রহমত নিউজ ডেস্ক 26 July, 2023 10:46 AM
পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির পর ২৫ বছর চলে গেলেও এর মৌলিক ধারাগুলোর বাস্তবায়ন হয়নি। গত ১৫ বছর ধরে আওয়ামী লীগ টানা ক্ষমতায় থেকেও এ চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়ন করেনি। এর কারণ হচ্ছে রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব। দ্রুত সময়ের মধ্যে পার্বত্য চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের জন্য বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর কয়েকটি ছাত্র ও যুব সংগঠন এবং বিভিন্ন বামপন্থী ছাত্র ও যুব সংগঠন যৌথভাবে ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনে শামিল ছাত্র ও যুব সংগঠনসমূহের’ ব্যানারে আয়োজিত সংহতি সমাবেশে বিভিন্ন ছাত্র ও যুব সংগঠনের নেতারা এসব কথা বলেন। ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এর ফলে পার্বত্য এলাকায় দুই দশকের বেশি সময় ধরে চলা সশস্ত্র সংঘাতের অবসান হয়। বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে এ চুক্তিতে স্বাক্ষর করে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস)।
সমাবেশে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন জাতীয় কমিটির সদস্য দীপায়ন খীসা বলেন, আজ যাঁরা সরকারে আছেন, তাঁরা বিভিন্ন সময়ে বলেন যে পার্বত্য পার্বত্য চুক্তির বাস্তবায়ন হয়ে গেছে। আমরা বলি যে সর্বত্র চুক্তির বিষয়টি ভুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। অবিলম্বে এই চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন করতে হবে। পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের আন্দোলন শুধু পাহাড়ের লড়াই নয়, এই লড়াই সমগ্র দেশবাসীর৷ এই লড়াইয়ে তাই সবাইকে সম্পৃক্ত হতে হবে৷
যুব ইউনিয়নের সভাপতি খান আসাদুজ্জামান বলেন,সরকার পার্বত্য চুক্তির সঙ্গে প্রহসন করেছে, অবিলম্বে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন করতে হবে৷
চুক্তি হওয়ার ২৫ বছর পরও কেন পার্বত্য চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন হচ্ছে না, সেই প্রশ্ন তুলে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের (বাসদ) সভাপতি মুক্তা বাড়ৈ বলেন, রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাবে পার্বত্য চুক্তির বাস্তবায়ন হচ্ছে না। ভূমিদস্যুরা একের পর এক পাহাড় দখল করে পাঁচ তারকা হোটেল তৈরি করছে, পাহাড়ে-সমতলে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষ নির্যাতিত হচ্ছেন। পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে৷
আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অলিক মৃ বলেন, আওয়ামী লীগ গত তিনটি নির্বাচনের আগে পার্বত্য চুক্তির যথাযথ বাস্তবায়নের আশ্বাস দিয়েছিল৷ আর কতবার ক্ষমতায় গেলে তাঁরা এই চুক্তি বাস্তবায়ন করবে?
জাসদ ছাত্রলীগের সভাপতি রাশিদুল হক ননী বলেন, পার্বত্য চুক্তি নিয়ে রাজনৈতিক খেলা হয়। এই চুক্তি বাস্তবায়ন সব রাজনৈতিক দলের দাবি হওয়া উচিত।
দেশকে সংঘাতময় পরিস্থিতি থেকে বাঁচাতে হলে চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেন বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি অতুলন দাস৷
সমাবেশে বক্তব্য দেন আদিবাসী যুব ফোরামের সাংগঠনিক সম্পাদক টনি চিরান, বাংলাদেশ জাসদের ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের (বিসিএল) সভাপতি গৌতম শীল, জাতীয় আদিবাসী যুব পরিষদের সভাপতি হরেন্দ্র নাথ সিং, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের নেতা অং সুই সিং মারমা প্রমুখ। যুব মৈত্রীর সভাপতি তৌহিদুর রহমান সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ছাত্র ইউনিয়নের একাংশের কেন্দ্রীয় সভাপতি দীপক শীল।