রহমতটোয়েন্টিফোর ডেস্ক 05 July, 2021 12:55 PM
স্বামীর লাশ নিয়ে সারারাত শ্মশানে স্ত্রীর বসে থাকার ঘটনাটি ঘটেছে কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার পৌর শ্মশানে। জানা গেছে, ওই নারীর স্বামী শনিবার (৩ জুলাই) রাতে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তার স্বামীর নাম প্রফুল্ল কর্মকার।
দুই ছেলে, ছেলের বউ ও নাতি করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় স্বামীর লাশ বাড়িতে নিতে চেয়েও নিতে পারেননি তিনি। অগত্যা রাতেই হাসপাতাল থেকে স্বামীর লাশ অ্যাম্বুলেন্সে করে শ্মশানে নেওয়া হয়। গিয়ে দেখেন, শ্মশানের গেটে তালা ঝুলছে। হচ্ছিল বৃষ্টিও। অ্যাম্বুলেন্সের লোকজন মরদেহ রেখে চলে গেলে বৃষ্টির গতি আরও বাড়ে। তখন কল্পনা রানী স্বামীর মরদেহ সেখান থেকে সরিয়ে নেন পাশের গোপালপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বারান্দায়। সেখানেই সারারাত স্বামীর লাশ নিয়ে অপেক্ষা করেন তিনি। এ সময় কাউকে পাশে পাননি তিনি। এলাকাবাসীর কেউই এগিয়ে আসেনি। একা একা স্বামীর লাশ নিয়ে রাত কাটান কল্পনা রানী।
এ ব্যাপারে কল্পনা রানী নিজেই জানান, শনিবার রাতে আমার স্বামী মারা যান। কুষ্টিয়া হাসপাতালে তিনি মারা গেলে অ্যাম্বুলেন্সে করে তার মরদেহ শ্মশান ঘাটে নিয়ে আসি। কারণ বাড়িতে সবাই করোনা আক্রান্ত। তাই বাড়িতে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। অ্যাম্বুলেন্সের সবাই আমাকে ও আমার স্বামীর লাশ রেখে চলে যায়। তখন শ্মশানের গেটে তালা দেওয়া ছিল। প্রচণ্ড বৃষ্টি শুরু হলে আমার স্বামীর লাশ নিজে বহন করে স্কুলের বারান্দায় নিয়ে যাই। সেখানে সারারাত একাই কাটিয়েছি। আত্মীয়-স্বজন বা এলাকাবাসী কেউ আমার পাশে দাঁড়ায়নি। পরে সকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) সাহায্যে আমার স্বামীর লাশ সমাহিত করা হয়।
পরদিন রোববার (৪ জুলাই) সকালে মিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিংকন বিশ্বাস বিষয়টি জানতে পেরে লাশটি সমাহিত করার ব্যবস্থা করেন।
/জেআর/