| |
               

মূল পাতা সারাদেশ ভরণপোষণ চেয়ে ছেলে ও পুত্রবধুর বিরুদ্ধে বাবার অভিযোগ


ভরণপোষণ চেয়ে ছেলে ও পুত্রবধুর বিরুদ্ধে বাবার অভিযোগ


নওগাঁ সংবাদদাতা     05 October, 2021     03:49 PM    


সৃষ্টিকর্তার রহমতে কারো নিজের ঔরসজাত সন্তানের মুখ দেখার সৌভাগ্য হয়। আবার কেউ পালক সন্তান নিয়ে থাকেন। সন্তানের প্রতি বাবা-মায়ের ভালোবাসা চিরকালের। তবে আছে মুদ্রার উল্টা পিঠও। বাবা-মা তাদের সন্তানকে খেয়ে না খেয়ে বুকে-পিঠে লালন পালন করে থাকেন। এক সময় সেই সন্তানরা বাবা-মা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার মতো ঘটনাও ঘটে। এক মুঠো খাবারের আশায় সন্তানের বিরুদ্ধে থানা ও আদালত পর্যন্ত যেতে হয় বাবা-মাকে। এমনই এক ঘটনা ঘটেছে নওগাঁর নিয়ামতপুরে।

শুধু দু’মুঠো ডাল-ভাত খেয়ে বেঁচে থাকার আশায় ছেলে ও পুত্রবধুর বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন ময়েজ উদ্দীন (৮০) নামে এক অসহায় বাবা। তিনি উপজেলার পাঁড়ইল ইউনিয়নের দিঘীপাড়া (পশ্চিম পাহাড়) গ্রামের বাসিন্দা এবং বার্ধক্যজনিত কারণে বর্তমানে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। সোমবার বিকেলে নিয়ামতপুর থানায় বৃদ্ধ তার ছেলে মুনছের আলী (৩৫) ও পুত্রবধু সুলতানা বেগমের (৩০) বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বৃদ্ধ ময়েজ উদ্দীনের স্ত্রী অনেক আগেই মারা গেছেন। তার ছেলে কৃষি কাজ করে সংসার চালান। স্ত্রী মারা যাওয়ার পর নিজেই রান্না করে খেতেন। কিন্তু বার্ধক্যজনিত কারণে বর্তমানে তিনি কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। একমাত্র ছেলে ভরণপোষণ দেন না। শুধু বাঁচার তাগিদে নিজেকেই নিজের খাবার রান্না করে খেতে হয়। অনেক সময় রান্না করে খেতে না পেরে উপোস থাকতে হয়।

স্থানীয় তাইজুল ইসলামসহ কয়েকজন জানান, ছেলে মুনছের আলী তার বাবার প্রতি খুবই উদাসীন। কোনো খোঁজখবর রাখে না। মাঝেমধ্যেই ছোটখাটো বিষয় নিয়ে বাবার সঙ্গে তুমুল ঝগড়া করে। বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার প্রতিবেশীরা মুনছেরকে বোঝানোর পরও কোনো প্রতিকার হয়নি। অবশেষে নিরুপায় হয়ে ভরণপোষণের দাবিতে ছেলের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছেন বৃদ্ধ।

ভুক্তভোগী বাবা ময়েজ উদ্দীন বলেন, দীর্ঘদিন থেকে একাই রান্না করে খান। বয়সের ভারে এখন তেমন কিছুই করতে পারি না। অসুখ-বিসুখ প্রায় লেগেই থাকে। যোগ্য কর্মক্ষম ছেলে থাকার পর ভরণপোষণও বন্ধ করে দিয়েছে। পুত্রবধূর প্রতি কিছুটা ভরসা করলেও সেও ছেলের মতোই আচরণ করে। যেদিন শরীর খুব খারাপ থাকে রান্না হয় না তার। উপোস থাকতে হয়। পাড়া-প্রতিবেশীর খোঁজ নিয়ে কিছু দিলে খায়। সব মিলিয়ে অর্ধহারে-অনাহারে দিন কাটছে এখন। শুনেছি সরকার নাকি বৃদ্ধ পিতা-মাতার ভরণপোষণ নিশ্চিত করতে আইন করেছে। সেই ভরসায় শুধু দু’মুঠো ডাল-ভাত খেয়ে বেঁচে থাকার আশায় অভিযোগ করেছি।

বৃদ্ধর ছেলে মুনছের আলী বলেন, বাবার বয়স হয়েছে। সব সময় হয়ত তার চাহিদা পূরণ করতে পারিনা। বাবা যে অভিযোগ করেছেন, তা ঠিক না।

নিয়ামতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ন কবীর বৃদ্ধার অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

/জেআর/

 


এই এলাকার অন্যান্য সংবাদ দেখতে ক্লিক করুন: রাজশাহী নওগাঁ নিয়ামতপুর