রহমত ডেস্ক 27 March, 2022 08:17 PM
দেশের চলমান অগ্রযাত্রায় নেতৃত্বদানের জন্য আগামী প্রজন্মকে স্কাউটিংয়ের মাধ্যমে দক্ষ মানবসম্পদে পরিণত করতে স্কাউট নেতৃবৃন্দের প্রতি আহবান জানিয়ে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ বলেছেন, নিরক্ষরতা, দারিদ্র্য ও ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশ গঠনে স্কাউটসদের বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখতে হবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ দেশের যেকোন প্রয়োজনে স্কাউট সদস্যরা দেশপ্রেমিক ও স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে আত্মনিয়োগ করবে। বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কাজের পাশাপাশি দেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা ও আর্তমানবতার সেবায় স্কাউটদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকারও প্রশংসা করেন। শিশু-কিশোর ও যুবদের মাদক, ধর্মান্ধতা, সাম্প্রদায়িকতা, সন্ত্রাসবাদের বিষবাষ্প থেকে নিরাপদ এবং দূরে রাখতে স্কাউটিং ইতিবাচক অবদান রাখতে পারে। তার বিশ্বাস স্কাউটিংই পারে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে আধুনিক, প্রগতিশীল ও সৃজনশীল করে গড়ে তুলতে।
আজ (২৭ মার্চ) রবিবার বিকালে কিশোরগঞ্জের মিঠামইনে মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হক সরকারি কলেজ মাঠে ৫দিন ব্যাপী ‘তৃতীয় জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা স্কাউট ক্যাম্প’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ স্কাউটসের সভাপতি মোঃ আবুল কালাম আজাদ, ক্যাম্প চীফ ও প্রধান জাতীয় কমিশনার ডঃ মোঃ মোজাম্মেল হক খান এবং জাতীয় কমিশনার এম এম ফজলুল হক আরিফ প্রমুখ। ৩য় জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা স্কাউট ক্যাম্প উপলক্ষে স্মারক ডাকটিকেট অবমুক্ত করেন রাষ্ট্রপতি।
স্কাউটসদের উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রপতি বলেন, সবাইকে কঠোর পরিশ্রম ও অনুশীলনের মাধ্যমে ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে স্কাউট আদর্শের প্রতিফলন ঘটাতে হবে এবং দেশের যে কোনো প্রয়োজনে একজন প্রকৃত দেশপ্রেমিক ও স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে তদের আত্মনিয়োগ করতে হবে। নতুন ও ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যাতে লেখাপড়ার পাশাপাশি মানবিক গুণাবলিসম্পন্ন মানুষ হিসেবে বেড়ে উঠতে পারে, সে ব্যাপারে স্কাউট আন্দোলন কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। বাংলাদেশকে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত করার লক্ষ্যে সরকারের যুগোপযোগী পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের কথা উল্লেখ করেন, এর ফলেই বাংলাদেশ ইতোমধ্যে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছে।
করোনা মহামারির ভয়াবহতা কমে আসলেও এখনো শেষ হয়ে যায়নি উল্লেখ করে তিনি স্কাউটসসহ সকলকে সচেতন থাকারও পরামর্শ দেন। এই স্কাউট ক্যাম্পে অংশগ্রহণ একটি কার্যকর প্রশিক্ষণের মতো উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেন, রোভার স্কাউটরা দুর্যোগে তাদের করণীয় বিষয়ে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি কমাতে দক্ষতার সাথে কাজ করতে পারবে বলে আমার বিশ্বাস। স্কাউটরা সৃষ্টিকর্তা ও দেশের প্রতি কর্তব্য পালনের পাশাপাশি সর্বদা অপরকে সাহায্য করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়ে স্কাউট আন্দোলনে অংশ নেয়, সামাজিক উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড, বৃক্ষরোপণ, পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ, জলবায়ুর উষ্ণতা রোধে জনসচেতনতা তৈরি, বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, ভবনধস ও অগ্নিকান্ডের ঘটনায় উদ্ধার কাজসহ জাতীয় দুর্যোগে স্কাউটরা সবার আগে এগিয়ে আসে। এই সেবাধর্মী কার্যক্রম ভবিষ্যতে আরো বিস্তৃতি লাভ করবে।
তিনি আরো বলেন, তোমাদের অবস্থান হবে মাদকের বিরুদ্ধে, সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে। তোমরা অন্তরে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, দেশপ্রেম, দেশের মানুষের প্রতি কর্তব্য ও মমত্ববোধ সবসময় জাগ্রত রেখে, নিজেরা ভালো কাজ করবে এবং অন্যদেরও ভালো কাজে অংশগ্রহণ করতে উৎসাহ যোগাবে। আগামী দিনে যোগ্য ও দক্ষ হয়ে জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত, উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে তোমরাই বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেবে।