মূল পাতা শিক্ষাঙ্গন নামিদামি প্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীদের মানসিক নির্যাতন করছে : শিক্ষা উপমন্ত্রী
রহমত নিউজ ডেস্ক 22 May, 2023 09:36 PM
শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেছেন, ঢাকা ও চট্টগ্রাম শহরের নামিদামি প্রতিষ্ঠানগুলো সৃজনশীল কাজে নেই। বিদ্যালয়গুলোয় অভিভাবক, শিক্ষক সবাই মিলে বলা যায় এক প্রকার মানসিক নির্যাতন করছে। কারণ পড়শোনার বাইরে তাদের কিছু করতে দিচ্ছি না, দেই না। অভিভাবকরাও এখানে বেশি দায়ী। শিক্ষার্থীদের মানসিকভাবে চাপ দেওয়পা হয় ফলাফলটা খুব ভালো করতে হবে। ডাক্তার-ইঞ্জনিয়ার হতে হবে অথবা সরকারি কর্মকর্তা হতে হবে। বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে হবে। এই প্রেশারে শিক্ষার্থীদের জীবন বিপন্ন করে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু এই শহরগুলোর বাইরে আমরা যাচ্ছি, সেখানে কিন্তু শিক্ষার্থীরা উন্মুক্ত চিন্তা করার সুযোগ পাচ্ছে। তারা অনেক সৃষ্টিশীল কাজ করছে। দেখা যাবে এই শিক্ষার্থীরাই দেশের ভবিষ্যৎ উন্নত করবে। আর যাদের মানসিক নির্যাতন করে শুধু ভালো ফলাফল পাওয়ার জন্য তৈরি করা হচ্ছে, তাদের বেশি সংখ্যক এক সময় দেশ থেকে পালিয়েই যাবে। বিদেশে পড়তে গেলেও তারা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে যাবে। আত্মকেন্দ্রিকতা থেকে বেরিয়ে সমাজের উপকার করার সক্ষমতা তাদের কমে যাবে। কারণ সমাজ থেকে তাকে কিছু দেওয়া হয়নি, শুধু ফলাফল চাওয়া হয়েছে। এই ফলাফল নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে আমাদের সন্তারনা যাতে সব কাজে এগিয়ে যাবে, এই হোক আমাদের প্রত্যাশা।
আজ (২২ মে) সোমবার রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে জাতীয় দিবসে বিভিন্ন সৃজনশীল কাজে বিজয়ী শিক্ষার্থীদের পুরষ্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। মাউশির পরিচালক (প্রশাসন) শাহেদুল খবির চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো বক্তব্য দেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. কামাল হোসেন এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান।
শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, পৃথিবীর কোনও দেশে ১৩ বছর, ১৪ বছর ১৫ বছরে কাউকে মেধাবী শিক্ষার্থী বলে স্বীকৃতি দেওয়া হয় না। আমাদের দেশে ১০ বছর বয়সী শিক্ষার্থীকে বলা হয় আমার ছেলেটা খুব মেধাবী, তাই তাকে এই স্কুলে (নামিদামি) ভর্তি করানো উচিত, তাই সরকারি মাধ্যমিকে আসবে না। যখন শিক্ষা অর্জনের সময় মেধা অর্জনের সময় তখন তাকে মেধাবীর তকমা দিয়ে নির্যাতনের মধ্যে ফেলছি। শিক্ষা নেওয়া এবং মূল্যবোধ শেখার কোনও সুযোগ আমরা করে দিচ্ছি না। তাদের সৃজনশীল কোনও কাজ করতে দিচ্ছি না। আমরা গণমাধ্যমের কাছে সহযোগিতা চাই-মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের ফলাফলের যে ক্রেইজ থেকে বেরিয়ে আসতে আপনাদের সহযোগিতা অবশ্যই প্রয়োজন। ফলাফল নয় সত্যিকারের শিক্ষার দিতে শিক্ষার্থীরা এগিয়ে যাচ্ছে ফলাফল নয়। গতানুগতিক শিক্ষার মধ্যে শিক্ষার্থীদের আটকে না রেখে তাদের উন্মুক্ত চিন্তা করার সুযোগ করে দেওয়া, জীবনমুখি করার জন্য তাদের সৃজনশীল করা, সংস্কৃতির সঙ্গে সম্পৃক্ত করা বিদ্যালয় ও মাদরাসাগুলোতে যাতে সেটা হয় সেটায় সচেষ্ট থাকতে হবে। আমাদের মাদ্রাসাগুলোতেও ইসলামি সংস্কৃতি ও বাংলাদেশি এবং সব পর্যায়ের সংস্কৃতি চর্চা প্রয়োজন। সুজনশীল কাজে তাদের সম্পৃক্ততা অবশ্যই প্রয়োজন।