স্বাস্থ্য ডেস্ক 27 October, 2022 07:06 PM
রাষ্ট্রীয়ভাবে কাদিয়ানীদের অমুসলিম ঘোষণার দাবিতে আন্তর্জাতিক মজলিসে তাহাফফুজে খতমে নবুওয়ত বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর ৭নং জোন (সাভার, আশুলিয়া ও ধামরাই) এর উদ্যোগে সীরাত কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়েছে। কনফারেন্সে ৮ দফা দাবি ও ৬ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
আজ (২৭ অক্টোবর) বৃহস্পতিবার সাভার সিটি সেন্টারের পিছনে অবস্থিত বন্ধন রেষ্টুরেন্টে এ কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়।
কনফারেন্সে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, তাহাফফুজে খতমে নবুওয়ত বাংলাদেশের সিনিয়র সহ সভাপতি আল্লামা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী। প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, মহাসচিব মাওলানা মুহিউদ্দিন রব্বানী।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, আন্তর্জাতিক মজলিসে তাহাফফুজে খতমে নবুওয়ত বাংলাদেশের সহ-সভাপতি মানিকগঞ্জের পীর মুফতি সাঈদ নূর, মাওলানা জহুরুল ইসলাম, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, মাওলানা আব্দুল কাইয়ুম সােবহানী, মুফতি কিফায়াতুল্লাহ আজহারী, সহকারী মহাসচিব মুফতি মাসউদুল করীম টঙ্গী, ঢাকা ৭ নং জোনের উপদেষ্টা মাওলানা ইউসুফ সাদিক হক্কানী, মুফতি আব্দুর রাজ্জাক কাসেমী, হেমায়েতপুর ঝাউচর মাদরাসার মুহতামিম মুফতি জাহিদুল ইসলাম কাসেমী।
সীরাত কনফারেন্সের প্রস্তাবলী:
১. কাদিয়ানী সম্প্রদায় (আহমদিয়া জামাত) কে বিশ্বের অধিকাংশ মুসলিম রাষ্ট্রের ন্যায় বাংলাদেশেও রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম সংখ্যালঘু ঘোষণা করতে হবে। হিন্দু, খৃস্টান, বৌদ্ধরা যেমন এদেশে সংখ্যালঘু অমুসলিম পরিচয়ে বসবাস করছে, কাদিয়ানীরাও তেমন অমুসলিম পরিচয়ে থাকতে হবে। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের নিকট অদ্য কনফারেন্স হতে অত্র দাবি জোরালো ভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে।
২. রাজধানী ঢাকার বখশিবাজার, মিরপুর, নাখালপাড়া, নন্দিপাড়াসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কাদিয়ানীরা সেন্টার করে অাহায় সাধারণ মুসলমানদেরকে সহযোগিতা ও বিভিন্ন প্রলোভনে ফেলে ঈমানহারা করছে। সম্প্রতি তারা সারাদেশে সরকারি বেসরকারি অফিস আদালতসহ অসংখ্য মসজিদ মাদরাসায় কাদিয়ানী ধর্মমত গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে চিঠি দেওয়ার মতো দুঃসাহস দেখিয়েছে। অনতিবিলম্বে তাদের এই অপতৎপরতা বন্ধ করতে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
৩. কাদিয়ানী সম্প্রদায় কুরআন ও হাদিসের ভিত্তিতে, সারা দুনিয়ার উলামা মাশায়েখ ও মুফতীগনের সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে অমুসলিম হয়েও মুসলিম পরিচয়ে মুসলমানদের পথভ্রষ্ট করছে বিধায়- তাদের জন্য ইসলামি পরিভাষা যথা- নামাজ, রোজা, হজ্জ, যাকাত, সদকা, মসজিদ, মাদরাসা, আজান, ইমাম, মুয়াজ্জিন ইত্যাদি পরিভাষা নিষিদ্ধ করতে হবে।
৪. কাদিয়ানী সম্প্রদায়ের রচিত বিকৃত কুরআন নামক বই সহ তাদের যাবতীয় বই-পুস্তক, লিটারেচার, লিফলেট, পাক্ষিক মাসিক পত্র-পত্রিকা মুদ্রন, প্রচার, সংরক্ষণ ও বিতরণ সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করার সাথে সাথে বাজেয়াপ্তও করতে হবে।
৫. কাদিয়ানীদের পৃষ্ঠপোষক ও অর্থায়নকারী হিসাবে চিহ্নিত সকল শিল্প প্রতিষ্ঠান যথা প্রাণ-আরএফএল সহ যত প্রতিষ্ঠান রয়েছে তাদের উৎপাদিত যাবতীয় পণ্য ব্যক্তিগত, সামাজিক এবং রাষ্ট্রীয় তথা সকল স্তরেই বয়কট করতে সকলের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানানো হচ্ছে।
