মূল পাতা শিক্ষাঙ্গন মুফতি নূর আহমদ রহ.-এর স্বহস্থে লিখিত সংক্ষিপ্ত জীবনী
রহমত নিউজ ডেস্ক 31 March, 2023 03:50 PM
আল জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারীর প্রবীণ উস্তাদ মুফতি নূর আহমদ ইন্তেকাল করেছেন। ইন্নালিল্লাহ ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। আজ (৩১ মার্চ) শুক্রবার ভোর ৪ টার দিকে চট্টগ্রামের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। রহমত নিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করে হাটহাজারী জামিয়ার মুখপত্র মাসিক মুঈনুল ইসলামের নির্বাহী সম্পাদক মাওলান মুনীর আহমদ জানান, আজ জুমাবার বাদ আসর হাটহাজারী জামিয়া মাঠে হুজুরের জানাযা অনুষ্ঠিত হবে। জানাযা শেষে তাঁর লাশ মাকবারায়ে জামিয়ায় দাফন করা হবে।
নাম ও বংশ : অধম বান্দা নূর আহমদ বিন শেখ আব্দুস সামাদ বিন শেখ ইজ্জত আলী৷ গ্রাম, চেছুরিয়া চৌধুরীপাড়া, থানা বাঁশখালী, জেলা, চট্টগ্রাম, বাংলাদেশ ৷
পিতা সম্পর্কে : আমার ওয়ালিদে মুহতারাম শেখ আব্দুস সামাদ অত্যন্ত দ্বীনদার এবং প্রজ্ঞাবান ব্যক্তি ছিলেন ৷ চলাফেরা ছিল একদম সাদাসিদা ৷ গ্রামের যে কোন সালিশে আমার বাবাকে আমিরে ফয়সাল(বিচারপতি) বানানো হতো ৷ তিনি গরিব-অসহায়দের প্রতি খুব দয়ালু ছিলেন ৷ তাদের ঘরের বাজার-সদায় করে দিতেন ৷ (নব্বই)৯০ বছরের-ও অধিক হায়াৎ পেয়েছিলেন ৷ ১৪০৯হিজরীতে ইন্তেকাল করেন ৷ (আল্লাহ্ আমার বাবাকে ক্ষমা করে জান্নাতবাসী করুন, আমিন! )
মাতা সম্পর্কে : আমার মাতা মরহুমা আরেফা খাতুন অত্যন্ত দ্বীনদার নেককার পূন্যবতী মহিলা ছিলেন ৷ তিনি প্রায় ৮০(আশি) বছরের-ও অধিক হায়াত পেয়েছিলেন ৷ ১৪১০হিজরীতে ইন্তেকাল করেন ৷
(আল্লাহ্ আমার আম্মাজানকে ক্ষমা করে জান্নাতবাসী করুন, আমিন! )
জন্ম : মুহতারামা আম্মাজান বলেছেন, আমার ভাই-বোন যারা জম্ম গ্রহন করেছিলেন তারা সবাই খুব স্বল্প হায়াত পেয়েছিল ৷ যা নিয়ে তিনি খুবই ভারাক্রারান্ত ছিলেন , পরিশেষে তিনি আফসোসের সহিত এই মান্নত করলেন যে, হে আল্লাহ্, এবার সন্তান হলে, তাকে আলেম বানাবো ৷ তার আয়-রোজগার খাব না ৷ তারপর সম্ভাব্য ১৩৫৪হিজরীতে আমার জম্ম হয়৷
