পাথরঘাটা (বরগুনা) প্রতিনিধি 12 September, 2021 09:25 PM
বরগুনার পাথরঘাটায় স্কুল মাঠ থেকে এখনো গ্যাস বের হচ্ছে। জানা যায়, জেলার সদর ইউনিয়নের রুহিতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে মাটির ভূগর্ভস্থ থেকে নিরাপদ পানির অনুসন্ধান করতে গিয়ে লেয়ার গ্যাসের বিস্ফোরণ ঘটে। এতে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ঐ স্কুল খোলা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবক, শিক্ষক ও সংশ্লিষ্টদের মধ্যে। এর মধ্যে আজ (১২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে আবারও সরেজমিনে ঘুরে স্কুল না খোলার নির্দেশ দিয়েছেন পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হোসাইন মুহাম্মদ আল-মুজাহিদ।
সারা দেশে রোববার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার ঘোষণা দেয় শিক্ষা অধিদপ্তর। এর মধ্যে শুক্রবার দুপুরে স্কুল মাঠে লেয়ার গ্যাসের বিস্ফোরণ ঘটে।
ঘটনার পরপরই পাথরঘাটা উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা গোলাম কবির, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হোসাইন মুহাম্মদ আল-মুজাহিদ, প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা টি এম শাহ্ আলম, সদর ইউপি চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদ সরেজমিনে পরিদর্শন করে এলাকা থেকে লোকজন সরিয়ে দিয়ে এলাকায় লাল নিশান টানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হোসাইন মুহাম্মদ আল-মুজাহিদ জানান, ইতিমধ্যে জ্বালানি মন্ত্রণালয়ে অফিসিয়ালভাবে অবহিত করা হয়েছে। তারা আসলে পরবর্তী কার্যক্রম জানানো যাবে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ইনস্টিটিউট অব ওয়াটার মডেলিং নামের একটি প্রতিষ্ঠান গত তিনদিন ধরে মাটির নিচের একহাজার ফিট পাইপ প্রবেশ করিয়ে নিরাপদ পানির অনুসন্ধান চালায়। এর নেতৃত্ব দেন পানি সম্পদ অধিদপ্তরের অনুসন্ধানী দল। হঠাৎ করে শুক্রবার জুমার নামাজের পর মাটির ভিতরে বিস্ফোরণ হয়। এরপর থেকে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ ফিট উপরে মাটির উঠে যাচ্ছে। ঘটনার পর থেকে এক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে মাটির কম্পন তৈরির পাশাপাশি এলাকায় বিভিন্ন পুকুর থেকেও বুদ বুদ করে গ্যাস বের হচ্ছে।
এতে এলাকা জুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে বলে জানান স্থানীয় ইউপি সদস্য খলিলুর রহমান। শুক্রবার দুপুর থেকে একই পরিস্থিতি চললেও শনিবার দুপুরের পর থেকে অনেক নিয়ন্ত্রণে বলেও জানান তিনি।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সরোয়ার হোসেন জানান, দেড় বছর পর স্কুল খোলার সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে শুক্রবার সকালেই। কিন্তু শুক্রবার দুপুরের ঘটনার পর সব উল্টাপাল্টা হয়ে গেছে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা টি এম শাহ্ আলম জানান, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে বিভাগীয় পর্যায়ে জানান হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে এই স্কুলটি কবে নাগাদ খোলা ঠিক হবে কি না তা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত ছাড়া কিছু বলা যাচ্ছে না।
স্কুলের শিক্ষার্থী তাওহীদুল ইসলাম ও তামিম জানান দেড় বছর পর স্কুল খোলার পরেও তারা স্কুলে আসতে পারবে কি পারবে না হতাশায় রয়েছে তারা। তবে মিজানুর রহমান ও বাবুল নামের দুই অভিভাবক জানান, এই পরিস্থিতিতে তাদের সন্তানদের তার স্কুলে পাঠাবেন না।
/জেআর/