| |
               

মূল পাতা মুসলিম বিশ্ব সফল কূটনীতির সোনালী সময়ে আফগানিস্তান


সফল কূটনীতির সোনালী সময়ে আফগানিস্তান


শেখ আশরাফুল ইসলাম     26 October, 2025     11:13 AM    


বর্তমান বিশ্বে কোনো জাতি কেবল অস্ত্র ও শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে নিজেদের অবস্থান পাঁকা করতে পারে না। এর জন্য প্রয়োজন প্রজ্ঞা ও কূটনৈতিক দক্ষতা। এই দুয়ের মাধ্যমেই রাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ গড়ে ওঠে।

যেসব দেশ দক্ষ মুখপাত্র ও কূটনীতিকের অভাবে ভোগে, তারা প্রায়ই সংঘাত ও সংকট এড়াতে ব্যর্থ হয়; ফলে হয় তাদের স্বাধীনতা বাইরের শক্তির হাতে নির্ভরশীল হয়ে পড়ে, নয়তো নিজেদের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় তাদের ক্রমাগত ত্যাগ স্বীকার করতে হয়।

বহু বছরের অস্থিরতার পর আফগানিস্তান এখন সফল কূটনীতির এক নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করেছে। এটিকে বলা যায়  সফল কূটনীতির সোনালী সময়।

দেশটি এখন আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক পরিসরে নিজেদের যুক্তিসঙ্গত ও রাজনৈতিক অবস্থান তুলে ধরার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে ইমারাতে ইসলামিয়ার এই দক্ষ কূটনীতি ভারত ও কাতারের পক্ষ থেকে আগ্রহ ও যোগাযোগের ইঙ্গিত এনেছে, যা অতীতের অবিশ্বাসের পরিবেশ থেকে এক ইতিবাচক পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়। এই কূটনৈতিক সাফল্য প্রমাণ করে, ইমারাতে ইসলামিয়ার অগ্রযাত্রা হওয়া উচিত সংলাপের মাধ্যমে, নিষেধাজ্ঞা, বিচ্ছিন্নতা ও সীমাবদ্ধতার মাধ্যমে নয়।

ইমারাতে ইসলামিয়া সংযত ও ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থান দেশটির প্রতি আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক আস্থা আরও জোরদার করেছে। ভুল তথ্য ও বিভ্রান্তিকর কার্যকলাপ সত্ত্বেও, শেষ পর্যন্ত বিশ্ব এই বাস্তবতাকে স্বীকার করতে বাধ্য হবে।

পারস্পরিক সম্মানের ভিত্তিতে কূটনীতি পরিচালনার মাধ্যমে ইসলামি আমিরাত এখন সম্মানজনক এক অবস্থান অর্জন করেছে। এই রাজনৈতিক সাফল্য আফগান জনগণের অস্তিত্ব ও মর্যাদা নিশ্চিত করেছে।আফগানিস্তানের জন্য এটি জাতীয় গৌরব পুনরুদ্ধারের এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

দীর্ঘ অস্থিরতার পর যখন কোনো দেশ সফল কূটনীতির পথে ফিরে আসে, তা ভবিষ্যতের জন্য এক আশাব্যঞ্জক বার্তা দেয়। আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক পর্যায়ে এই কূটনৈতিক উদ্যোগগুলো ইমারাতে ইসলামিয়ার নতুন বাস্তবতাকে ধীরে ধীরে স্বীকৃতি দেওয়ার ইঙ্গিত বহন করছে।

কূটনীতিতে সাফল্য ভাষাগত পারদর্শিতার উপর নির্ভর করে না, বরং তা নির্ভর করে বিভিন্ন রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট দক্ষতার সঙ্গে ও স্থিরভাবে পরিচালনার ক্ষমতার উপর। ইমারাতে ইসলামিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ ও সম্পৃক্ততা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য অপরিহার্য বোঝাপড়াকে জোরদার করে, যার মধ্যে আফগানিস্তানও অন্তর্ভুক্ত।

বর্তমানে ইমারাতে ইসলামিয়া এমন এক কূটনৈতিক প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে আছে, যেখানে প্রতিটি সিদ্ধান্ত জাতির সার্বভৌম অবস্থানকে সুনিশ্চিত করেছে। তারা কোনো পক্ষের কাছে আনুগত্য প্রদর্শন করছে না, আবার কারও প্রতি বৈরিতাও পোষণ করছে না। এই ভারসাম্যপূর্ণ কূটনীতি নতুন আফগানিস্তানের বুদ্ধিবৃত্তিক পরিপক্বতার নিদর্শন, যা বর্তমান বৈশ্বিক বাস্তবতায় আরও দৃঢ় ও স্থিতিশীল রাজনৈতিক চেহারা উপস্থাপন করছে।

এই দৃঢ় অবস্থানের মাধ্যমে বিশ্ব ইসলামি আমিরাতকে এমন একটি ব্যবস্থা হিসেবে চিনতে শুরু করবে, যার সঙ্গে সম্পর্ক, বোঝাপড়া ও পারস্পরিক সম্মান গড়ে তোলা উচিত। এটি প্রমাণ করে যে, অস্থির সময় পেরিয়ে ইমারাতে ইসলামিয়ার কূটনীতি এখন বৈশ্বিক অঙ্গনে সফল রাজনৈতিক আলাপ-আলোচনার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।

ইমারাতে ইসলামিয়ার এই নতুন কূটনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি ইসলামী নীতিমালা ও ধৈর্যনির্ভর রাজনীতির সংমিশ্রণ। যেকোনো রাজনৈতিক কৌশল যদি এই গুণাবলী ধারণ করে, তবে তা সময়ের পরীক্ষায় টিকে থাকবে—এবং আফগানিস্তানের স্বাধীনতা ও মর্যাদার স্থায়িত্বের সাক্ষ্য দেবে।

ইমারাতে ইসলামিয়ার প্রতিটি সিদ্ধান্তই প্রমাণ করে যে, তাদের প্রতিটি পদক্ষেপ জাতীয় গৌরবের প্রতিফলন। এই আস্থানির্ভর কূটনীতি বিশ্বকে জানিয়ে দেয়—বর্তমান আফগানিস্তানের চেহারা হলো পারস্পরিক সম্মান, সহযোগিতা ও বোঝাপড়ার প্রতীক।

বিশ্লেষণটি হুররিয়াত রেডিও থেকে অনূদিত