প্রাথমিক শিক্ষা : আমার শ্রদ্ধেয় আব্বাজান চার বছর বয়সে আমাকে মকতবে ভর্তি করে দেন ৷ মাওলানা আব্দুল মালেক রাহমাতুল্লাহি আলাইহির কাছে ৷ তারপর মাওলানা রাশেদ রাহমাতুল্লাহি আলাইহির কাছে আমপাড়া পড়ি ৷ তারপর বৈলচড়ি মাদরাসায় ভর্তি করে দেওয়া হয়৷ (যাকে বর্তমান স্কুল বানানো হয়েছে)। সেখানে তখন মাওলানা আব্দুল লতিফ রাহমাতুল্লাহি আলাইহি ছিলেন ৷ যিনি শাইখুল ইসলাম আল্লামা হাবিবুল্লাহ কুরাইশী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি (বাণীয়ে হাটহাজারী মাদরাসা) এর সাথী ছিলেন ৷ আমি ভর্তি হওয়ার কিছুদিন পর সেটাকে স্কুল বানানো হয়৷ তারপর ”জলদি মাখজানুল উলূম মাদরাসায়” ভর্তি করানো হয় ৷ সেখানে আমি হযরত মাওলানা মুহা.আলী রাহমাতুল্লাহি আলাইহির কাছে ‘কারিমা’ ইত্যাদি পড়ি ৷ মাও.ক্বারী দারাস্তুল্লাহ্ সাহেব রহ্. এর কাছে ‘ইলমে ক্বেরাত’ ‘আজিজুল মুবতাদি’ ‘মিজান’ ‘নাহবেমীর’ ‘হেদায়াতুন্নাহু’ ‘কাফিয়া’ পড়ি৷ মুরব্বিয়ে আহলে জমান ,উস্তাদুল আসাতিজা, আল্লামা শফিকুল ইসলাম রাহমাতুল্লাহি আলাইহি এবং মাওলানা শফিকুর রহমান রাহমাতুল্লাহি আলাইহি (মৃত্যু: ১৪১৮হি.) প্রকাশ বাঁশখালির বড় হুজুর কাছে ‘পান্দনামা আত্তার’ ‘বোস্তা’ ‘ফুসুলে আকবরী’ পড়েছি৷ মাওলানা সাঈদ আহমদ রাহমাতুল্লাহি আলাইহি থেকে ‘শরহে মিয়াতে আমেল’ পড়েছি৷ মাওলানা মুজাফ্ফর রাহমাতুল্লাহি আলাইহি এবং মাওলানা হাশমত আলী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি থেকে অন্যান্য কিতাবাদী পড়েছি ৷ (আল্লাহ সকল উস্তাদদেরকে জাযায়ে খায়ের দান করুন ও জান্নাতের উঁচু মাকাম দান করুন৷ )
উচ্চতর শিক্ষার জন্য উম্মুল মাদারিস হাটহাজারীতে গমন : একদিন আমার মরহুমা আম্মাজান আমাকে বললেন, আমার তো ইচ্ছা ছিল, আমি তোমাকে মাদরাসায় পড়াব, কিন্তু তোমার আত্মিয়-স্বজনদের ইচ্ছা তোমাকে স্কুলে পড়াবে ৷ তখন প্রতিত্তোর বললাম, আম্মাজান! আপনার যেহেতু আমাকে মাদরাসায় পড়ানের ইচ্ছা,তাই আমি কাউকে না জানিয়ে হাটহাজারী মাদরাসায় চলে যাব ৷ আপনি আমার জন্য অস্থির হবেন না ৷ অত:পর আমি ঐ বছর রমজানের পর ঘর থেকে না জানিয়ে হাটহাজারী মাদরাসা অভিমুখে রওনা হই ৷