৬. কাদিয়ানীরা যেহেতু মুসলমান নয় সেহেতু তাদের কোন মসজিদ থাকতে পারেনা। তাদের উপসনালয়কে মসজিদ নাম দেওয়ার কারণে অনেক মুসলমানের নামাজ নষ্ট হচ্ছে, তাই তাদের সকল মসজিদ নামের উপসনালয়কে সরকারি উদ্যোগে উদ্ধার করে মুসলমানদের নিকট হস্তান্তর করতে হবে।
৭. কাদিয়ানিদের লাশ মুসলমানদের কবরস্থানে দাফন করা যাবে না।
৮. কাদিয়ানী কোম্পানির যেকোনো পণ্যের প্রচারণা থেকে গণমাধ্যম (ইলেক্ট্রিক ও প্রিন্ট মিডিয়া) কে বিরত থাকার জন্য আজকের সম্মেলন থেকে জোরালো আহ্বান জানানো হচ্ছে।
ক. কাদিয়ানীরা তাদের পাসপোর্টে ধর্মীয় পরিচয়ের ক্ষেত্রে মুসলিম পরিচয় ব্যবহার করতে পারবেনা। তাদের ধর্ম পরিচয় হারে; তারা কাদিয়ানী। এ ব্যাপারে সরকারকে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।
কর্মসূচি :
১. আগামী (২০২৩ ইং) বছরে ঢাকা মহানগর ৭নং জোনের তিন থানায় (সাভার, আশুলিয়া, ধামরাই) তে পৃথক পৃথক খতমে নবুওয়ত সম্মেলন করা হবে।
২. আগামী রবিউল আউয়াল মাসে মহানগর ৭নং জোনের তিন থানায় (সাভার, আশুলিয়া, ধামরাই) তে সীরাত সম্মেলন করা হবে।
৩. আকিদায়ে খতমে নবুওয়াত ও রদ্দে কাদিনিয়াতের উপর ঢাকা মহানগর ৭নং জোনের তিন থানায় (সাভার, আশুলিয়া, ধামরাই) তে প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করা হবে।
৪. যেসব এলাকায় কাদিয়ানী সম্প্রদায়ের অপতৎপরতা দেখা যাবে সেসব এলাকায় দাওয়াতি কাফেলা প্রেরণ করা হবে।
৫. আগামী ছয় মাসের মধ্যে ঢাকা মহানগর ৭নং জোনের অন্তর্গত সাভার, আশুলিয়া ও ধামরাই এ থানা কমিটি ঘোষণা করা হবে।
৬. ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, স্কুল, কলেজ, ভার্সিটির শিক্ষকবৃন্দ সহ বিভিন্ন পেশাজীবি মানুষ ও ব্যবসায়ী তথা আম জনসাধারণের মাঝে খতমে নবুওয়ত বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে সেমিনারের আয়োজন করা হবে।
বিশেষ আবেদন!
আজকের এই সম্মেলন থেকে দেশের প্রতিটি মসজিদে ও ওয়াজ মাহফিলে খতমে নবুওয়াত বিষয়ে আলোচনা করার জন্য সকল ইমাম-খতিব ও ওলামা মাশায়েখদের প্রতি বিশেষ আবেদন জানানো হচ্ছে। আমাদের অনেক মুরুব্বি রব্বে কারিমের ডাকে সাড়া দিয়ে দুনিয়া ত্যাগ করেছেন। আজকের সম্মেলন থেকে খতীব ওবায়দুল হক রাহমাতুল্লাহি আলাইহি, মাওলানা শামসুদ্দিন কাসেমী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি, শায়খুল হাদীস আল্লামা আজিজুল হক রাহমাতুল্লাহি আলাইহি, মুফতী ফজলুল হক আমিনী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি, মাওলানা ফজলুল করীম রাহমাতুল্লাহি আলাইহি, মাওলানা ফজলুর রহমান রাহমাতুল্লাহি আলাইহি, আল্লামা শাহ আহমাদ শফী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি, মাওলানা মুহিউদ্দীন খান রাহমাতুল্লাহি আলাইহি, মুফতী আব্দুর রহমান রাহমাতুল্লাহি আলাইহি, আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি, আল্লামা জুনাইদ বাবুনগরী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি, হাফেজ মাওলানা নুরুল ইসলাম জিহাদী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি, মাওলানা আযহার আলী আনোয়ার শাহ রাহমাতুল্লাহি আলাইহি, মুফতী মুহাম্মদ ওয়াক্কাস রাহমাতুল্লাহি আলাইহি, মাওলনা আশরাফ আলী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি, মুফতী আব্দুস সালাম চাটগামী রাহমাতুল্লাহি আলাইহিসহ আমাদের থেকে বিগত হয়ে যাওয়া সকল মুরুব্বিদের মাগফিরাত ও রফয়ে দারাজাতের জন্য খাস এবং আম দু'আ করার জন্য বিশেষভাবে আহ্বান জানানো হচ্ছে।