| |
               

মূল পাতা জাতীয় বাংলার সার্বজনীন গ্রহণযোগ্যতা নিশ্চিত করতে হবে : মোস্তাফা জব্বার


বাংলার সার্বজনীন গ্রহণযোগ্যতা নিশ্চিত করতে হবে : মোস্তাফা জব্বার


মুসলিম বিশ্ব ডেস্ক     27 March, 2023     07:57 PM    


ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, বাংলার সার্বজনীন গ্রহণযোগ্যতা নিশ্চিত করতে হবে। আমরা বাংলার জন্য রক্ত দিয়েছি, বাংলা আমাদের রাষ্ট্রভাষা। ৩৫ কোটি মানুষের এ ভাষার সব কিছু আমাদেরই করতে হবে। ডিজিটাল প্রযুক্তিতে বাংলা ভাষার উন্নয়নের দায়িত্ব আমাদের। পৃথিবীতে বাংলা ভাষাভিত্তিক একমাত্র রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশকেই তা করতে হবে।

আজ (২৭ মার্চ) সোমবার ঢাকায় বিটিআরসি মিলনায়তনে বিটিআরসি ও বিআইজিএফ-এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ডিজিটাল প্রযুক্তিতে বাংলা ভাষার সার্বজনীন গ্রহণযোগ্যতা এবং বাংলাদেশের পর্যবেক্ষণ বিষয়ক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। বিটিআরসি চেয়ারম‌্যান শ‌্যাম সুন্দর সিকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি, বিআইজিএফ সভাপতি হাসানুল হক ইনু সম্মানিত অতিথি, সংসদ সদস‌্য আফরোজা হক রীনা এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামান,বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক রণজিৎ কুমার, বিটিআরসির মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. এহসান কবীর। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিআইজিএফ সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ আব্দুল হক (অনু)।

মোস্তাফা জব্বার বলেন, আমাদের দুর্ভাগ্য যে ইউনিকোডে বাংলা এনকোডিং করার সময় আমরা তার সদস্য ছিলাম না। প্রতিবেশী দেশের বাংলা ভাষাভাষীরা বাংলাকে দেবনাগরীর মতো করে এনকোডিং করে আমাদের ভাষার স্বাতন্ত্র্যকে সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করেছেন। আমরা দীর্ঘদিন যুদ্ধ করেও এর সমাধান করতে পারছি না। ইতোমধ্যে বাংলার প্রমিত মান তৈরি করা হয়েছে। বাংলার জাতীয় মান ইউনিকোডের মান হিসেবে নিশ্চিত করতে ইউনিকোড কনসোর্টিয়ামে তা পেশ করতে হবে। মন্ত্রী এ বিষয়ক গঠিত কারিগরি কমিটিতে বাংলাদেশের অংশগ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত করার নির্দেশনা দেন। বিশ্বের ৩৫ কোটি বাংলা ভাষাভাষীর জন্য বাংলাদেশই হচ্ছে বাংলা ভাষার রাজধানী। বাংলাদেশই ডিজিটাল প্রযুক্তিতে বাংলার এনকোডিং ও কিবোর্ডের মান প্রমিত করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই বাংলার ১৬টি টুলস উন্নয়নে ১৫৯ কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ করেছেন যার কাজ চলমান রয়েছে। বাংলাদেশে প্রকাশনার জন্য বস্তুত একটিই কিবোর্ড ও সফটওয়্যার ব্যবহৃত হয়। এখানে আসকি ও ইউনকোডের মধ্যে যে দেওয়াল আছে তা ভেঙে ফেলা হয়েছে। তারপরও ইউনিকোড কনভার্সনে যে জটিলতা হয়, তার অপরাধ বাংলা ভাষাভাষীদের নয়।

তিনি বলেন, ভাষা ও সাহিত্যের প্রাযুক্তিক সমস্যাটার পেছনে ইউনিকোড কনসোর্টিয়ামের দায় রয়েছে, আমাদের ভাষাকে একটি স্বতন্ত্র ভাষা হিসেবে গণ্য না করে আমাদেরকে ‘দেবনাগরীর’ অনুসারী করে প্রচণ্ড রকম ক্ষতি করা হয়েছে। এজন্যই এখনো আমাদের নোক্তা নিয়ে যুদ্ধ করে বেড়াতে হচ্ছে। অথচ বাংলা বর্ণে কোনে নোক্তা নেই। ইউনিকোড যদি বাংলাকে বাংলার মতো দেখে এ সমস্যাগুলো সমাধান করে ফেলত তাহলে যে সমস্যাগুলো এখন মোকাবেলা করতে হচ্ছে তা আমরা করতাম না।  দেরি করে হলেও ২০১০ সালে বাংলাদেশ ইউনিকোড কনসোর্টিয়ামে যোগ দিয়েছে, আগে ইউনিকোড কনসোর্টিয়ামে ভারতীয় ভাষা পরিবারের যে এনকোডিংগুলো করা হয়, তখন বাংলা ভাষাভাষীরা ভূমিকা নিতে পারলে সংকট অনেকটাই উত্তরণ সম্ভব ছিল। প্রযুক্তিতে বাংলা ভাষা ব্যবহারে আসকি, ইউনিকোড এবং প্রমিতের নির্দিষ্ট মান থাকলেও তার প্রয়োগ না থাকায় স্পেল চেকার, অভিধান, ওসিআর ইত্যাদিসহ বাংলা এনএলপি ব্যবহার বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তাই এর প্রয়োগের বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের আরও সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

তিনি আরো বলেন, ইউনিকোডে বাংলা লিপি ঢ-ঢ়, ড-ড়, য-য়-তে সমস্যা থাকাতে বড় তথ্য বিশ্লেষণ, সার্চ ইঞ্জিন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় এবং ইন্টারনেট অব থিংসে বেশ সংকট দেখা দিচ্ছে, মুদ্রণ জগতে রোমান লিপির সঙ্গে বাংলা লিপির এনকোডিং-এর ক্ষেত্রে তারতম্য আছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় দেশের অভাবনীয় উন্নয়ন হয়েছে, দেশের শতকরা ৯৮ ভাগ এলাকা ফোর-জি নেটওয়ার্কের আওতায় এসেছে। দেশে ২০০৮ সালে সাড়ে সাত জিবিপিএস ইন্টারনেট ব্যবহৃত হতো, বর্তমানে তা ৪১০০ জিবিপিএসে উন্নীত হয়েছে। ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের একদেশ এক রেট কর্মসূচির ন্যায় মোবাইল ইন্টারনেটে তা করার জন্য সংশ্লিষ্টদের উদ্যোগ গ্রহণের নির্দেশে দেন তিনি।