রহমতটোয়েন্টিফোর ডেস্ক 11 November, 2021 11:02 PM
দেশের বিচার ব্যবস্থাকে সরকার পুরোপুরিভাবে দলীয়করণ করে ফেলেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ধ্বংস করা হয়েছে, প্রশাসনকে ধ্বংস করা হয়েছে। সবচেয়ে ভয়াবহ ব্যাপার হচ্ছে, বিচার ব্যবস্থাকে পুরোপুরিভাবে দলীয়করণ করে ফেলা হয়েছে। এখানে এখন ন্যায়বিচার পাওয়াটা প্রায় অসম্ভব।
বৃহস্পতিবার (১১ নভেম্বর) বিকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল ইসলাম এ আহ্বান জানান। বিএনপির স্বাধীনতা সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপন জাতীয় কমিটি এ সভার আয়োজন করে।
আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘ভয় দেখিয়ে, ত্রাস সৃষ্টি করে, সমাজে একটা ভীতির পরিবেশ সৃষ্টি করে মানুষকে কথা বলা, প্রতিবাদ করার স্বভাবজাত বোধকে ধ্বংস করে দেওয়া হচ্ছে। এর বিরুদ্ধে সবার ঐক্যবদ্ধ হওয়া ছাড়া বিকল্প নেই।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের সমস্ত ভালো জিনিস, সুন্দর জিনিস এই সরকার ধ্বংস করে ফেলেছে। আজকে কোথাও নিরাপত্তা নেই। আইনকে আক্ষরিক অর্থে মানুষের বিরুদ্ধে করা হচ্ছে। ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট করে মানুষের কথা বলার স্বাধীনতা সম্পূর্ণভাবে দমন করা হয়েছে। ফটোগ্রাফার কাজলের বিরুদ্ধে আবার সিকিউরিটি অ্যাক্টে মামলা দিয়েছে। চার হাজার মানুষের বিরুদ্ধে এই অ্যাক্টে মামলা দেওয়া হয়েছে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই ভয়াবহ ফ্যাসিস্ট সরকার আমাদের ঘাড়ে চেপে বসে আমাদের সমস্ত অর্জন ধ্বংস করে দিচ্ছে। দেশের সমস্ত মানুষকে নিয়ে, সব রাজনৈতিক সংগঠনগুলোকে নিয়ে, সব রাজনৈতিক ব্যক্তিকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই সরকারকে পরাজিত করতে হবে এবং সত্যিকার অর্থেই আইনের শাসন, একটা মুক্ত অর্থনীতি, মুক্ত সমাজব্যবস্থা ও জনগণ যে ধরনের রাষ্ট্র ব্যবস্থা চায়, সেই রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’
মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘আজকে সংকটটা অত্যন্ত গভীর। এই সংকট আমাদের অস্তিত্বের—যেটা ৭ নভেম্বর ১৯৭৫ সালের পূর্বে ছিল। সেই সংকট আজকে এখানে দেখা দিয়েছে। আমাদের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হয়ে পড়েছে, আমাদের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়েছে। আমাদের যা কিছু অর্জন ছিল আমরা সবকিছু হারিয়ে ফেলেছি।’
সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার সাজার বিষয় উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, সাবেক প্রধান বিচারপতিকে ১১ বছর সাজা দেওয়া হয়েছে।
আইনজীবীরা বলছেন যে এটা কখনো কাম্য হতে পারে না। এটা কখনো বিচার ব্যবস্থাকে সম্মানজনক অবস্থায় নেবে না। এটা বিচার ব্যবস্থার ওপর মানুষের যে আস্থা, সেটাকে ধ্বংস করে দেবে। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, আজকে আর কোনো বিচারক সাহস পাবেন না যে সরকারের অন্যায়ের বিরুদ্ধে রায় প্রদান করার। যেটা সরকার চাইবে না সেই রায় দেওয়া তাঁদের জন্য বিপজ্জনক হয়ে দাঁড়াবে।
/জেআর/