ভর্তি পরিক্ষা : ১৩৭১হিজরী’র শাওয়াল মাসের ছয় তারিখ হাটহাজারী মাদরাসায় ভর্তি পরিক্ষা ৷ আমার ভর্তি পরিক্ষা পড়ে মাও. মুহাম্মদ আলী সাহেব রহ্.এর নিকট ৷ তখনকার জামানায় হুজুর রহ. এর কাছে পরিক্ষা কঠিন হওয়া বিষয়ে প্রসিদ্ধ ছিল৷সুতরাং আমার এলাকার কিছু সাথী ভাই আমাকে বলল যে, আজকে ভর্তি পরিক্ষা দিও না, কেননা হুজুর রহ্.এর কাছে পরিক্ষা দিয়ে ভর্তি হওয়া বড্ড দুষ্কর৷ আগামীকাল ঐ ফরম অন্য হুজুরের কাছে চলে যাবে , তখন পরিক্ষা দিও ৷ আশা করি কামিয়াব হবে ৷আমি তাদেরকে বললাম, কি প্রয়োজন ! যদি হুজুরের কাছে ভর্তি পরিক্ষা দিয়ে কামিয়াব না হই, তাতে কোন সমস্যা নেই৷ হুজুর যা পড়তে বলবেন, তাই পড়ব শুধু জামাতের তরাক্কী উদ্দেশ্য না ৷ভাল করে পড়া উদ্দেশ্য ৷ পরিশেষে আমি হুজুরের কামরায় প্রবেশ করলাম৷ আমার সাথে আমার এলাকার সাথী ভাইগুলো গেল, যাতে আমি ভয় না পাই৷ কেননা আমি তখন খুবই ছোট ছিলাম ৷ সম্ভবত আমার বয়স ১২ছিল ৷ রুমে প্রবেশ করার সাথে সাথে হুজুর হাসতে হাসতে বললেন, বাচ্চা! কেন এসেছ ? আমি সালাম দিয়ে বললাম, হুজুর; আমার ভর্তি পরিক্ষা আপনার কাছে ৷হুজুর বললেন, কি পরিক্ষা? আমি বললাম, ‘কাফিয়া’ ‘কুদুরী’ ইত্যাদি ৷ হুজুর বললেন, আচ্ছা ভাই, চকিতে বসে যাও ৷ আমি হুকুম পালনার্থে একদম হুজুরের স:নিকটে গিয়ে বসে পড়লাম ৷ হুজুর ‘কাফিয়া’ খুলে আমার সামনে রেখে বললেন , পড়! আমি দেখলাম, পড়তে বলেছেন, তা ছিল একদম শুরুতেই, ইসমের বর্ণনা৷ ৷ আমি “الإسم مادل” থেকে শুরু করে ” الإسناد اليه” পর্যন্ত পুরো এবারত এক নিশ্বা:সে পড়ে ফেললাম ৷হুজুর বললেন,উর্দূ তরজমা কর ৷ আমি তরজমা করলাম ৷ অত:পর বললেন “في نفسه” এর জমিরের মার’জা কি বল? আমি বললাম মার’জা ‘مادلّ’ -ও হতে পারে এবং ‘معني’ -ও হতে পারে ৷ উভয়টির উদ্দেশ্য এক ৷ অর্থাৎ “استقلال بالمفهومية” ৷ অত:পর বললেন, ” والاسناد اليه” এর মার’জা কি? আমি বললাম, হুজুর ভূলে গিয়েছি ৷ তারপর বললেন, মেরকাত নাও! ‘جنس’ও ‘فصل’ এর সংঙ্গা বল? আমি উভয়টার সংঙ্গা বলেছিলাম ৷ (মনে নেই, সঠিক হয়েছিল কিনা,তবে আমার প্রবল ধারণা সহিহ হয়েছিল৷)অত:পর আমি হুজুরের অনুমতিক্রমে ‘কানয’ জামাতে ভর্তি হয়ে পড়ি৷কানয-দাওরা (মাধ্যমিক শিক্ষা) অত:পর আমি নিয়মতান্ত্রিকভাবে পড়া শুরু করি ৷
