মুফতি কামরুল ইসলাম 17 April, 2022 02:57 PM
আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহর দরবারে অসংখ্য শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি যিনি আমাদেরকে ঈমানের মত মহান দৌলত দান করেছেন। তিনি আমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন তাঁর গোলামী ও দাসত্ত্বের জন্য। কতইনা সৌভাগ্যবান ঐসকল ব্যক্তি, যারা তাদের পুরো জীবনকে আল্লাহর গোলামী করতে করতে কাটিয়ে দিয়েছে। তাদের জন্যইতো পরকালের সুখ-শান্তি অবধারিত। আর হতভাগা ঐসকল ব্যক্তি যারা শয়তান ও কুপ্রবত্তির অনুকরণে নিজের মূল্যবান যৌবন, জীবন, সময় সব বিলিয়ে দিয়েছে। মৃত্যুকালীন তাদের ঈমান নসীব হয় না। পরকালে তাদের কঠিন শাস্তি ভোগ করতে হয়। তবে হ্যাঁ , ওলামায়ে কেরামগণ বলেন- ৭টি আমল এমন রয়েছে যেগুলোর ওপর আমল করে জীবন যাপন করতে পারলে মৃত্যুকালীন ঈমান নসীব হবে ইনশাআল্লাহ।
আমলগুলো হলো এই;
১. নিন্মের দোয়াটি অত্যাধিক পড়া, رَبَّنَا لَا تُزِغْ قُلُوْبَنَا بَعْدَ إذْ هَدَيْتَنَا وَ هَبْ لَنَا مِنْ لَدُنْكَ رَحْمَةٌ إنَّكَ أنْتَ الْوَهَّابُ
২. নিন্মোক্ত দোয়াটি প্রত্যেক ফজর নামাযের সুন্নত ও ফরজ নামাযের মধ্যবর্তী সময়ে ৪০বার পাঠ করা, يَا حَيُّ يَا قَيُّوْمُ لَا إلهَ إلَّا أنْتَ بِرَحْمَتِكَ اَسْتَغِيْثُ
৩. আল্লাহ তায়া’লা যে আমাদেরকে মুসলমান বানিয়েছেন, ঈমানের মত মহান নে’মত দান করেছেন, এ জন্য অধিক হারে আল্লাহর শুকরিয়া জ্ঞাপন করা। কিতাবে এসেছে, কেউ যদি প্রত্যেক খাবারের পর হাদীসে বর্ণিত খানার শেষের দোয়াটি পাঠ করবে তবে তার এ শুকরিয়া আদায় হয়ে যাবে। দোয়াটি হলো এই, اَلْحَمْدُ لِلّهِ الَّذِيْ اَطْعَمَنَا وَ سَقَانَا وَ جَعَلَنَا مُسْلِميْنَ
৪. আযানের পর আযানের দোয়া পড়া। হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে, নবীজী সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেন, যে ব্যক্তি আযানের পর নিন্মোক্ত দোয়াটি পাঠ করবে কাল কেয়ামত দিবসে তার জন্য আমি নবীর সুপারিশ ওয়াজিব হয়ে যাবে। [সহীহ বুখারী- ১/১২৬, হাদিস-৬১৪,৬/৮৬ হাদিস-৪৭১৯, সুনানুল কুবরা-১/৪১০] আযানের দোয়া’টি হলো এই, الْلّهُمَّ رَبَّ هذِهِ الدَّعْوَةِ التَّامَّةِ ـ وَالصَّلَاةِ الْقَائِمَةِ ـ آتِ مُحَمَّدَ نِ الْوَسِيْلَةَ وَالْفَضِيْلَةَ ـ وَابْعَثْهُ مَقَامًا مَّحْمُوْدَ نِ الًّذِيْ وَعَدْتَه ـ إنَّكَ لَا تُخْلِفُ الْمِيْعَادَ .
৫. বেশী বেশী মিসওয়াক করা। হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে , মিসওয়াক করার দ্বারা মুখের পবিত্রতা ও আল্লাহর সস্তুষ্টি অর্জন হয়। [নাসাঈ শরীফ-১/১০ হাদিস-৫, সহীহ]
৬. চোখের হেফাজত করা। অর্থাৎ চোখকে আল্লাহর নাফরমানিতে ব্যবহার না করা। হাদীস শরীফে বর্ণিত হয়েছে, নবী কারীম সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেন- আল্লাহ তা‘য়ালা বলেন- কুদৃষ্টি শয়তানের এক বিষাক্ত তীর। যে ব্যক্তি আমার ভয়ে কুদৃষ্টি ত্যাগ করবে আমি তাকে এমন ঈমানের শক্তি দান করব যার দরুন সে অন্তরে ঈমানের স্বাদ অনুভব করতে পারবে। [মুসতাদরাকে হাকেম-৪/৩১৩, তাবরানী কাবীর, হাদিস-১০৩৬৩, হাসান লি গাইরিহি]
৭. আল্লাহ ওয়ালাদের সান্নিধ্য অবলম্বন করা এবং তাঁদের দিক নির্দেশনা মোতাবেক নিজের জীবন পরিচালনা করা।
আল্লাহ তায়া’লা আমাদের সকলকে উক্ত আমলগুলো করার তৌফিক দান করুন। আমীন।
লেখক : শিক্ষক, জামিয়া নূরিয়া ইসলামিয়া, আশরাফাবাদ, কামরাঙ্গীরচর, ঢাকা
আরো পড়ুন : সারোগেসির মাধ্যমে সন্তান জন্মদান; ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি কী?