রহমত ডেস্ক 08 January, 2022 09:42 PM
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, কর্তৃত্ব তারাই করে যারা কর্তা। কর্তা যারা হন তিনি হতে পারেন ঠাকুর কর্তা, পীর ফকির কর্তা বা অধ্যাপক কর্তা। যাদের হাতে কেতাব থাকে, তারাই কর্তৃত্ববাদী। আমলারা নীতিনির্ধারণের কাজগুলো করেন। বিলুপ্ত করা কঠিন কাজ। ঔপনিবেশিক শাসকরা এগুলোর বিলুপ্ত করতে পেরেছিল কারণ তাদের কোনো পার্লামেন্ট ছিল না। তারা একটা অর্ডার দিয়ে করতে পেরেছে। আমরা একটা গণতান্ত্রিক পরিবেশে আছি। কোনো কিছু বিলুপ্ত করতে হলে আমাদের কিন্তু মহান সংসদের মধ্য দিয়ে আসতে হয়। এতে করে কিছুটা সময়ক্ষেপণ হয়। আমার ধারণা বা আমি বিশ্বাস করি, আমার সরকারপ্রধান কিংবা আমার দল—আওয়ামী লীগ এর বিলুপ্তি চাই। এগুলো যতদিন থাকবে, ততদিন ভুলগুলো বয়ে বেড়াতে হবে। কারণ যেহেতু বইয়ে আছে, কেতাবে আছে, সেভাবে কাজ করেন আমলারা। এর মধ্যে অনেক ঘুরপ্যাঁচও আছে। এগুলো সংস্কার করতে চাই।
আজ (৮ জানুয়ারি) শনিবার নগরীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ-আইইবি মিলনায়তনে কৃষির টেকসই উন্নয়নে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ী প্রযুক্তির ব্যবহার শীর্ষক নেটওয়ার্কিং কনফারেন্স এবং প্রযুক্তির প্রদর্শনীর সমাপনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। আইইবির প্রেসিডেন্ট প্রকৌশলী নুরুল হুদার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন আইইবির সেক্রেটারি প্রকৌশলী মো. মিছবাহুজ্জামান চন্দন, ভাইস প্রেসিডেন্ট (অ্যাডমিন অ্যান্ড ফিন্যান্স) প্রকৌশলী খন্দকার মঞ্জুর মোর্শেদ প্রমুখ।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, পরিচালনার ক্ষেত্রে বিশেষ করে সচিবালয়ে সচিব লেভেলে, উপ-সচিব লেভেলে সব পেশার মানুষের যে সমাগম হচ্ছে আমি অভিভূত। আমি নিজেও উপ-সচিব, যুগ্ম-সচিব ছিলাম প্রায় ৩০ থেকে ২৫ বছর আগে। আমরা এখন একটা শান্তিশীল পরিবেশে আছি, বাকিটাআলোচনা করে সমাধান করবো। সমাধান যদি না করি তবে ক্ষতি হবে। জাতির বৃহত্তর স্বার্থে এগুলো সমাধান করতে হবে। আমরা বিভিন্ন পেশায় কাজ করেছি। সবাই নানা পেশায় দক্ষ। সংশ্লিষ্ট মানুষকে সংশ্লিষ্ট কাজে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। যেমন- পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী হয়েছেন ড. শামসুল আলম। তিনি সিনিয়র সচিব ছিলেন। এতে আমার মনে হয় অনেক ভালো হয়েছে। সব বিষয়ে একই ব্যক্তির কর্তৃত্ববাদী হবেন এটা ঠিক নয়।
তিনি বলেন, আমরা ক্ষুধাটাকে মোকাবিলা করতে পেরেছি। বিদ্যুৎ, স্বাস্থ্য ও খাদ্যখাতে অনেক উন্নয়ন করেছি। মোটাদাগে আমরা এসব খাতে অনেক পরিবর্তন করতে পেরেছি। শেখ হাসিনার একটানা ১২-১৩ বছর কাজ করার ফলে ত্রুটিগুলোকে ছাপিয়ে বেশি অর্জন করতে পেরেছি। মাথাপিছু আয় বেশি, প্রবৃদ্ধি বেশি, জীবনযাত্রার মান গড়ে বেশি। জীবনরক্ষায় স্বাস্থ্যখাতে আমাদের প্রধানমন্ত্রী চমৎকার কাজ করেছেন। এটা আমার কথা নয়, এটা বৈশ্বিকভাবে স্বীকৃত। সবার প্রতি অনুরোধ থাকবে, আমাদের সবাইকে ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে হবে। দেশের উন্নয়ন চাইলে প্রধানমন্ত্রীর হাতকে আরও শক্তিশালী করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, আমি কৃষকের সন্তান। নানাভাবে আমরা কৃষির সঙ্গে জড়িত। কিন্তু কৃষি নিয়ে আমার গবেষণা নেই। কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নে কাজ করে যাবে সব সময়। সততার মধ্য দিয়ে আমি দায়িত্বপালনের চেষ্টা করি। আমাদের সবার জন্য যা মঙ্গলজনক হবে, শেষ পর্যন্ত আমি তাই করবো। নিজেদের ভূমিতে আছি, সেজন্য নিজেরা আলোচনা করে সমাধান করবো। মাঝে মাঝে হোঁচট খাই, তবে শেষ বিচারে পার পেয়ে যায়। প্রধানমন্ত্রী আমাদেরসহ সারা জাতিকে পরিচালনা করেন। দেশের উন্নয়নে নানা ধরনের চিন্তা-চেতনা উনার আছে। সব কিছু উনার পক্ষেও সমাধান করা সম্ভব নয়। তারপরও পর্যায়ক্রমে তিনি সব কিছু সমাধান করবেন, এটা আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি। অনেক পরিশ্রম করে আমি উনার সঙ্গে কাজ করছি দেশের উন্নয়নে। তিনি সব পরীক্ষায় উত্তীর্ণ। করোনাকে তিনি যেভাবে মোকাবিলা করেছেন তা বিশ্বনেতারা স্বীকৃতি দিয়েছেন।