১. সাবেক মুহতামিম মাওলানা মুহা.হাফেজ হামেদ রাহমাতুল্লাহি আলাইহির কাছে পড়েছি। শরহে জামী, মুতাওয়াল, জালালাইন শরিফ প্রথম খন্ড, আবু দাউদ শরিফ, বায়যবি শরিফ তৃতীয় খন্ড, বায়যবি শরিফ সূরা বাকারা৷
২. মাওলানা হাফিজুর রহমান রাহমাতুল্লাহি আলাইহির কাছে পড়েছি , উসূলুশ শাশী, দেওয়ানে আলী, মেশকাত শরিফ দ্বিতীয় খন্ড, ইবনে কাছির দ্বিতীয় খন্ড৷
৩.শায়খুল আদীব মাওলানা নজির আহমদ আনওয়ারি রাহমাতুল্লাহি আলাইহির কাছে পড়েছি ৷ মশরহে বেকায়া, কাজী হামদাল্লাহ্, জালালাইন শরিফ দ্বিতীয় খন্ড, মুয়াত্তা মুহাম্মাদ রহ, ৷
৪. মাওলানা নাদেরুজ্জামান রাহমাতুল্লাহি আলাইহির কাছে পড়েছি, হেদায়া প্রথম খন্ড, শরহে তাহযীব ৷
৫. মুফতি আজম সানি মুফতি আহমদুল হক্ব রাহমাতুল্লাহি আলাইহির কাছে পড়েছি, কুতবি, তাওযিহ্, মুসাল্লামুস সুবুত, মুসলিম শরিফ, ইবনে কাছির প্রথম খন্ড , তাফসিরে মাদারিক, ফাতওয়ায়ে শামী ৷
৬. শাইখুল হাদীস মাওলানা আব্দুল আযিয রাহমাতুল্লাহি আলাইহির কাছে পড়েছি, মায়বুযি, শরহে মাওয়াকিফ, শরহে আক্বায়েদ জালালী, খিয়ালী, দেওয়ানে হামাসাহ্, তিরমিযি শরিফ, বায়যবি বাকারাহ্৷
৭. মাওলানা মুহাম্মদ আলী রাহমাতুল্লাহি আলাইহির কাছে পড়েছি , মুখতাসারুল মা’আনী, শরহে আক্বায়েদ নাসাফি, ইবনে মাজাহ্ শরিফ, মেশকাত শরিফ প্রথম খন্ড ৷
৮. মাওলানা আবুল হাসান রাহমাতুল্লাহি আলাইহি (তানজিমুল আশতাতের লেখক) এর কাছে পড়েছি , সুল্লামুল উলূম, মুল্লা হাসান, সদরা, শামসে বাজাগাহ্, কাজি মুবারক, হামদাল্লাহ্, মুসাল্লামুস সুবুত, বয়যবি শরিফ প্রথম খন্ড, বায়যবি বাকারাহ্, নাসায়ী শরিফ, ত্বহাবী শরিফ, হেদায়া আখেরাইন, সাবয়ে মুআল্লাকাত ইত্যাদি ৷
৯. শাইখুল হাদীস মাওলানা আব্দুল কাইয়ুম সাহেব রহ. এর কাছে পড়েছি, বুখারি শরীফ, সদরা, শামসে বাজেগাহ্, তাসরিহ্, শরহে ছুগমীনি, উকলিদস, সাবয়ে শাদ্দাদ ৷
১০. সাবেক মুহতামিম মাওলানাআব্দুল ওয়াহহাব রাহমাতুল্লাহি আলাইহির কাছে দরসান ‘সিরাজি’ পড়েছি ৷
