রহমত ডেস্ক 05 June, 2022 02:21 PM
সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোর ধ্বংসস্তূপ থেকে ফায়ার ফাইটারসহ ৩৭ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ১৩৫ জন আহত হয়ে চমেকে ভর্তি আছেন। চট্টগ্রামের অন্যান্য হাসপাতালে আরও শতাধিক চিকিৎসা নিচ্ছেন। আজ (৫ জুন) রবিবার বেলা ১১টায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আলাউদ্দিন তালকুদার।
নিহতদের মধ্যে ৯ জনের নাম জানা গেছে। তারা হলেন, কুমিল্লা ফায়ার সার্ভিসের কর্মী মনিরুজ্জামান, ভোলা দক্ষিণ বালিয়ারার হাবিবুর রহমান, বাঁশখালীর রবিউল আলম, মুমিনুল হক, মহিউদ্দিন, তোফায়েল আহমেদ, নোয়াখালীর চাটখিলের আলাউদ্দিন, মো. সুমন ও যশোরের ইব্রাহীম হোসেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন দুই শাতধিক। আগুনে দগ্ধদের চমেকসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
রবিবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাইন উদ্দিন বলেন, আগুন লাগার খবর পাওয়ার পর রাত থেকে আমরা এখানে কাজ করছি। লাশের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। অগ্নিকাণ্ডের পর থেকে মালিকপক্ষের কাউকে পাচ্ছি না। মালিকদের পেলে আমরা জানতে পারতাম কোন কনটেইনারে কী আছে। এটা আমাদের জানা নেই। এজন্য উদ্ধার কাজে আমাদের বেগ পেতে হচ্ছে। আমরা এখনো ভেতরে পুরোপুরি প্রবেশ করতে পারছি না। এ ঘটনায় ফায়ারের পক্ষ থেকে পাঁচ সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ার কোরের বিশেষ টিম কাজ করছে। কনটেইনারগুলোতে যেহেতু কেমিক্যাল আছে, সেজন্য ঢাকা থেকে ফায়ারের ২০ সদস্যের হেজবোর্ড টিম আনা হচ্ছে। তারা বিদেশ থেকে বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত।
শনিবার (৪ জুন) রাত সাড়ে ৯টার দিকে সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী এলাকার বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, এ দুর্ঘটনায় ৩৭ জন নিহত ও দুই শতাধিক আহত হয়েছেন। আহতদের চট্টগ্রাম মেডিকেলসহ আশপাশের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনার পর ফায়ার সার্ভিসের ১৫টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। পরবর্তী সময়ে ইউনিট আরও বাড়ানো হয়। ফায়ার সার্ভিসের ২৫টি ইউনিটের ১৮৩ কর্মী আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। এছাড়া নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষ্মীপুর ও কুমিল্লাসহ আশপাশের বিভিন্ন জেলা থেকেও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা আগুন নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে কাজ করছেন।
কনটেইনার থেকে আগুনের সূত্রপাত : সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী এলাকার বিএম কনটেইনার ২৪ একর জায়গাজুড়ে অবস্থিত। প্রতিষ্ঠানটি মূলত পণ্য রপ্তানিতে কাজ করে। এখান থেকে পণ্য রপ্তানির জন্য কনটেইনারগুলো প্রস্তুত করে চট্টগ্রাম বন্দরে পাঠানো হয়। ৩৮ ধরনের পণ্য রপ্তানিতে কাজ করে প্রতিষ্ঠানটি। ঘটনার সময় সেখানে ৫০ হাজার কনটেইনার ছিল বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। অগ্নিকাণ্ডের সময় অন্তত ২০০ শ্রমিক সেখানে কাজ করছিলেন বলেও জানা গেছে। তবে সেখানে ঠিক কত সংখ্যক মানুষ তখন ছিলেন তা এখনো সঠিকভাবে জানা যায়নি।