রহমত নিউজ ডেস্ক 06 May, 2023 10:09 PM
রংপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, আমরা চীন-ভারত বুঝি না। পদ্মা সেতুর মতো আমরা নিজস্ব অর্থায়নে তিস্তা মহাপরিকল্পনার বাস্তবায়ন দেখতে চাই। এটি গণমানুষের দাবিতে পরিণত হয়েছে। কিন্তু আমাদের এমপি-মন্ত্রীরা সংসদে প্রধানমন্ত্রীর কাছে তিস্তার দাবি তুলে ধরতে ভয় পায়। কারণ তারা মনোনয়ন হারানোর ভয় করে। যারা জনগণের গণ দাবি নিয়ে কথা বলতে চান না তাদেরকে রংপুরের মানুষ আগামীতে লাল কার্ড দেখাবে। পদ্মা সেতু যদি দেশের টাকায় নির্মাণ করা সম্ভব হয়, তাহলে তিস্তা মহাপরিকল্পনাও বায়স্তবায়ন করা সম্ভব। আমাদের প্রধানমন্ত্রীর সাহসী পদক্ষেপের কারণে আমাদের দেশের মানুষের নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু হয়েছে। ওই পদ্মা সেতুতে রংপুর বিভাগের মানুষের ট্যাক্স ও ভ্যাটের টাকা দেওয়া রয়েছে। বর্তমানে দেশে অনেকগুলো মেগাপ্রকল্প চলমান রয়েছে। কিন্তু উত্তরের মানুষের জন্য কোনো মেগাপ্রকল্প নেই। আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে তার ঘোষিত তিস্তা মহাপরিকল্পনার বাস্তবায়ন চাই।
আজ (৬ মে) শনিবার বিকালে রংপুর পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে নিজস্ব অর্থায়নে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন, তিস্তা চুক্তি সই ও রংপুর বিভাগের উন্নয়ন বৈষম্য নিরসনের দাবিতে তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদ আয়েজিত গণসমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। গণসমাবেশে তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম হক্কানীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শফিয়ার রহমানের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী এমপি, বাংলাদেশ জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান, তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য গেরিলা লিডার বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল ইসলাম কানু প্রমুখ।
উত্তর জনপদের মানুষের জীবন-জীবিকা, কৃষি ও প্রকৃতি বাঁচাতে দ্রুত তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে মেনন বলেন, তিস্তা মহাপরিকল্পনা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নিজেই উদ্যোগ নিয়েছিলেন। আমরা তার উদ্যোগে আনন্দিত হয়েছিলাম। কিন্তু আফসোস সেই তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে আজ পর্যন্ত আলোর মুখ দেখেনি। আজ তিস্তা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে। চরের ওপর চর পড়েছে। আর ভাঙনের পর ভাঙনে তিস্তাপাড়ের মানুষ আজ নিঃস্ব। বৈষম্য দূরীকরণ, দারিদ্রতার হার কমানোসহ নদী নির্ভর উত্তরাঞ্চলকে মরুকরণ থেকে বাঁচাতে তিস্তা চুক্তির পাশাপাশি তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন ছাড়া বিকল্প কোনো পথ খোলা নেই। এবার জাতীয় বাজেটে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে অর্থ বরাদ্দের জন্য জোর দাবি জানান তিনি।
তিস্তা নদীর সুরক্ষাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার দাবি জানিয়ে নেতৃবৃন্দ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে তিস্তা মহাপরিকল্পনার কথা শুনে আসছি। আজ পর্যন্ত তার বাস্তবায়ন শুরু হয়নি। অর্থ বরাদ্দ হয়নি। আর কিছুদিন পর ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপিত হবে। মাত্র সাড়ে আট হাজার কোটি টাকার জন্য তিস্তা মহাপরিকল্পনা আলোর মুখ দেখবে না, এটা আমরা বিশ্বাস করি না। তিস্তার সঙ্গে রংপুর অঞ্চলের কোটি মানুষের জীবন-জীবিকা জড়িত। আমরা চীন-ভারত বুঝি না। নিজস্ব অর্থায়নে এই মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে আসন্ন বাজেটে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ দিতে হবে। যদি এটি করা না হয় তাহলে অচিরেই বৃহত্তর আন্দোলন ও সংগ্রামের কর্মসূচি দেওয়া হবে। গণসমাবেশ থেকে আগামী মাসের পহেলা জুন রংপুর বিভাগীয় শহরসহ তিস্তা বেষ্টিত পাঁচ জেলায় তিস্তা মহাপরিকল্পনাসহ ছয় দফা বাস্তবায়নের দাবিতে সকাল দশটায় ৫ মিনিট স্তব্ধ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। এছাড়া দাবি আদায়ের সপক্ষে জনমত সৃষ্টিতে প্রতিটি জেলায় সভা-সমাবেশসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়।
এই এলাকার অন্যান্য সংবাদ দেখতে ক্লিক করুন: রংপুর