১১. মুফতিয়ে আজম বাংলাদেশ মুজাদ্দিদে মিল্লাত মুসলিহে উম্মাত মুফতি ফয়জুল্লাহ্ রাহমাতুল্লাহি আলাইহির কাছে পড়েছি, বুখারী শরিফ, মুসলিম শরিফ, সুনানে আরবা’আ, শামায়েলে তিরমিযি, মুসনদে আহমদ, মুসনদে দারেমী শরিফ, ফয়জুল কালাম, হেদায়াতুল ইবাদ, সিরাজি, উসূলুশ শাশী, বায়যবি শরিফ বাকারা, দেওয়ানে হাফেজ, মসনবী শরিফ, মুহাব্বত নামা, শরহে উকুদ রসমুল মুফতি, শরহে জামী বহসে ফেল, সাবয়ে মুআল্লাকাত, রসায়েলে ইবনে আবেদীন, ইত্যাদি ৷
কর্মজীবন : দাওরা, তাফসির এর ফারাগতের পরে (সম্ভাব্য ১৩৮০হিজরীতে) তামরিনে ইফতার পাশাপাশি উম্মুল মাদারিসের খেদমতের মধ্য দিয়ে কর্মজীবনের সূচনা হয় ৷ তখন উসূলুশ শাশী, শরহে তাহযিব, কাফিয়া’সহ্ আরো কিছু কিতাব দরসদানের দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছিল ৷ অত:পর আমার শায়খ মুজাদ্দীদে মিল্লাত মুফতিয়ে আযম মুফতি ফয়জুল্লাহ্ রাহমাতুল্লাহি আলাইহির নির্দেশক্রমে ১৩৮৭ হিজরীতে “মাহমুদিয়া মদিনাতুল উলূম বাথুয়া মাদরাসায়” শিক্ষক হিসেবে খেদমতের সুযোগ হয়েছে ৷ এবং সেখানে ১৪০৩হি. পর্যন্ত বিভিন্ন পদে দায়িত্ব আদায়ের পাশাপাশি দরস ও তাদরীসের খেদমতের-ও সুযোগ হয়েছে৷ আলহামদুলিল্লাহ! সেখানে “সুল্লামুল উলূম, মুল্লা হাসান, মায়বুযি, শরহে আক্বায়েদ, হেদায়া আওয়ালাইন, হেদায়া আখেরাইন, মেশকাত শরিফ প্রথম খন্ড, মেশকাত শরিফ দ্বিতীয় খন্ড, জালালাইন শরিফ প্রথম খন্ড, জালালাইন শরিফ দ্বিতীয় খন্ড, মুখতাসারুল মাআনী, শরহে জামীসহ আরো অনেক কিতাব পড়ানোর সুযোগ হয়েছে ৷
পূনরায় হাটহাজারীতে নিয়োগদান : অত:পর, ১৪০৩হি. এর শেষের দিকে অর্থাৎ শাওয়াল মাসের ১২তারিখে দারুল উলূম হাটহাজারীতে দরস-তাদরিসের জন্য বান্দাকে পূনরায় নিয়োগ দেওয়া হয় ৷ এখানে বায়যাবি বাকারা, বায়যাবি শরিফ প্রথম খন্ড, বায়যাবি শরিফ দ্বিতীয় খন্ড, বায়যাবি শরিফ তৃতীয় খন্ড, তাফসিরে মাদারিক, তাফসিরে কাশশাফ , ইবনে কাসীর প্রথম খন্ড, ইবনে মাজাহ্ শরিফ,মুয়াত্তা মুহাম্মাদ, মুয়াত্তা মালেক, মুসলিম শরিফ প্রথম খন্ড, মুসলিম শরিফ দ্বিতীয় খন্ড, শরহে আক্বায়েদ নাসাফী, সুল্লামুল উলূম, মুল্লা হাসান, মীর জাহেদ, মুল্লা জালাল, জালালাইন শরিফ , ফাতাওয়ায়ে শামী, আল-আশবাহ্ ওয়ান নাজায়ের শরহে উকুদ রসমুল মুফতি, মুসামারাহ্, আক্বিদাতু তহাবী’সহ্ আরো অনেক কিতাব পড়ানের সুযোগ হয়েছে, আলহামদুলিল্লাহ !
