখন আর শুধু বর্ষাকালীন নয়, বরং সারা বছরের রোগ-ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে। এর পাশাপাশি রয়েছে করোনা সংক্রমণ। করোনা প্রতিরোধে সরকারের ভ্যাকসিন কার্যক্রম চলমান থাকলেও ডেঙ্গু মোকাবিলায় যথাযথ প্রস্তুতি, প্রতিরোধ এমনকি তহবিল বরাদ্দ নেই বললেই চলে। আষাঢ়ের বৃষ্টিপাতের মৌসুম শুরু হতে না হতেই রাজধানীসহ সারাদেশে বেড়েছে ডেঙ্গুর সংক্রমণ। হাসপাতালগুলোতে প্রতিদিনই ভিড় বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর। হেমোরেজিক ও শক সিনড্রমে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর খবরও আছে। অথচ প্রয়োজনীয় অর্থের অভাবে স্বাস্থ্য বিভাগ ডেঙ্গুর পরিস্থিতির ওপর নিয়মিত নজরদারি করতে পারছে না। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় বা সিটি করপোরেশন আগাম সতর্কতা পাওয়ার পরও এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগ না নিয়ে অপেক্ষা করে। যখন ডেঙ্গু ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে, তখন লোকদেখানো ওষুধ ছিটানো শুরু হয়। কাজেই আমরা মনে করি, ডেঙ্গু মহামারি আকার ধারণের পূর্বেই কোনো প্রকার সময়ক্ষেপণ না করে ডেঙ্গু মোকাবিলায় জরুরি ভিত্তিতে সিটি করপোরেশন ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়সমূহকে সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত।