মানবাধিকারের বর্তমান সনদটিতে পরিবর্তন আনা প্রয়োজন

আর্টিকেল নাইনটিন বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক ফারুখ ফয়সল বলেছেন, বাংলাদেশে তৃতীয় লিঙ্গ ও যৌন বৈচিত্র্যের অন্য মানুষদের সম্পর্কে অনেক ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে। এ পরিস্থিতি থেকে বের হয়ে সবার কথা বলার জন্য খোলামেলা পরিবেশ তৈরি করা জরুরি। মানবাধিকারের বর্তমান সনদটিতে পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। নারী-পুরুষের বাইরে যৌন বৈচিত্র্যের সকল মানুষের অধিকারের কথা এখানে বলা দরকার। সবার কথা বলার জন্য এখন খোলামেলা পরিবেশ তৈরি করা জরুরী।

আজ (১১ ডিসেম্বর) শনিবার মানবাধিকার দিবস-২০২১ উদযাপন উপলক্ষে আর্টিকেল নাইনটিন ‘মানবাধিকার : জেন্ডার সমতায় অগ্রগতি’ শীর্ষক অনলাইন ওয়েবিনারে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ফারুখ ফয়সলের সভাপতিত্বে ওয়েবিনারটির আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম ট্রান্সজেন্ডার সংবাদ পাঠিকা তাসনুভা আনান শিশির এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক ড. স্নিগ্ধা রেজওয়ানা।

ওয়েবিনারে জেন্ডার এক্টিভিস্ট, জেন্ডার বৈচিত্র নিয়ে কাজ করা বিশেষজ্ঞ, ঢাকা ও ঢাকার বাইরের সাংবাদিক, আইনজীবী নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি ও অধিকারকর্মীরা এতে অংশ নেন। এছাড়া অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীরা জেন্ডার ও যৌন বৈচিত্র্য, পারিবারিক সহিংসতা, সম্পত্তিতে নারীর অধিকার, আইনি বৈষম্য ইত্যাদি ইস্যুতে আলোচনা ও নিজেদের অভিজ্ঞতা বিনিময় করেন। এ বছর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসের প্রতিপাদ্য করা হয়েছে– ‘বৈষম্য ঘোচাও, সাম্য বাড়াও, মানবাধিকারের সুরক্ষা দাও।’ 

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক স্নিগ্ধা রেজওয়ানা বলেন, জেন্ডার বৈচিত্র্য বিবেচনায় মানবাধিকার সনদে ‘ইক্যুইটি’ তথা সমতার ধারণাটি অনুপস্থিত, যা নারী-পুরুষের বাইরে অন্য লিঙ্গের মানুষের জন্য বৈষম্যমূলক। এ বৈষম্য রুখতে সাত দশক আগে গ্রহণ করা মানবাধিকারের বৈশ্বিক সনদে জেন্ডার বৈচিত্র্য অন্তর্ভূক্ত প্রয়োজন।

২০২১ সালের ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষ্যে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো টেলিভিশনে সংবাদ পাঠের সুযোগ পাওয়া ট্রান্সজেন্ডার তাসনুভা আনান শিশির। তিনি বলেন, ট্রান্সজেন্ডারদের অধিকার তথাকথিত পশ্চিমা সংস্কৃতির কোন বিষয় নয়। ট্রান্সজেন্ডাররাও বাংলাদেশের নাগরিক। আমাদের অধিকার ও মেধার স্বীকৃতি এবং সহযোগিতামূলক পরিবেশ দরকার, করুণা নয়।