মূল পাতা শিক্ষাঙ্গন ‘জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে নবীজির পদাঙ্ক অনুসরণ করতে হবে’
রহমত ডেস্ক 04 August, 2022 03:48 PM
আওলাদে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত মাওলানা হোসাইন আহমদ মাদানি রাহমাতুল্লাহ আলাইহির সুযোগ্য সাহেবজাদা মাওলানা সাইয়্যিদ আসজাদ মাদানি বলেছেন, আল্লাহ তায়ালা কুরআনে ইরশাদ করেছেন, ‘হে নবী! আপনি বলে দিন, যদি তোমরা এই দাবী করো যে তোমরা আল্লাহকে মুহাব্বত করো তাহলে আমার ইত্তিবা’ (পদাঙ্ক অনুসরণ) করো।' এখানে আল্লাহ ইত্তিবা' শব্দ বলেছেন, ইতাআত শব্দ বলেননি। ইত্তিবা- শব্দের অর্থ হলো 'পদাঙ্ক অনুসরণ'। উর্দূতে যাকে 'নক্বশে কদম' বলা হয়। অর্থাৎ জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পদাঙ্ক অনুসরণ করতে হবে। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমাদের নিকট সর্বোত্তম ব্যক্তি হলো সে, যে তার পরিবারের নিকট উত্তম। আমি আমার পরিবারের নিকট উত্তম।' আমরা কি আমাদের স্ত্রী, সন্তানাদি, পিতা-মাতা, ভাই-বোনদের নিকট উত্তম হতে পেরেছি? এমনিভাবে পানাহার, হাঁটা-চলা, পোশাক পরিচ্ছেদ, ইস্তিঞ্জা প্রতিটি ক্ষেত্রেই নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পদাঙ্ক অনুসরণ করার নামই ইত্তিবা।
বুধবার (৩ আগস্ট) এশার নামাজের পর জামিয়া মাদানিয়া বারিধারায় ছাত্রদের উদ্দেশ্যে দিকনির্দেশনা মূলক হেদায়েতী বয়ান তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে, বাদ মাগরিব ক্যাম্পাসে প্রবেশ করলে মাদরাসার বিভিন্ন ক্লাসের শিক্ষার্থীরা হযরতের ইস্তেকবালে দু'পাশে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে আহলান সাহলান, মারহাবান তৈয়্যিবান'সহ বিভিন্ন স্লোগানে মুখরিত করে তুলেন এবং প্রতিষ্ঠানটির শায়খুল হাদীস মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক মাওলানা সাইয়্যিদ আসজাদ মাদানিকে আন্তরিক অভ্যর্থনা জানাতে এগিয়ে আসেন। আরো উপস্থিত ছিলেন জামিয়ার ভারপ্রাপ্ত মুহতামিম মাওলানা মাসউদ আহমদ, শিক্ষা সচিব মুফতি মকবুল হোসাইন কাসেমী, সিনিয়র মুহাদ্দিস মাওলানা হেদায়েতুল্লাহ, আবাসিক হল পরিচালক মুফতী ইকবাল হোসাইন কাসেমী, মুফতি জাকির হোসাইন কাসেমী, মুফতী জাবের কাসেমী, সিনিয়র শিক্ষক মাওলানা আবু সালেহ, মাওলানা জয়নুল আবেদীনসহ অন্যান্য আসাতিজায়ে কেরাম। এরপর জামিয়ার মেহমানখানায় শিক্ষকমণ্ডলীর সাথে কুশল বিনিময় করে এশার জামাতে শরীক হন তিনি।
মাওলানা সাইয়্যিদ আসজাদ মাদানি বলেন, হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হলেন মহামানব ও সর্বশ্রেষ্ঠ রাসূল। আল্লাহ তাঁর পূর্বের ও পরের সকল গুনাহ মাফ করে দিয়েছেন। তবুও তার ব্যাপারে ইরশাদ করেন, ‘নিশ্চয় আল্লাহ ও তার ফেরেশতাগণ নবীজির উঁচু মর্যাদা কামনায় দু'আ করেন। সুতরাং হে মুমিনগণ! তোমরাও তার উপর দূরুদ ও সালাম পেশ করো।’ এজন্য মরহুম রহিমাহুল্লাহু এর মাগফিরাত কামনায় আমাদের বেশীবেশী দুআ করতে হবে এবং ইসালে সওয়াবের উদ্দেশ্যে দান সদকা'সহ বিভিন্ন আমল জারি রাখতে হবে। লক্ষ লক্ষ সাহাবায়ে কেরাম প্রতিটি ক্ষেত্রে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পদাঙ্ক অনুসরণ করে গেছেন। আমাদের আকাবিররাও প্রতিটি কাজে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পদাঙ্ক অনুসরণ করেছেন। যদি আমরা এমন ইত্তিবা' করতে পারি তাহলে স্বয়ং আল্লাহ আমাদেরকে ভালোবাসবেন এবং আমাদের জীবনের যাবতীয় অপরাধগুলো মাফ করে দিবেন।
ভারাক্রান্ত হৃদয় নিয়ে আফসোসের সাথে তিনি আরো বলেন, আগে যখন এই জামিয়ায় এসেছি তখন মাওলানা নূর হোসাইন কাসেমী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি আমাকে সময় দিয়েছেন। ছাত্রদের উদ্দেশ্যে হেদায়েতী বয়ান ও নসিহত করার কথা বলেছেন। বয়ান শেষে খুব খুশিমনে বলতেন আপনার এই নসিহত এই জামিয়ার ছাত্র ও শিক্ষকদের জন্য খুবই উপকারী হবে, ইনশাল্লাহ। তখন আমারও হৃদয়টা ভরে যেতো। কিন্তু আজ তিনি রহমাতুল্লাহি আলাইহি। আমরা কি কখনো তাঁর মাগফিরাত কামনায় দুআ করি? কখনো কি তার ইসালে সওয়াবের উদ্দেশ্যে কোনো নেক কাজ করে থাকি?
এরপর তিনি মাওলানা নূর হোসাইন কাসেমী রাহমাতুল্লাহি আলাইহির ইসালে সওয়াবের উদ্দেশ্যে তিনবার সূরা ফাতিহা, তিনবার দুরুদ শরীফ, বারো বার সূরা ইখলাস পাঠ করে মুনাজাত পরিচালনা করেন। এরপর সাইয়্যেদ আসজাদ মাদানী রাতের দস্তরখানায় শরীক হয়ে জামিয়া থেকে বিদায় নেন। এসময় জামিয়া হোসাইনিয়া ইসলামিয়া আরজাবাদ মাদরাসার মুহতামীম মাওলানা বাহাউদ্দীন জাকারিয়া, ইসলামবাগ মাদরাসার মুহতামীম মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দি'সহ ঢাকা ও আশপাশের বিভিন্ন মাদরাসা মসজিদের ইমাম-খতীব, শিক্ষকবৃন্দ ও জামিয়ার সাবেক আবনা এবং ফুজালারা উপস্থিত ছিলেন।