হাওরাঞ্চল প্রতিনিধি, সুনামগঞ্জ 22 October, 2020 03:07 PM
সুনামগঞ্জের লাউড়গড় সীমান্তে কয়লা নিয়ে বিজিবি ও এলাকাবাসীর মাঝে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষের সময় ৫ রাউন্ড ফাঁকা গুলি বর্ষণ করেছে বিজিবি। প্রায় ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষের ঘটনায় নারী, শিশু ও বিজিবি সদস্যসহ ১৫জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
এঘটনার পর থেকে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এলাকাবাসী জানায়- প্রতিদিনের মতো গতকাল বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় জেলার তাহিরপুর উপজেলার লাউড়গড় সীমান্তের যাদুকাটা নদী, শাহ-আরেফিন মোকাম ও সাহিদাবাদ ইকরগড়া এলাকা দিয়ে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ভারত থেকে কয়লা পাচাঁর করে লাউড়গড় বাজার সংলগ্ন যাদুকাটা নদীর তীরে নিয়ে মজুত করে বিজিবি সোর্স পরিচয়ধারী নুরু মিয়া, আমিনুল, নাজিম উদ্দিন, জসিম মিয়া, নবীকুল ও জজ মিয়ার সংঘবদ্ধ লোকজন।
এসময় লাউড়গড় ক্যাম্পের এফএস নাঈম কয়েকজন বিজিবি সদস্যদেরকে নিয়ে সবাইকে ধাওয়া করলে সোর্স পরিচয়ধারীরা সবাই নিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যায়। এসময় সুমন মিয়া (১৪) নামের কিশোরকে ধরে বেধরক মারধর করে নদীর তীরে ফেলে রেখে যায় বিজিবি। পরে যাদুকাটা নদী তীরবর্তী বাসিন্দারা কিশোর সুমনকে উদ্ধার করে স্থানীয় পল্লী চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যায়।
সেখানে সুমনের অবস্থা আশংকাজনক দেখে সোর্স পরিচয়ধারীরা এলাকাবাসীকে ফুসলিয়ে ক্যাম্পের সামনে গিয়ে বিজিবিকে ধাওয়া করে। এসময় দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে এবং দফায় দফায় চলে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। পরে বিজিবি ৫ রাউন্ড গুলি বর্ষণ করলে সবাই পালিয়ে যায়। প্রায় ঘন্টাব্যাপী এই সংঘর্ষের ঘটনায় বিজিবির ৫ সদস্যসহ দুলাল মিয়া, আফাজ উদ্দিন,শফিকুল ইসলাম, আব্দুল জলিল, আল-আমিন, হনুফা বেগম ও জমিলা বেগমসহ ১৫ জন আহত হয়।
তাদেরকে বিশ্বম্বরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতাল ও সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে বলে জানাগেছে। আহতরা সীমান্তের লাউড়গড়, মনাইপাড় ও সাহিদাবাদ এলাকার বাসিন্দা। বিজিবির সোর্স পরিচয়ধারীরা সিন্ডিকেডের মাধ্যমে দীর্ঘদিন যাবত লাউড়গড় সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে কয়লা, কাঠ, পাথর, নাসিরউদ্দিন বিড়ি, মদ, গাঁজা, হেরুইন, ইয়াবা ও অস্ত্রসহ গরু পাচার করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে থানায় রয়েছে একাধিক মাদক ও কয়লা চোরাচালান মামলা।
এব্যাপারে জানতে লাউড়গড় বিজিবি ক্যাম্প ও সুনামগঞ্জ ২৮ ব্যাটালিয়নের বিজিবি অধিনায়ক মাকসুদুল আলমের সরকারি মোবাইল নাম্বারে বারবার কল করার পরও কেউ ফোন রিসিভ করেনি। তবে সংঘর্ষের ঘটনার পর থেকে এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। কিন্তু এই সংঘর্ষের ঘটনার প্রেক্ষিতে থানায় এখনও পর্যন্ত কোনও মামলা হয়নি বলে তাহিরপুর থানা সূত্রে জানা যায়।
-জেড
এই এলাকার অন্যান্য সংবাদ দেখতে ক্লিক করুন: