রহমত নিউজ 08 June, 2023 05:46 AM
দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে আসন্ন রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় ১৬ নেতাকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করেছে বিএনপি। বুধবার (৭ জুন) রাতে নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীদের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষর করা চিঠিতে এ বহিষ্কারের কথা জানানো হয়। চিঠিতে বলা হয়েছে, দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে প্রার্থী হওয়ায় তাদের দল থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হলো। এর আগে গত সোমবার প্রার্থীদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল।
দলীয় সূত্র জানায়, রবিবার এসব প্রার্থীর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে কেন্দ্রে চিঠি দিয়েছিল রাজশাহী মহানগর বিএনপি। গত রবিবার আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এরশাদ আলী ঈশা ও সদস্য সচিব মামুন-অর-রশিদের সই করা চিঠিটি কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছিল।
বহিষ্কৃত নেতারা হলেন—নগর বিএনপির রাজপাড়া থানা কমিটির সাবেক সহসভাপতি বদিউজ্জামান বদি, ১১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি আবু বকর কিনু, শাহমখদুম থানা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি মো. টুটুল, শাহমখদুম থানা বিএনপির সাবেক সহসাধারণ সম্পাদক আব্দুস সোবহান লিটন, নগর যুবদলের সাবেক সহ-সভাপতি বেলাল আহম্মেদ, নগর যুবদলের সাবেক শ্রম বিষয়ক সম্পাদক রনি হোসেন রুহুল, নগর যুবদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুজ্জামান টিটু, ২২ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মির্জা রিপন, বোয়ালিয়া থানা (পূর্ব) যুবদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আলিফ আল মাহমুদ লুকেন, নগর বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি আনোয়ারুল আমিন আজব ও মতিহার থানা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি আশরাফুল হাসান বাচ্চু।
অপরদিকে, সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে অংশ নিয়ে বহিষ্কৃতরা হলেন—নগর মহিলা দলের সাংগঠনিক সম্পাদক মুসলিমা বেগম বেলী, নগর মহিলা দলের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক আলতাফুন নেসা পুতুল, নগর মহিলা দলের ১ নম্বর যুগ্ম সম্পাদক সামসুন নাহার, নগর মহিলা দলের সহ-সভাপতি শাহনাজ বেগম শিখা এবং নগর মহিলা দলের ৪ নম্বর যুগ্ম সম্পাদক আয়েশা খাতুন মুক্তি।
এর আগে দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে প্রার্থী হওয়ায় গাজীপুর, খুলনা, বরিশাল ও সিলেটে একই পদ্ধতিতে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নেতাদের দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করে বিএনপি। সেই ধারাবাহিকতায় রাজশাহীতেও ১৬ নেতার বিরুদ্ধে বহিষ্কারাদেশ দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও শাহমখদুম থানা বিএনপির সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সোবহান লিটন বলেন, ‘বহিষ্কারের চিঠির বিষয়ে আমার জানা নেই। বহিষ্কারাদেশ এখনও আমার হাতে এসে পৌঁছেনি। আমি দলের কোনও পদে নেই। ২০০৮ সালে নির্বাচনের সময় বলা হয়েছিল, দলের পদে থেকে কাউন্সিলর ভোট করা যাবে না। তখন আমি দল থেকে পদত্যাগ করেছি। এরপর আর দলের কোনও পদে আমি নেই। তখন থেকেই আমি কাউন্সিলরের দায়িত্ব পালন করছি। এখন দল কী সিদ্ধান্ত নেবে, সেটা দলের নেতাদের ব্যাপার।’
নগর মহিলা দলের ১ নম্বর যুগ্ম সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করা সামসুন নাহার বলেন, ‘বহিষ্কারের কোনও চিঠি পাইনি। দল যা ভালো মনে করবে, তাই করবে। এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।’
নগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ আলী ঈশা বলেন, ‘দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় নাম ও পদবি উল্লেখসহ কেন্দ্র থেকে চিঠি চাওয়া হয়েছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে ওই ১৬ জনের নাম ও পদবি উল্লেখসহ তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে কেন্দ্রে চিঠি পাঠানো হয়েছিল। তাদের আজীবন বহিষ্কার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ সংক্রান্ত চিঠি হাতে এসে পৌঁছায়নি এখনও। তবে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে জেনেছি।’