| |
               

মূল পাতা সফর একদিনে রাঙামাটির ৬ দ্রষ্টব্যে


একদিনে রাঙামাটির ৬ দ্রষ্টব্যে


শাহরিয়ার সিজান     18 January, 2021     03:59 PM    


একদিনেই ঘুরে এসেছি কাপ্তাই লেক। দুইজন গিয়েছিলাম খরচ হয়েছিল মাত্র ৪৬৮০ টাকা। যাত্রা রাত ১০:৩০ মিনিটের ইউনিক বাস (ফকিরাপুল  থেকে)। ভোর ৫টার দিকে গিয়ে পৌঁছলাম দোয়েল চত্বর। ওখানে অপেক্ষা করলাম সকাল হওয়া পর্যন্ত। সকালের নাস্তাটা ওখানেই সেরে ফেললাম। তারপর এইদিক ওইদিক একটু হাঁটাহাঁটি করে শহরটা একটু দেখলাম, তারপর চলে গেলাম রিসার্ভ বাজার। ওখান থেকে ঠিক করলাম ট্রলার সারাদিনের জন্য। গেলাম ৬টি স্থানে।

দ্রষ্টব্যগুলো :
● সুবলং ঝরনা
● ছোট ঝরনা
● নির্মাণ মন্দির
● আদিবাসী গ্রাম
● ঝুলন্ত ব্রিজ
● তান্যাবি রেস্টুরেন্ট

এখানে বলে রাখা ভালো যে বর্ষার সিজন ছাড়া সুবলং ঝর্নায় পানি থাকে না। শুনেছি,আর্মিরা নাকি উপর থেকে পানি আটকে রেখে সেই পানি তারা ব্যবহার করে।
তবে ছোট ঝর্নায় সবসময় পানি থাকে (কম আর বেশি) এছাড়া নির্মাণ মন্দির আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে। কারণ নির্মাণ মন্দিরে যেতে আপনাকে কমপক্ষে ৮ তলা বাড়ির সমান একটি পাহাড়ে উঠতে হবে। যেটা আমার অনেক পছন্দ হয়েছে।

এরপর আসি আদিবাসী গ্রামে, এইখানে আপনি পাহাড়ি আদিবাসীদের হাতে বানানো অনেক রকমের জামা কাপড় পাবেন। যেমন- শাল, আদিবাসী মেয়েদের জামা, পাঞ্জাবি যদিও সব হাতে বানানো না। ওদের শালগুলো আমার সবথেকে বেশি পছন্দ হয়েছিল তাই ৩টা কিনে নিয়েছিলাম। এছাড়া আপনি চাইলে ওদের পুরো গ্রাম ঘুরে দেখতে পারেন।
তবে গ্রামের বাইরে যাওয়া নিষেধ। কারণ হিসেবে জানতে চাইলে বলে বন্যপ্রাণীর ভয় আছে তাই উনারা কাউকে গ্রামের বাইরে যেতে দেয় না। আদিবাসী গ্রাম দেখতে দেখতে আশা করি দুপুর হয়ে যাবে। তারপর চলে যাবেন কোনও একটি রেস্তোরাঁয়। ওখানে অনেক রেস্তোরাঁ আছে। যেমন- তান্যাবি রেস্টুরেন্ট, পেদা টিং টিং, মেজাং এইরকম। তবে আমরা গিয়েছিলাম তান্যাবি রেস্টুরেন্টে। ওখানের পরিবেশটা ছিলো অসাধারণ। পুরো রেস্টুরেন্টটা একটা দ্বীপের উপর। খাওয়া-দাওয়ার পর চাইলে ওখানে একটু গা হেলিয়ে দিতে পারবেন কিছুক্ষণের জন্য। এরপর সবশেষে গিয়েছি ঝুলন্ত ব্রিজে। সত্যি কথা বলতে ঝুলন্ত ব্রিজটি আমার কাছে তেমন ভালো লাগেনি। তবে আপনাদের কারোও যে ভালো লাগবে না এমন বলছি না, সবার টেস্ট আলাদা। ঝুলন্ত ব্রিজ দেখতে দেখতে আশা করি বিকেল শেষ হয়ে যাবে, এরপর আবার চলে আসবেন রিসার্ভ বাজার, এইখানে বেশ কয়েকটি শুটকির দোকান আছে মোটামুটি কম দামেই চাইলে কিছু শুঁটকি কিনে নিতে পারেন। তারপর আশেপাশে কিছুক্ষণ ঘুরে রিসার্ভ বাজারের কাছেই বাসের কাউন্টার। ওখান থেকে ইউনিক বাস ২টা ছাড়ে একটি রাত ৮টায় আরেকটি রাত ৮:৩০ মিনিটে। যেকোনো একটি বাসে উঠে পড়ুন, ঢাকায় আসতে আসতে ভোর ৫টার মতো বাজবে। আপনি চাইলে পরের দিন আপনার অফিসে অনায়াসে জয়েন করতে পারবেন।

খরচ
ঢাকা টু রাঙামাটি বাসের টিকেট একজনের ৬২০ টাকা। ওখানে সকালের নাস্তা দুইজনের ১৩০ টাকা। তারপর দোয়েল চত্ত্বর থেকে রিসার্ভ বাজার অটো ভাড়া (লোকাল) ১০ টাকা করে। ওখান থেকে ট্রলার ভাড়া সারাদিনের জন্য ১৩০০ টাকা (আমাদের ট্রলারটি অনেক বড় ছিলো ১টা ১৫ জনের গ্রুপ অনায়াসে যেতে পারবেন)। এরপর দুপুরের খাবারে খেয়েছিলাম ব্যাম্বু চিকেন, ভাত, ডাল, পাহাড়ি সালাদ খরচ হয়েছিল ৫০০ টাকা (ড্রাইভারসহ)।

এছাড়া সুবলং ঝর্না দেখতে টিকেট কিনতে হবে ১৫ টাকা করে জন প্রতি, ঝুলন্ত ব্রিজে ২০ টাকা করে টিকেট জন প্রতি এবং বোট পার্কিং এর জন্য ৩০ টাকা। এরপর রাঙামাটি টু ঢাকা ইউনিক বাসের টিকেট একজনের ৬২০ টাকা করে দুই জনের ১২৪০ টাকা।

মাঝখানে রাত ১২টা বা ১২:৩০ এর দিকে কুমিল্লায় এসে ব্রেক দিবে চাইলে ওখান থেকে রাতের খাওয়া-দাওয়া করে ফেলতে পারেন। তবে হাইওয়ে রেস্টুরেন্টে দাম একটু বেশি।

বি. দ্র. ওইখানে অনেক জায়গায় দেখেছি প্লাস্টিক পড়ে আছে। যারা যাবেন দয়া করে নিজেদের ময়লা গুলো নিজেরা সংগে করে নিয়ে আসবেন। দেশটা আমাদের এবং দেশেটা রক্ষা করার দায়িত্বও আমাদের। এবং বোটে ওঠার আগে পানি কিনে নিয়ে তারপর উঠবেন।