উল্লেখ্য, ১. দরসদানের পাশাপাশি মুফতি নূর আহমদ রাহমাতুল্লাহি আলাইহি দীর্ঘ চল্লিশ বছর দারুল ইকামার দায়িত্ব পালন করেছেন ৷ ২. ২০১৬ইং সনে মজলিসে শুরার সর্বসম্মতিক্রমে মুফতি নূর আহমদকে নাযেমে তালীমাত (শিক্ষা পরিচালক) পদে নিয়োগ দেওয়া হয় ৷ ৩. মুফতি আযম সানী মুফতি আহমদুল হক রাহমাতুল্লাহি আলাইহির মৃত্যুর পরে প্রদান মুফতি হিসেবে মুফতি নূর আহমদ রাহমাতুল্লাহি আলাইহিকে দায়িত্ব অর্পণ করা হয় ৷ ৪. অসুস্থ হওয়ার আগ পর্যন্ত মুফতি নূর আহমদ রাহমাতুল্লাহি আলাইহি উম্মুল মাদারিস হাটহাজারীর শুরা সদস্যের অন্যতম সদস্য ছিলেন ৷ )
আত্মশুদ্ধি, বায়আত, খেলাফত : সিলসিলায়ে শাইখুল হিন্দ মুজাদ্দীদে মিল্লাত মুফতিয়ে আযম মুফতি ফয়জুল্লাহ্ রাহমাতুল্লাহি আলাইহি থেকে এজাজত আছে৷ সিলসিলায়ে থানভী থেকে শায়খুল হাদীস হযরত আব্দুল আযীয রাহমাতুল্লাহি আলাইহি থেকে এজাজত আছে ৷ সিলসিলায়ে জমিরিয়া রশিদিয়াতে জনাব মাও. সূফি মুহাম্মদ মিয়া চাটগামী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি থেকে এজাজত আছে ৷ উস্তায মুহতারাম মুফতিয়ে আযম সানী মুফতি আহমদুল হক রাহমাতুল্লাহি আলাইহি থেকে বাইয়াত হতে চাইলে হুজুররাহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, আপনার তো মুফতি ফয়জুল্লাহ্ রহ্. সঙ্গে নিসবত আছে ৷ প্রয়োজন নেই ৷ অনেক অনুরোধের করার পরে অজিফা দিলেন ৷ আর লোকদেরকে আমার কাছে বাইয়াত ও ফাতওয়ার জন্য প্রেরণ করতেন ৷ এটা হযরত ওয়ালার নেক ধারণা ছাড়া কিছুই ছিলনা ৷ বাস্তবে আমি এটার উপযুক্ত না ৷ (আস্তাগফিরল্লাহ্!) (২০১৭ইং সনে উস্তাদে মুহতারাম আল্লামা মুফতি নূর আহমদ উত্তরবঙ্গের সফরে গেলে গাড়ি এক্সিডেন্ট হয় ৷ তখন হুজুর স্ট্রোক করেন ৷ তখন থেকে হুজুর মারত্মকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন ৷ সেই থেকে ইন্তিকালের আগ পর্যন্ত হুজুর অসুস্থতার মধ্যেই ছিলেন ৷
হযরত মুফতি নূর আহমদ রহ. লিখিত গ্রন্থাবলী-
(١) ارشاد القاري علي اوائل البخاري (عربي) (زيرطبعات)
(٢)تقريرات نسائي شريف كامل(اردو)( زيرطبعات)
(٣)التقرير الحاوي علي القاضي(عربي) (زيرطبعات)
(٤) التعليق الحاوي علي ديوان المتنبي (اردو) (زيرطبعات)
(٥) تذكرة المصنفين (اردو) (زيرطبعات)
(٦) شرح گلستاں (اردو) (زير طبعات)
(٧) شرح مسلم الثبوت (اردو) (زيرطبعات)
(٨) چهل حديث (عربي-اردو) (زيرطبعات)
(٩) تبصرة علم الادب( عربي) (زيرطبعات)
(١٠) جواهر الفتاوي (اردو)
(١١)جواهر المسائل ( اردو)
(١٢)تحفة المفتي ( اردو)
(١٣)فضائل ومسائل قرباني (اردو-بنگله)
(١٤)فضائل ومسائل حج( اردو-بنگله)
(١٥)فضائل ومسائل رمضان( اردو-بنغله)
(١٦) تذكرة شيخ الحديث
(١٧)الرسالة الوضئية مع الرسالة السنية (عربي)
(١٨) اشرف الفتاوي( مكمل ٥ جلد)(اردو)
(١٩) مواعظ حسنة (اردو)
(٢٠) درس بيضاوي ( اردو)
(٢١) قادينيت اور اسلام (اردو)
(٢٢) شريعت و طريقت (اردو)
(٢٣) مسنون شادي(فارسي)
(٢٤) ازالة الستور عن منكراة القبور( عربي)
(٢٥) فوائد بے نظير شرح نحومير(اردو)
মুফতি নূর আহমদ রাহমাতুল্লাহি আলাইহির স্বহস্থে লিখিত উর্দু সংক্ষিপ্ত জীবনী থেকে মুহা. ইসমাইল খান বিন আরিফ অনূদিত