রহমত ডেস্ক 26 December, 2021 08:31 PM
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক (অপারেশন) লেফটেন্যান্ট কর্নেল জিল্লুর রহমান বলেন, আমরা এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে আছি। পুরো তদন্ত শেষ করতে আমাদের প্রায় দুই সপ্তাহ সময় লাগবে। তারপর আমরা একটা ধারণা দিতে পারব কোন কারণে আগুন লেগেছে। আগুন লাগার পরে লঞ্চ কর্তৃপক্ষ দ্রুত লঞ্চটি নোঙর করে তীরে থামিয়ে রাখলে এত লোকের মৃত্যু হতো না, যেহেতু নদী খুব ছোট। কিন্তু লঞ্চের চালক সেটা করেননি। তারা লঞ্চটিকে নদীর মাঝে রেখে চলে যান, তাহলে এটা তো নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়বেই। ফলে মানুষ নদীতে ঝাঁপ দিয়েছে, আগুনে দগ্ধও হয়েছে। যে কারণে হতাহতের সংখ্যা বেশি হয়েছে। আগুন কিন্তু সব আলামত নষ্ট করে ফেলে। আমরা লঞ্চটি পরিদর্শন করেছি, দেখেছি পুরো লঞ্চটিই পুড়ে গেছে। তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানানো হবে। কাগজে লঞ্চে কেবিন ৮১টি থাকার কথা থাকলেও রয়েছে ৮৭টি।
আজ (২৬ ডিসেম্বর) রবিবার দুপুরে এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে আগুনের ঘটনায় ফায়ার সার্ভিস ও বিআইডব্লিইটিএ কর্তৃপক্ষ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। পরিদর্শন শেষে এ ঘটনার জন্য লঞ্চের চালক ও স্টাফদের দায়ী করেছেন কর্মকর্তারা। একই সঙ্গে তাদের দায়িত্বেও অবহেলা ছিল বলে জানিয়েছেন তারা। বরিশাল বিআইডব্লিউটিএর নির্বাহী প্রকৌশলী (নৌযান) মো. বাহারুল আমীন বলেন, এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে যথেষ্ট পরিমাণ অগ্নিনির্বাপণের ব্যবস্থা ছিল না। লঞ্চটির ইঞ্জিন রুমের অবস্থা খুবই জরাজীর্ণ। ইঞ্জিন রুমে আগুনের ফুলকি আসা মাত্রই প্রথমে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র ব্যবহার করা উচিত ছিল। যত বিলাসবহুল লঞ্চ আছে, তাদের ওপরে চাকচিক্য থাকে, কিন্তু ইঞ্জিন রুম থাকে অরক্ষিত।
নিখোঁজ ব্যক্তিদের তথ্য সংগ্রহে পুলিশের পক্ষ থেকে ঝালকাঠি লঞ্চঘাট এলাকায় একটি কন্ট্রোলরুম খোলা হয়। সেখানে স্বজনরা এসে তথ্য দিয়ে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খলিলুর রহমান। পুলিশের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত নিখোঁজ ৪১ জনের তালিকা করা হয়েছে। পাশাপাশি রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির পক্ষ থেকে স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে ৫১ জনের তালিকা করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত ৩টার দিকে ঢাকা থেকে বরগুনাগামী এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে আগুন লাগে। লঞ্চটি ভাসতে ভাসতে পোনাবালিয়া ইউনিয়নের দেউরী এলাকার সুগন্ধা নদীর তীরে আটকে যায়। এতে ৩৮ জনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঝালকাঠির জেলা প্রশাসক জোহর আলী।