রহমত ডেস্ক 18 April, 2022 04:09 PM
নির্বাচন কমিশনের সংলাপে অংশ নিয়ে এটিএন বাংলার প্রধান নির্বাহী সম্পাদক জ.ই মামুন বলেছেন, আপনারা অনেকেই বলেছেন রাতে তো নির্বাচন হয় না। আসলে রাতে ব্যালট পেপার দিয়ে ভোটের বাক্স ভরে রাখা হয়েছিল। পরের দিন ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। বাংলাদেশের কোনো নির্বাচন কমিশনই সমালোচনার ঊর্ধ্বে নয়। সবাই বলেছেন, যারা পরাজিত হোন তারা নির্বাচনের সমালোচনা করেন। কিন্তু আপনারা অনেকেই বলেছেন, রাতে তো নির্বাচন হয় না। আসলে রাতে ভোটের বাক্স ভরে রাখা হয়েছিল ব্যালট পেপার দিয়ে। ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে পরের দিন। এগুলোই ঘটেছে বাংলাদেশে। আমরা এই কথাগুলো জেনেশুনেও বলি না, কারণ আমরা বলতে ভয় পাই, লিখতে ভয় পাই।
আজ (১৮ এপ্রিল) সোমবার বেলা ১১টা ৮ মিনিটে রাজধানীর আগারগাওঁয়ে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার-সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংলাপে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। বিভিন্ন ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রধান নির্বাহীসহ জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকদের নিয়ে ইসির চতুর্থ ধাপের সংলাপ শুরু হয়। এর আগে, শিক্ষাবিদ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও প্রিন্ট মিডিয়ার সম্পাদক ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকদের সঙ্গে তিন দফায় বৈঠক করে ইসি।
জ.ই মামুন বলেন, আমরা চাই এমন একটি নির্বাচন হোক, যেখানে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ অংশগ্রহণ করবে। রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্বাচন আনা কমিশনের এখতিয়ারের মধ্যে পড়ে কিনা আমি জানি না। সাংবাদিকদের সঙ্গে সংলাপ করার বিষয়টি আরপিও’তে নেই। আমরা জানি আপনাদের উদ্দেশ্য মহৎ এবং ভালো। আপনারা চান একটি ভালো নির্বাচন হোক। আপনারা চেষ্টা করবেন বিএনপি যাতে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারে। সেরকম একটি আস্থার পরিবেশ তৈরি করতে হবে। বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা কতখানি তা আমরা সবাই জানি। কিন্তু এখন আমার স্বাধীনতা আর নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা যদি এক রকম হয় তাহলে আমাদের এখানে ডাকার কোনো মানে হয় না। আমি মনে করি নির্বাচন কমিশন আমার চাইতে স্বাধীন। নির্বাচন কমিশন যদি স্বাধীনভাবে কথা বলতে চায়, স্বাধীনভাবে কাজ করতে চায় তাহলে তাদের পক্ষে অনেক কিছু করা সম্ভব। একটি সুষ্ঠু নির্বাচন করার জন্য গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ যথেষ্ট। নির্বাচন কমিশনের মেরুদণ্ড শক্ত থাকলে সরকারের খুব বেশি কিছু করার ক্ষমতা থাকে না। আপনারা চাইলেই সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারবেন। বাংলাদেশের মানুষ, গণমাধ্যম আপনাদের সহায়তা করবে।
তিনি বলেন, আজকে সংলাপে আমার সহকর্মী, বন্ধু, ভাইদের বক্তব্য শুনে মনে হচ্ছিল, আমি কোন পলিটিক্যাল প্রোগ্রামে আসলাম নাকি। এখানে বিএনপির বক্তব্য হচ্ছে, আওয়ামী লীগের বক্তব্য হচ্ছে। গণমাধ্যমেও এই ধরনের বিভক্তি আছে। আপনারা নিশ্চিয় সেটি আগের থেকে জানেন, এখন আরও ভালোভাবে জানতে পারবেন। কিন্তু আমাদের মধ্যে বিভক্তি থাকবে, তবে আপনাদের মধ্যে যেন বিভক্তি না থাকে। বিগত অনেকগুলো কমিশন আমরা দেখেছি নির্বাচন কমিশন আসলে এক ব্যক্তি কেন্দ্রিক হয়ে ওঠে। প্রধান নির্বাচন কমিশন কেন্দ্রিক। সেটি কিন্তু নয়, সাংবিধানিকভাবে আপনারা পাঁচজনই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করবেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার অথবা যেকোন একজন কথা বলতে পারবেন। কিন্তু এটি যেন প্রধান নির্বাচন কমিশনের কমিশন না হয়।
তিনি আরো বলেন, এর আগের কমিশনও আমাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছিল। আমরা সেখানে অনেক মতামত দিয়েছিলাম। কিন্তু সেই সংলাপে মতামত দিয়ে কি হলো বা কি ফলাফল হলো সেগুলো আমরা কেউ জানতে পারিনি। আপনারা বছরে একবার গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করুন। তাহলে আমরা রিভিউ করতে পারবো গত এক বছরে আপনারা কী করলেন, আমরা কী বলেছিলাম। এছাড়া, আমার মনে হয়, নির্বাচন কমিশনের প্রধান কাজ নির্বাচন করা। রাজনৈতিক দলগুলোর বিভক্তি সৃষ্টি করা এটা কোনো কোনো নির্বাচন নির্বাচন কমিশন আধিষ্ট হয়ে করেছেন। আপনাদের আগামী জাতীয় নির্বাচনের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। মানুষের প্রত্যাশা আপনাদের কাছে, সুষ্ঠু এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন। আপনারা মানুষের প্রত্যাশা পূরণে সচেষ্ট থাকবেন।