| |
               

মূল পাতা প্রবাস নিউইর্য়কের বিএমএমসিসি ইসলামিক স্কুলের গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন


নিউইর্য়কের বিএমএমসিসি ইসলামিক স্কুলের গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন

নতুন প্রজন্মকে কুরআন-সুন্নাহর মৌলিক জ্ঞান অর্জনে আরো বেশী মনোনিবেশ করতে হবে


প্রবাস ডেস্ক     28 August, 2022     11:23 AM    


নিউইর্য়কের ব্রুকলীনের বায়তুল মা'মুর মসজিদ এন্ড কমিউনিটি সেন্টারের আওতাধীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ‘বিএমএমসিসি ইসলামিক স্কুল এর সামার প্রোগ্রাম’র সমাপনী অনুষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণী বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট)  বিকাল চারটায় সেন্টারের হল রুমে গ্র্যাজুয়েশন অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে ক্লাস ভিত্তিক বিভিন্ন বিষয়ের উপর প্রতিযোগীতাও অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠান সফলতার সাথে সামার প্রোগ্রাম শেষ করায় ক্লাস ভিত্তিক ১ম থেকে ১০ম গ্রেড পর্যন্ত এবং হিফজ শাখার দু'টি গ্রুপ,উইকেন্ড শাখার ৬টি ক্লাসের মধ্যে প্রথম,দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকারী ৪৮জন ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে সনদও পুরস্কার বিতরণ করা হয়।পাশাপাশি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ সকল ছাত্র-ছাত্রীদেরকে রিপোর্ট কার্ড প্রদান করা হয়। আলোচনা শেষে প্রধান অতিথিসহ অন্যান্য  অতিথিরা শিক্ষার্থীদের হাতে পুরস্কার ও সনদপত্র তুলে দেন। এবারে ২৮৫ জন ছাত্র-ছাত্রী উক্ত সামার সেশনে অংশ গ্রহণ করেন।সুচারু রূপে পাঠ দান করেছেন অভিজ্ঞ ১৮ জন শিক্ষক-শিক্ষিকাবৃন্দ।

 

বিএমএমসিসি ইসলামিক স্কুলের প্রিন্সিপাল মাওলানা রশীদ আহমদের সভাপতিত্বে ও স্কুলের শিক্ষক হাফেজ তাওহিদুর রহমান তালহ  ও হাফেজ মোছাব্বীহ হোসাইনের যৌথ উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির আলোচনা রাখেন বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ ও বায়তুল মামুর মসজিদএন্ড কমিউনিটি সেন্টারের ইমাম ও খতীব মাওলানা দেলোয়ার হোসাইন। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, বিএমএমসিসির সাবেক প্রেসিডেন্ট আব্দুল ফাইয়াজ ফয়সল ও বর্তমান সেক্রেটারী মোশাররাফুল মাওলা সুজন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিএমএমসিসি ইসলামিক স্কুলের প্রিন্সিপাল মাওলানা রশীদ আহমদ। একই সময়ে ক্রমান্বয়ে পৃথকভাবে গার্লস বিভাগের গ্র্যাজুয়েশন প্রোগ্রামটিও প্রতিষ্ঠানের ২য় তলায় অনুষ্ঠিত হয়।গার্লস সেকশনের প্রোগ্রামটি পরিচালনা করেন ফিরোজা আক্তার পলি ও সুফিয়া খানম ইমু।  ইসলামিক স্কুলের কুরআনিক ক্লাসের ছাত্র ইয়াহইয়া মিক্বদাদের কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়।  শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মধ্যে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন হাফেজ মিজান উল্লাহ,হাফেজ আলী আকবর, হাফেজ কাজী  ফজলে রাব্বী, হাফেজ মাওলানা আবু তাহের, হাফেজ জসীম উদ্দিন, হাফেজ ফাহমিদ আবদুল্লাহ রাইয়ান,সিস্টার আলেয়া বেগম সুমী,হাফেজা ফাতেমা বেররী, কানিজ ফাতিমা,মাসুমা ইয়াসমীন ও হাবীবা আহমদ, বিএমএমসিসির সানী ইমাম মাওলানা আব্দুল মান্নান, কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট আবদুস সাত্তার ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব মুহাম্মদ নাসির রহমানসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও বেশ সংখ্যক অভিভাবক উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান অতিথি  ইমাম মাওলানা দেলোয়ার হোসাইন শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন,যদি তোমরা সর্বত্র সালামের প্রচলন করতে পারো, পাঁচ ওয়াক্ত সময়মতো নামাজ আদায় করতে পারো, হাসিমুখে কথা বলতে পারো,ধৈর্য্য ও খুলুসিয়াতের সাথে প্রতিটি কাজ সম্পাদন করতে পারো,তাহলে তোমাদের জীবনে সফলতা আসবেই। পাশাপাশি আখেরাতেও কামিয়াবী হাসিল করা সম্ভব। তিনি অভিবাকদের উদ্দেশ্যে বলেন, প্রবাসে ইসলামকে বুঝা বা শেখার জন্য আমাদের সন্তানদের জন্য ইসলামিক স্কুলের বিকল্প নেই। একই সঙ্গে পারিবারিকভাবেও কুরআন ও হাদিসের বিষয়গুলো গুরুত্ব দিতে হবে। সামার স্কুল থেকে শিক্ষা নেয়ার পর ইসলামের মৌলিক বিষয়ের চর্চা অব্যাহত রাখতে হবে। শিক্ষার্থীদের খাওয়ারের ব্যপারে হালাল হারাম শিখানো হয়েছে তা তাদের বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করতে হবে। মা-বাবাদেরও হারাম হালালের জ্ঞান থাকতে হবে, সে অনুযায়ী বাচ্চাদের খাবার পরিবেশন হবে।তিনি আরো বলেন,নতুন প্রজন্মকে আরো বেশী বেশী কুরআন-সুন্নাহর মৌলিক জ্ঞান অর্জনে মনোনিবেশ করতে হবে।কেননা ঐ কুরআনিক জ্ঞানই পারে মানুষকে সঠিক ও সত্য পথের পথ দেখাতে।

অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে বিএমএমসিসির সাবেক প্রেসিডেন্ট আব্দুল ফাইয়াজ ফয়সল বলেন, আপনাদের সকলের আরো সহযোগিতা অব্যাহত থাকলে বিএমএমসিসি একদিন নিউইয়র্কের নামকরা বিদ্যাপীঠে পরিণত হবে ইনশা আল্লাহ।তিনি বিএমএমসিসি ইসলামিক স্কুল এই সামারের এই অল্প সময়ে শিক্ষার্থীদের সবকিছু শিক্ষা দেয়া সম্ভব নয়। তাই আগামী দিনে শিক্ষার্থীদের স্কুলে পাঠানোর ধারাবাহিকতা বজায় রাখার উপর গুরুত্তারোপ করেন।

 সামার স্কুল নিয়ে তিনি আরো বেশী প্রচারে গুরুত্বারোপ করে বিএমএমসিসির সেক্রেটারী জেনারেল মোশাররাফুল মাওলা সুজন বলেন, যাতে করে সামার সেশনে মুসলিম কমিউনিটির সকল শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসতে সক্ষম হয়। আমাদের সন্তানদের শিশু বয়স থেকে ইসলাম শিক্ষা দেওয়া  জরুরী। বাসার পাশে ইসলামিক স্কুল হওয়ায় আমাদের জন্য তা অনেক সহজ হয়েছে।

প্রিন্সিপাল মাওলানা  রশীদ আহমদ  বলেন, প্রতি বছরই ভুর্তুকী দিয়ে  ইসলামিক  স্কুল পরিচালনা করতে হয়। আমাদের একটাই উদ্দেশ্য, যেন আগামী প্রজন্ম আমেরিকায় বসেও ইসলামের আলোকে জীবন গঠন করতে পারে।তিনি অভিভাবকদের উদ্দেশ্য বলেন, নির্দিষ্ট সময়ে স্কুলে নিয়ে আসা এবং ক্লাস শেষে সঠিক সময়ে বাসায় নিয়ে যাওয়া প্রয়োজন এবং বাচ্চাদের হোমওয়ার্কে ঠিকমতো দেখভাল করা, তাতে স্কুলের শৃংখলা রক্ষা হয় সাথে সাথে শিক্ষার্থীদের মানোন্নয়ন বৃদ্ধি পায়। আগামী ৩রা সেপ্টেম্বর ২০২২ শনিবার থেকে স্কুলের অপর প্রোগ্রাম উইকেন্ড স্কুল শুরু হচ্ছে। ইসলামের মৌলিক শিক্ষা গ্রহণের জন্য পাবলিক স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের উইকেন্ড ক্লাসে ভর্তি করার আহবান জানান তিনি।