রহমত নিউজ 03 November, 2022 08:03 PM
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আসম মাহবুব উল আলম লিপন ও কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর মিনু আক্তার এবং তার পরিবার।
আজ (৩ নভেম্বর) বৃহস্পতিবার বিকালে চাঁদপুর প্রেসক্লাবে বিভিন্ন অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি। চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি গিয়াসউদ্দিন মিলনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক রিয়াদ ফেরদৌসের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন মিনু আক্তারের স্বামী নূরে আলম। সাংবাদিকদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি কাজী শাহাদাত, শহীদ পাটওয়ারী, শরীফ চৌধুরী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক রহিম বাদশা, সোহেল রুশদী, মির্জা জাকির, এএইচএম আহসান উল্লাহ, চাঁদপুর টেলিভিশন সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি আল ইমরান শোভন প্রমুখ।
অভিযোগ পত্রে মিনু আক্তার বলেন, আমি ৭, ৮ ও ৯নং ওয়ার্ড সংরক্ষিত কাউন্সিলর। আমি গত ৩১ তারিখে আমার ফেসবুক পেজ থেকে একটি পোস্ট করেছিলাম, অনেকে সেই পোস্ট নিয়ে অনেক মন্তব্য করেছেন। আল্লাহর কসম করে বলছি আমি যা বলছি সব সত্য, আমাদের হাজীগঞ্জবাসী অনেকে জানেন সন্ধ্যার পরে পৌরসভার মেয়র মদ-নেশা নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। এমনকি প্রায় সময় দিনের বেলাতেও পৌরসভা কার্যালয়ে নিজ কক্ষে তিনি নেশাগ্রস্ত অবস্থায় থাকেন।
তিনি বলেন, আমি এই নেশাগ্রস্ত মেয়রের হাত থেকে যৌন হেনস্থা এবং আমার ইজ্জত বাঁচাতে গিয়ে আজকে ষড়যন্ত্রের শিকার । গত ০৩/০৮/২০১২ইং তারিখে আমি পৌরসভায় গেলে মেয়র তার পৌরসভার পার্সোনাল রুমে আমাকে কৌশলে ডেকে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। আমি কৌশলে আমার ইজ্জত রক্ষা করে বের হয়ে এসেছি। এই ঘটনা কেন্দ্র করে সব কাউন্সিলদের নিয়ে বৈঠক পর্যন্ত হয়েছে। তারপরও ২২/০৮/২০২০২২ইং তারিখে ৭নং ওয়ার্ড মনির কাজীকে দিয়ে আমাকে বিভিন্নভাবে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছে মেয়র। বিভিন্ন সময় দেওয়া ওনার কুপ্রস্তাবে আমি রাজি না হওয়ায় উনি আমাকে পৌরসভার কোনো সুযোগ সুবিধা দিচ্ছেন না এবং আমাকে বিভিন্নভাবে হেনস্তা করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত। তিনি আমাকে পৌরসভার মাসিক তিনটির ভিতরে দুইটি মিটিংয়ে উপস্থিত থাকলেও হাজিরায় স্বাক্ষর করতে দেননি। কাউন্সিলররা আমার কাছে ক্ষমা চেয়েছেন, আমি যাতে আর বাড়াবাড়ি না করি। কিন্তু মেয়র ক্ষমা চাননি। আমাকে হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছেন। আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমি কোর্টে অনেকবার গিয়েছি কিন্তু কোনো আইনজীবী মামলা নেননি।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, সর্বশেষ ৩১/১০/২০২২ তারিখে আমি মাসিক মিটিংয়ে উপস্থিত থাকলেও হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর দিতে দেননি। আমি যে মিটিংয়ে উপস্থিত হয়েছি তা পৌরসভার সিসি ক্যামেরা ফুটেজ দেখলেই প্রমাণ মিলবে। এমনকি ওনার আস্থাভাজন বিভিন্ন কাউন্সিলর দিয়ে আমাকেও হুমকি দিয়ে আসছেন। আমি যদি ওনার কথা মতো না চলি তাহলে আমাকে কাউন্সিলর পদ থেকে বরখাস্ত করবেন। উনি যে আমাকে কুপ্রস্তাব দিয়েছেন আমার সহকারী কাউন্সিলর ভাই ও বোন তারা সব কিছু জানতেন। এই নিয়ে আমার সাথে দফায় দফায় বৈঠক হয়েছে। আজ তারা এ সকল বিষয় নিয়ে মুখ খুলছেন না। ক্ষণিকের লোভ লালসায় তারা পৌরসভার মাধ্যমে অসাধু উপায়ে মেয়রের ছত্রছায়া বিভিন্নভাবে টাকা রোজগার বা উপার্জন করছেন এবং উনার ক্ষমতার কারণে আমার সত্য কথাটাকেও তারা মিথ্যা বলে প্রচার করে আমাকে খারাপ বলে অপবাদ দিচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী এবং স্থানীয় সংসদ সদস্য, মাননীয় জেলা প্রশাসন ও পুলিশ সুপার মহোদয়ের কাছে আমি বিনীতভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি, আমাকে এই নেশাখোরের হাত থেকে রক্ষা করুন, আপনাদের কাছে আমি নিরাপত্তা চাই। আপনারা ঠিকভাবে তদন্ত করলে সব কিছু বেরিয়ে আসবে। সবদিক থেকে যখন আমাকে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল তাই আমি নিরুপায় হয়ে গত ৩১/১০/২০২২ইং তারিখে আমার নিজ নামিও ফেসবুক আইডিতে একটি লাইভে সব কিছু পৌরসভা বাসিন্দার সামনে তুলে ধরি। ০১/১১/২০১২ইং রাতে মেয়রের কিছু সংখ্যা লোক এসে আমাকে হুমকি-ধামকি দিয়ে যান। এরপর ০২/১১/২০১২ইং তারিখে মেয়র তার সঙ্গীদের দিয়ে পরিকল্পিতভাবে আমার বিরুদ্ধে মানববন্ধন করে আমার সম্মানহীন করার চেষ্টা করে।