রহমত নিউজ 26 November, 2024 01:04 PM
আলেম, রাজনীতিবিদ ও আধ্যাত্মিক ব্যক্তিত্ব মাওলানা আতহার আলী রহমাতুল্লাহি আলাইহিকে বাদ দিয়ে এদেশের ইতিহাস হতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট গঠন এবং সেই নির্বাচনে জাতীয় চার নেতার একজন ছিলেন আতহার আলী (রহ.)। বিগত দিনে তাকে ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার ষড়যন্ত্র হয়েছে বলে অভিযোগ করেন ধর্ম উপদেষ্টা।
সোমবার (২৫ নভেম্বর) বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের শফিউর রহমান অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত মুজাহিদে মিল্লাত মাওলানা আতহার আলী (রহ.)-এর স্মরণে আলোচনা সভা ও গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মাকতাবাতুল আযহার থেকে প্রকাশিত এই জীবনীগ্রন্থের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দেশের শীর্ষস্থানীয় লেখক, ইসলামি স্কলার ও উলামায়ে কেরাম। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কিশোরগঞ্জের আল জামিয়াতুল ইমদাদিয়ার প্রিন্সিপাল মাওলানা শাব্বির আহমাদ রশিদ।
মাওলানা আতহার আলী (রহ.)-এর রাজনৈতিক ঐতিহ্যের কথা তুলে ধরে ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, তার ডায়নামিক নেতৃত্বের কারণে ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্টে তার দল নেজামে ইসলাম পার্টি থেকে ৩৬ জন প্রাদেশিক পরিষদে নির্বাচিত হয়েছিলেন। এটা তার নেতৃত্বের সুফল। মাওলানা আতহার আলী (রহ.)-এর মতো ব্যক্তিরা চলে যাওয়ায় আজ নেতৃত্বের সংকট সৃষ্টি হয়েছে। তাদের মতো লোক আর এখন তৈরি হয় না।
ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, আমাদের জাতীয় ইতিহাসে মাওলানা আতহার আলী (রহ.)-এর ওপর রচিত বই পথ দেখাবে। এই বই ছাড়া স্বাধীনতার ইতিহাস পূর্ণাঙ্গ হবে না। এই দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, আলেখ্য এই বইয়ে আছে। বইটি আমাদের ইতিহাসে নতুন মাত্রা যোগ করবে।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, আতহার আলী (রহ.) ছিলেন একজন অ্যাকটিভ পলিটিশিয়ান। তার বহুমাত্রিকতা আমাদের অবাক করে। আইয়ুব খান, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের সঙ্গে তিনি রাজনীতি করেছেন। এরপরও মাদরাসার মুহতামিম ছিলেন, মসজিদের ইমাম ছিলেন। ছিলেন খানকার পীর। এখনও বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের যে ইতিহাস পড়ানো হয় সেখানে আতহার আলী (রহ.)-এর ভূমিকার কথা রয়েছে।
খালিদ হোসেন বলেন, আতহার আলী সাহেবকে বাদ দিয়ে এদেশের ইতিহাস তৈরি হতে পারে না। তবে অতীতে তার অবদানকে ইতিহাসে খাটো করে দেখানো হয়েছে। আমরা আগামীতে যে ইতিহাস তৈরি করব সেখানে তার ভূমিকা সত্যিকার অর্থে তুলে ধরব।
এ সময় তিনি বইটির রচয়িতা শায়খুল হাদিস মাওলানা শফিকুর রহমান জালালাবাদীকে অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা জানান। মাওলানা আতহার আলী (রহ.)-এর ওপর গবেষণা অব্যাহত থাকে সে ব্যাপারে তরুণ গবেষকদের প্রতি আহ্বান জানান ধর্ম উপদেষ্টা।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন মাওলানা এমদাদুল্লাহ, মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা ফয়জুদ্দীন, মাওলানা নাজির আহমদ, মাওলানা শরীফ মুহাম্মদ, মাওলানা যাইনুল আবিদীন, মাওলানা ওবায়দুল্লাহ আযহারী, মাওলানা মিজানুর রহমান, মাওলানা আতীক উল্লাহ, মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, মাওলানা আবদুস সাত্তার বাজিতপুরী, মাওলানা মুহাম্মাদ বিন হাফেজ্জী, মাওলানা শওকত সরকার, মাওলানা মুসা বিন ইজহার, মাওলানা রুহুল আমীন সাদী, মুফতি এনায়েতুল্লাহ, মাওলানা আব্দুর রহীম, মাওলানা জাকারিয়া আমিনী, মাওলানা রেজাউল করীম আবরার, মাওলানা জুবাইর আহমদ আশরাফ, মাওলানা আবদুল্লাহ আল ফারুক, জহির উদ্দিন বাবর, মুফতি হুমায়ুন আইয়ুব, মাওলানা যুবাইর আহমদ প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন মাওলানা গাজী সানাউল্লাহ রাহমানী।