| |
               

মূল পাতা রাজনীতি ইসলামী দল সমমনা ইসলামী দলসমূহের বৈঠক; ঐক্য অটুট রাখার অঙ্গীকার


সমমনা ইসলামী দলসমূহের বৈঠক; ঐক্য অটুট রাখার অঙ্গীকার


রহমত নিউজ     07 September, 2025     09:11 PM    


সমমনা ইসলামী দলসমূহের লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে জনআকাঙ্খার প্রতিফলন ও ইসলামকে বিজয়ী করার লক্ষ্যে ইসলামপন্থীদের ঐক্য অটুট রাখার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করা হয়। একই সাথে সংস্কার ও পতিত ফ্যাসিবাদীদের বিচার দৃশ্যমান করার দাবীও জানানো হয় বৈঠক থেকে।

বৈঠকে নেতৃবৃন্দ বলেন, সম্মিলিত ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানকে ব্যর্থ করতে গভীর চক্রান্ত চলছে। আওয়ামী ফ্যাসিবাদ প্রশাসনে ঘাপটি মেরে থেকে দেশকে অকার্যকর ও অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র করছে। সকলকে সর্বাত্মক সতর্ক থাকতে হবে। রাজনৈতিক বিভাজন থাকলেও ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী পতিত শক্তির প্রেতাত্মাকে নির্মূল করতে হবে। সম্প্রতি কয়েকদিন আগে ভিপি নূরের উপর হামলার ঘটনায় দেশকে ফ্যাসিবাদমুক্ত করার লক্ষ্যে ২৪ এর জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পরেও স্বাধীনতাকামী ও দেশপ্রেমিক জনতার কণ্ঠরোধের এমন পৈশাচিক প্রয়াস আমাদেরকে ভাবিয়ে তুলেছে। যা সরকারের মদদপুষ্টে আওয়ামী দোসরদের পুনর্বাসনের চেষ্টার শামিল। কাজেই ফ্যাসিবাদের প্রধান সহযোগী জাতীয় পার্টিসহ আওয়ামী দোসরদের রাজনীতি অবিলম্বে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে। অন্যথায় জনরোষ ভয়াবহ রূপ নেবে, জনগণ রাজপথে নেমে আসতে বাধ্য হবে।

রোববার (৭সেপ্টম্বর) রবিবার রাত ৮টায় বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির পল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পার্টির সিনিয়র নায়েবে আমীর মাওলানা আব্দুল মাজেদ আতহারীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত।

নেতৃবৃন্দ বলেন, এলজিবিটি ও গানবাদ্য ঢুকিয়ে ধর্মপ্রাণ মুসলিম শিশু-কিশোরদের ইসলামী মূল্যবোধ থেকে দূরে রাখার ডি-ইসলামাইজেশন প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা পতিত আওয়ামী ফ্যাসিস্ট আমল থেকেই ছিল। আর সেই পুরোনো ইসলামবিরোধী অ্যাজেন্ডাগুলো বাস্তবায়নে নেমেছে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চেপে বসা পাশ্চাত্যের উচ্ছিষ্টভোগী কিছু সুশীল এনজিওকর্মী। সুতরাং ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা কোনোভাবেই বিধ্বংসী সিন্ধান্ত মেনে নেবে না।

বৈঠকে নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, ইসলামে বাদ্যযন্ত্রের ব্যবহার নিষিদ্ধ। তাছাড়া সংগীত কোনো মৌলিক শিক্ষার অন্তর্ভুক্ত নয়। বাংলাদেশের মতো মুসলিম-অধ্যুষিত দেশে মুসলিম অভিভাবকদের মতামত না নিয়ে তাদের ছেলেমেয়েদের প্রাথমিক শিক্ষায় সংগীত শিক্ষা চাপিয়ে দেয়ার অধিকার কোনো সরকারের নেই।

নেতৃবৃন্দ বলেন,  সম্প্রতি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত নতুন গেজেটে ধর্মীয় শিক্ষক না দিয়ে সঙ্গীত শিক্ষক নিয়োগের বিধিমালাকে ইসলামবিরোধী অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়নের অপচেষ্টার নামান্তর।

বৈঠকে বলা হয়, সম্প্রতি নুরাল পাগলার লাশ পোড়ানোর ঘটনাকে নিন্দনীয় ও অগ্রহণযোগ্য কাজ যা ইসলামে নিষিদ্ধ এবং এটি মানবিক মর্যাদার প্রশ্ন। ইসলাম-প্রদত্ত এই মর্যাদা কেড়ে নেওয়ার অধিকার কারও নেই। ফলে নুরাল পাগলার লাশ পোড়ানো নিন্দনীয় ও অগ্রহণযোগ্য কাজ। একটি অন্যায় রোধ করতে গিয়ে আরেকটি অন্যায় করার সুযোগ নেই। এবং এর ব্যর্থতার দায় পুলিশ প্রশাসনের।

নেতৃবৃন্দ বলেন, কাবার আদলে ১২ ফুট উঁচু নুরাল পাগলার মাজার ও বেদি নির্মাণ, নিজেকে ইমাম মাহাদি দাবি ও নিজস্ব কালেমার প্রচলন ইত্যাদি শরিয়তবিরোধী কর্মকাণ্ড নিয়ে অনেক দিন ধরে রাজবাড়ীর স্থানীয় ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা ক্ষুব্ধ ছিলেন। নুরাল পাগলার পরিবারকে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা নানাভাবে বোঝানোর চেষ্টা করেও বিফল হন। এমনকি নুরাল পাগলার এসব অপকর্ম রোধে একাধিকবার স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে তাঁরা বৈঠক করে স্মারকলিপি দেন এবং সংবাদ সম্মেলনও করেন। এতে তাঁদের ধৈর্যের পরিচয় পাওয়া গেলেও প্রশাসনের অসহযোগিতার কারণে একপর্যায়ে ক্ষুব্ধ স্থানীয় ধর্মপ্রাণ মুসলিম জনতা নুরাল পাগলার কথিত কাবার আদলে তৈরি কবর ভেঙে লাশ তুলে পুড়িয়ে দেয়। সুতরাং আবেগ এবং ইসলাম গুলিয়ে বিব্রতকর কোনো কাজ যেমন গ্রহণীয় নয় এবং প্রশাসনের বড় দায় রয়েছে।

বৈঠকে বৃহত্তর ঐক্যের লক্ষ্যে অন্যান্য দলগুলোর সাথে আলোচনার জন্য টিমও গঠন করা হয়।

সমমনা ইসলামী দল সমূহের লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ ইউনুস আহমদ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির মহাসচিব মাওলানা মুসা বিন ইযহার, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের নায়েবে আমির মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, মহাসচিব মাওলানা ইউসুফ সাদেক হক্কানী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, খেলাফত মজলিসের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসেন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা তোফাজ্জল হোসেন মিয়াজী, খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক মুহাম্মদ আব্দুল জলীল।