| |
               

মূল পাতা জাতীয় একটি জাতির জন্য যুবসমাজ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় : প্রধানমন্ত্রী


একটি জাতির জন্য যুবসমাজ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় : প্রধানমন্ত্রী


রহমত ডেস্ক     11 September, 2022     03:27 PM    


তরুণ প্রজন্মকে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশে রূপান্তরের জন্য জাতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্টেকহোল্ডার হিসেবে বর্ণনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, একটি জাতির জন্য যুবসমাজ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমি চাই যুবকরা প্রতিটি ক্ষেত্রে বিশেষ করে শিক্ষার ক্ষেত্রে উচ্চ মানের হোক। আমাদের যুবসমাজ আমাদের জন্য একটি বড় শক্তি এবং তারাই বাংলাদেশকে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করতে পারে। সরকার চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের উপযোগী করে তরুণ প্রজন্মকে উপযুক্ত শিক্ষা দিতে বিশেষ করে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ওপর জোর দিয়েছে। তরুণরাই বাংলাদেশের প্রধান সম্পদ এবং তারাই দেশ গড়বে বলে বঙ্গবন্ধুর একটি মন্তব্যের উল্লেখ করেন তিনি।

আজ (১১ সেপ্টেম্বর) রবিবার সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় আয়োজিত দ্বিতীয়বারের মতো ‘শেখ হাসিনা ইয়ুথ ভলান্টিয়ার এওয়ার্ড-২০২২’ প্রদান অনুষ্ঠানে সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল বিজয়ীদের হাতে ‘শেখ হাসিনা ইয়ুথ ভলান্টিয়ার এওয়ার্ড-২০২২’ তুলে দেন। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব এ সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। মন্ত্রণালয়ের সচিব মেজবাহ উদ্দিন স্বাগত বক্তৃতা করেন। পুরস্কার হিসেবে বিজয়ীদের ক্রেষ্ট, সনদপত্র এবং এক লাখ টাকার চেক প্রদান করা হয়। পুরস্কার বিজয়ীদের পক্ষে মো.মাসুদ আলম ও মেঘনা খাতুন অনুষ্ঠানে নিজস্ব অনুভূতি ব্যক্ত করে বক্তৃতা করেন। শেখ হাসিনার বিভিন্ন মানবিক কর্মকান্ডের ওপর অনুষ্ঠানে একটি ভিডিও ডকুমেন্টারী ও প্রদর্শিত হয়।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন একটি উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হচ্ছে এবং সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নত দেশে রূপান্তরের কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। আমাদের পরবর্তী লক্ষ্য হল ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত দেশে পরিণত হওয়া এবং তরুণরাই সেই লক্ষ্য পূরণ করতে পারবে, কারণ তারাই ২০৪১ সালের মূল স্থপতি। এই দেশটা এগিয়ে যাবে, শত বাধা অতিক্রম করে। পৃথিবীর অনেক দেশ এখন বয়োবৃদ্ধদের দেশে পরিণত হয়েছে। আমরা সেটা হতে চাই না। কাজেই আমাদের এই যুব সমাজই পারবে সারা বাংলাদেশটাকে উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তুলে জাতির পিতার স্বপ্ন পূরণ করতে। যুব সমাজ সেবক হয়ে মানুষের পাশে দাঁড়াবে-এমন আশা পোষণ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের যুব সমাজ মানুষের সেবক হয়ে মানুষের পাশে দাঁড়াবে, নিজেদের আর্থ-সামাজিক উন্নতি করবে, পরিবারকে সহায়তা করবে। যুবসমাজকে সুশিক্ষিত করতে ক্ষমতায় এসেই কাজ শুরু করে আওয়ামী লীগ। করোনার মাঝে যুবসমাজই সবার আগে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে, যা পুরো জাতির জন্য উৎসাহের কারণ।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কতৃর্ক যুবসমাজের উন্নয়নে গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপেরও উল্লেখ করে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশের প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় যুব সমাজের সার্বিক উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর পদাঙ্ক অনুসরণ করে তাঁর সরকার তরুণদের উন্নয়নে যথাযথ শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাসহ সম্ভাব্য সব ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। বিপুল সংখ্যক যুবকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে তার সরকার বেসরকারি খাতে ব্যাংক, বীমা, টেলিভিশন এবং রেডিওসহ সবকিছু দিয়েছে। সরকার প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেছে যেন যুবকরা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে চাকরির জন্য বিদেশে যেতে পারে এবং এইভাবে তারা তাদের পৈতৃক সম্পত্তি ও জিনিসপত্র সংরক্ষণ করতে পারে। যুবকদের কর্মসংস্থান ব্যাংক থেকে কোনো গ্যারান্টি ছাড়াই ঋণ দেওয়া হচ্ছে কারণ তারা যেন উদ্যোক্তা হতে পারে এবং অন্যদের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারে।

চাকরীর পেছনে না ছুটে যুব সমাজকে উদ্যোক্তা হওয়ার মাধ্যমে অপরকে চাকরী দেওয়ার এবং নিজের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টির আহবান পুণর্ব্যক্ত করে তিনি বলেন, সরকার ইউনিয়ন পর্যায়ে ডাটা সেন্টার এবং কমিউনিটি ক্লিনিক করেছে, যেখানে বিপুল সংখ্যক যুব সমাজের কর্মসংস্থানে সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে তাছাড়া তাঁর সরকারের গৃহহীনকে বিনামূল্যে ঘর-বাড়ি প্রদান, আমার বাড়ি আমার খামার প্রকল্প সহ সামাজিক নিরাপত্তাবলয়ের বিভিন্ন কর্মসূচি কর্মসংস্থানের সুযোগকে অবারিত করেছে। স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্ব দানের পাশাপাশি যুবকরাই এদেশকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন, বঙ্গবন্ধুরকে হত্যার পর যুবসমাজের উন্নয়নের ধারাবাহিতকায় ছেদ পড়ে । ’৭৫ এর পর সামরিক সরকার ক্ষমতা দখল করে। জাতির পিতাকে হত্যার পর জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসেছিলেন। সেই জিয়াউর রহমান যুবসমাজের হাতে অস্ত্র, মাদক তুলে দিয়ে তাদেরকে বিপথে পরিচালিত করেছিলেন। তিনি যুবসমাজের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়ে নিজের ক্ষমতাকে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করেছিলেন। অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী গ্রন্থ থেকে যুবকদের জন্য কিছু অংশ পাঠ করেন শেখ হাসিনা।

কর্মসংস্থান সৃষ্টি, অন্যদের প্রশিক্ষণ প্রদান এবং তৃণমূলে শিক্ষা পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক ও জাতি গঠনমূলক কর্মকাণ্ডে অবদানের জন্য ‘শেখ হাসিনা ইয়ুথ ভলান্টিয়ার এওয়ার্ড-২০২২’ প্রাপ্ত যুবকদের শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে যুব সমাজ জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে এবং জনগণের কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ দিয়েছে। আমি আশা করি আগামী প্রজন্ম তাদের কর্মকান্ডের মাধ্যমে অনুপ্রাণিত হবে এবং জাতী গঠনমূলক কর্মকা-ে নিজেদের নিয়োজিত করবে। কোভিড -১৯ মহামারীর শীর্ষ সময়ে যখন ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার ভয়ে অনেকে নিকটাত্মীয়দের মৃতদেহ ছেড়ে চলে গিয়েছিল তখন বিপুল সংখ্যক যুবক জনসাধারণকে সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছিল।