| |
               

মূল পাতা শিক্ষাঙ্গন ‘বাংলাদেশ তালেবান সাম্প্রদায়িক ও প্রতিক্রিয়াশীল রাষ্ট্রের দিকে যাচ্ছে’


‘বাংলাদেশ তালেবান সাম্প্রদায়িক ও প্রতিক্রিয়াশীল রাষ্ট্রের দিকে যাচ্ছে’


রহমত ডেস্ক     18 July, 2022     11:05 PM    


নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ওপর হামলা, লুণ্ঠন ও নির্যাতনের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করে সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের নেতারা বলেছেন, বাংলাদেশ একটা তালেবান সাম্প্রদায়িক ও প্রতিক্রিয়াশীল রাষ্ট্রের দিকে যাচ্ছে। এখানে পুলিশ-প্রশাসনও সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্পে আক্রান্ত হয়ে গেছে। ফলে ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র বাংলাদেশে বারবার মার খাচ্ছে।

সোমবার (১৮ জুলাই)  বিকালে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে ফেসবুক পোস্টে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে নড়াইলের লোহাগড়ার দিঘলিয়া গ্রামের সাহাপাড়ায় হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের বাড়িঘর ও মন্দিরে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন আয়োজিত এক সমাবেশে নেতারা এসব কথা বলেন।

সমাবেশে সভাপতিত্বের বক্তব্যে সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, বাংলাদেশকে একটা মনোলিথিক রাষ্ট্র বানানোর (কেবল বাঙালি ও মুসলমানের) চেষ্টা হচ্ছে। অন্য ধর্ম ও জাতির মানুষের কোনো অবস্থান এখানে রাখা হচ্ছে না। রাষ্ট্র পরিচালনার বহুত্ববাদী নীতি হচ্ছে গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। কিন্তু সর্বত্র এটি মার খাচ্ছে। প্রতিটি ঘটনা পুলিশ ও প্রশাসনের উপস্থিতিতে ঘটছে। তার মানে হচ্ছে পুলিশ ও প্রশাসন সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্পে আক্রান্ত হয়ে গেছে, তারাও অসাম্প্রদায়িক নয়৷ কাজেই বাংলাদেশে ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র বারবার মার খাচ্ছে।

সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এস এম এ সবুর বলেন, সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনায় সরকার নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে। সাম্প্রদায়িক হামলাগুলো মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী শক্তির সুপরিকল্পিত আক্রমণ কি না, তা আমরা জানি না৷ কিন্তু মুক্তিযুদ্ধবিরোধীরা দিন দিন শক্তিশালী হচ্ছে, ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে৷ সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় শোষণহীন সমাজ গড়ার লড়াই ও এর অর্জনকে নস্যাৎ করা এবং স্বাধীন বাংলাদেশকে নতুন পাকিস্তানি ভাবধারায় পিছিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা।

সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য অসিত বরণ রায় বলেন, এটা কোন বাংলাদেশ? এই বাংলাদেশের জন্য ৩০ লাখ শহীদ জীবন দেননি। দুই লাখ মা-বোন সম্ভ্রম হারাননি৷ বিচারহীনতার কারণে দেশে সাম্প্রদায়িক আক্রমণ ও অত্যাচার ক্রমাগত ঘটেই চলেছে৷ প্রতিটি হামলার বিচার করতে হবে, নয়তো মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ থাকবে না৷

সমাবেশের ঘোষণাপত্র পড়ে শোনান সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের নেতা ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী পারভেজ হাসেম৷ এতে সরকারের কাছে পাঁচ দফা দাবি জানানো হয়৷ দাবিগুলো হলো  : সনাতন ধর্মালম্বীদের হত্যা-নির্যাতন, প্রতিমা-মন্দির ভাঙচুর, বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ ও লুণ্ঠনের ষড়যন্ত্রের মূল রহস্য উদ্‌ঘাটনে একটি নিরপেক্ষ তদন্ত কমিশন গঠন; সংখ্যালঘুদের ওপর সহিংসতার সব মামলা দ্রুত বিচার আইনে ও সর্বোচ্চ ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করা; সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় আক্রান্ত সবাইকে ন্যায্য ক্ষতিপূরণ দেওয়া; রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহার নিষিদ্ধ করা এবং জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন ও সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন৷

সামাজিক আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক সালেহ আহমেদের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন, সংগঠনের নেতা হারুনার রশীদ ভূঁইয়া, জয়ন্তী রায় ও বেলায়েত হোসেন, জাতীয় শ্রমিক জোটের কার্যকরী সভাপতি আবদুল ওয়াহেদ, আদিবাসী অধিকার আন্দোলনের নেতা অনন্ত ধামাই, শ্রমিকনেতা শামসুল আলম, গণবিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নেতা মিজানুর রহমান, গৌরব ৭১-এর সাধারণ সম্পাদক এফ এম শাহীন প্রমুখ৷