মূল পাতা শিক্ষাঙ্গন যৌন হয়রানির অভিযোগে জাবি শিক্ষককে মারধর করলো নর্থ সাউথের শিক্ষার্থীরা
রহমত ডেস্ক 11 April, 2022 05:37 AM
যৌন হয়রানির অভিযোগে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষককে মারধর করেছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নর্থ সাউথের শিক্ষার্থীরা। সোমবার (১১ এপ্রিল) মারধরের ঘটনার ও শিক্ষকের ক্ষমা চাওয়ার ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে শিক্ষক আতিকুরকে গালাগাল দিচ্ছিলেন কিছু শিক্ষার্থী।
মারধরের শিকার ওই শিক্ষকের নাম মো. আতিকুর রহমান। তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক। পাশাপাশি তিনি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে খণ্ডকালীন শিক্ষকতা করতেন। এ ঘটনায় তাকে বরখাস্ত করেছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়টি।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন নারী শিক্ষার্থী ম্যাথ বুঝতে শিক্ষক আতিকুরের কাছে গেলে তিনি মেয়েটিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্বিদ্যালয়ে গিয়ে শিখতে বলেন। সে শিক্ষার্থী বিষয়টি এড়িয়ে গেলে আতিকুর তাকে নানাভাবে হয়রানি করতে থাকেন, মধ্যরাতে কল করেন। ছাত্রীটি টিউশনির কথা জানিয়ে এড়াতে চাইলে আতিকুর তাকে নানাভাবে জোর করতে থাকেন। আইফোন কিনে দেয়ার প্রলোভন দেখান।
পরে ওই শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধুদের ঘটনাটি জানিয়ে তাদের পরামর্শে শিক্ষক আতিকুরকে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি কফিশপে দেখা করতে বলেন। আতিকুর সেখানে গিয়ে অন্য শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি টের পেয়ে দৌড় দিলে তাকে ধাওয়া দিয়ে ধরে ফেলা হয়। এসময় তিনি ১ লাখ টাকায় বিষয়টি মীমাংসা করার প্রস্তাব দেন। শিক্ষক আতিকুরকে মারধর করে শিক্ষার্থীরা তাকে প্রক্টর অফিসে নিয়ে যায়। অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাকে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বরখাস্ত করা হয়।
মারধরের ঘটনা ও অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আতিকুর রহমান বলেন, ছাত্রীটি তার কাছে ক্লাসের বাইরে পড়া বুঝতে চেয়েছিল। তিনি তার সাথে হয়রানিমূলক কিছু করেননি। ছাত্রীর অনুরোধেই তিনি সেই কফি শপে গিয়ে মারধরের শিকার হন।
তিনি ভুক্তভোগীকে জাহাঙ্গীরনগর যেতে বলেছিলেন কি না জানতে চাইলে শিক্ষক আতিকুর বলেন, আমি দু’দিন নর্থসাউথে ক্লাস নেই। এর বাইরে বুঝতে চাইলে তিনি আমাকে জাহাঙ্গীরনগর পাবেন সে কথা বলেছি। ছাত্রীকে মাঝরাতে হয়রানি ও আইফোনের প্রলোভন দেখানোর বিষয়টি অস্বীকার করেন এ শিক্ষক।
শিক্ষার্থীদের ১ লাখ টাকা দেয়ার প্রস্তাবের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওরা আমাকে মারধর করে। মানিব্যাগে থাকা ১১/১২ হাজার টাকা ও ক্রেডিট কার্ড নিয়ে যায়। ক্যারিয়ার শেষ করার হুমকি দিয়ে ১ লাখ টাকা চায়। তখন আমি নিরুপায় হয়ে বলেছি ৫০ হাজার টাকা দিতে পারবো। তখন তাদের একজন বলে ১ লাখই দিতে হবে। আমি রাজি হলে এক পর্যায়ে সে অন্যদের তা জানায়। তখন অরেকজন শিক্ষার্থী বলেন, তাদের ৫ লাখ টাকা লাগবে। এরপর আমাকে প্রক্টর অফিসে নেয় তারা। সেখান থেকে আমাকে অব্যাহতি দিয়ে দেয়।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বক্তব্য এখনও পাওয়া যায়নি।