বিশ্বকে আমেরিকানাইজ করার প্রকল্প ব্যর্থ হয়েছে : ইরানের প্রেসিডেন্ট

সম্প্রতি ইউরোপের কয়েকটি দেশে মুসলিমদের পবিত্র এই ধর্মগ্রন্থ অবমাননার নিন্দা জানিয়ে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি বলেছেন, বিশ্ব ব্যবস্থা বদলে যাচ্ছে এবং পশ্চিমা আধিপত্যের যুগ শেষ হয়ে এসেছে। একটি নতুন আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার উত্থানের মধ্যে ‘বিশ্ব পরিবর্তন হচ্ছে’ এবং ‘পথটি অপরিবর্তনীয়’। আধিপত্য বিস্তারের পশ্চিমা নীতি এখন আর ‘বিশ্বের জন্য কার্যকরী নয়’ এবং শাসক অভিজাত ও পুঁজিপতিদের স্বার্থ রক্ষা করে আসা পুরোনো উদারনৈতিক ব্যবস্থাও ভেঙে পড়েছে। বিশ্বকে আমেরিকানাইজ করার প্রকল্প ব্যর্থ হয়েছে। বিশ্বজুড়ে দেশগুলোর ‘প্রতিরোধ এবং সচেতনতা’ আগের চেয়ে আরো বেড়েছে।

বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) তুরস্কের বার্তাসংস্থা আনাদোলু এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে  স্থানীয় সময় মঙ্গলবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। ভাষণ দেওয়ার সময় তিনি হাতে পবিত্র কুরআনের একটি কপি ধরে রেখেছিলেন। চলতি বছরের জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ১৪০ টিরও বেশি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও প্রতিনিধিরা অংশ নিচ্ছেন।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র নীতির প্রধান জোসেপ বোরেলকে কটাক্ষ করে ইরানের প্রেসিডেন্ট বলেন, পশ্চিমারা পরিচয় সঙ্কটের সম্মুখীন হয়েছে। কারণ তারা বিশ্বকে ‘জঙ্গল’ এবং নিজেদেরকে ‘বাগান হিসেবে’ দেখে থাকে। পশ্চিমা গণতন্ত্র ‘তার যাত্রার শেষ প্রান্তে পৌঁছেছে’ এবং পশ্চিম এশিয়ার জনগণ পশ্চিমা গণতন্ত্রের ‘সত্যিকারের অর্থ’ জানে। আর তা হলো– ‘অভ্যুত্থান, দখলদারিত্ব এবং যুদ্ধ। তার দেশ ‘অঞ্চল এবং বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক অভিন্নতার’ নীতির পক্ষে এবং ‘ন্যায়বিচারের ভিত্তিতে বিশ্বের সাথে মিথস্ক্রিয়া করতে’ আগ্রহী। যে স্কুলটি বিশ্বের জন্য একটি মডেল হতে চেয়েছিল তা পাঠ (শিক্ষা) হয়ে উঠেছে এবং এটি তার যাত্রার শেষের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে।

ইউরোপের কয়েকটি দেশে মুসলিমদের পবিত্র এই গ্রন্থের অবমাননার সাম্প্রতিক ঘটনার নিন্দা করে প্রেসিডেন্ট রাই বলেন, কুরআনের শিক্ষা ‘কখনও আগুনে জ্বলবে না। পবিত্র কুরআন মানুষকে আধ্যাত্মিকতা, সত্য এবং নৈতিকতার শিক্ষা দেয়। সুইডেনে কুরআন পোড়ানো এবং হিজাব পরিহিত মেয়েদের ফ্রান্সে স্কুলে যেতে বাধা দেওয়ার মতো ইসলামবিদ্বেষী কাজের নিন্দা করেন। বিশ্ব অভূতপূর্ব পরিবর্তনের সম্মুখীন হচ্ছে। মানুষের মূল্যবোধকে দৃঢ় করতে পারে সৃষ্টিকর্তার এমন বাণীর চেয়ে ভালো আর কি হতে পারে? আমরা বিশ্বাস করি- ঐশ্বরিক ধর্মের প্রতি সম্মান আন্তর্জাতিক এজেন্ডায় অন্তর্ভুক্ত করা উচিত এবং জাতিসংঘের মাধ্যমে ঐশ্বরিক ধর্মের প্রতি সম্মানের নিশ্চয়তা দেওয়া উচিত। মুসলিমদের পবিত্র গ্রন্থের অবমাননা ঠেকাতে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।