রহমত নিউজ 27 August, 2024 05:50 PM
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে হত্যার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আরও তিনটি হত্যা মামলা হয়েছে।
রাজধানীর ডেমরার সানারপাড়ে মিরাজ হোসেন, মোহাম্মদপুরের বসিলায় মনসুর মিয়া এবং মিরপুরে নাহিদুলকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে এসব মামলা হয়।
এ তিন মামলা এজাহার হিসেবে গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট থানাকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এসব মামলায় শেখ হাসিনাসহ আসামি ১৫৫ জন।
মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বেলাল হোসেনের আদালতে মিরাজ হোসেনকে হত্যার অভিযোগে ৯২ জনকে আসামি করে মামলা করেন খোরশেদ আলম মিয়া। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে ডেমরা থানা পুলিশকে এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন।
এ মামলায় শেখ হাসিনা ছাড়া উল্লেখ্যযোগ্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান, সাবেক ডিএমপি ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদ, ডিএমপির সাবেক যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার প্রমুখ।
মিরাজ হত্যা মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ৫ আগস্ট মিরাজ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেন। ডেমরার সানারপাড় মেইন রোডে আসলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও র্যাবের সঙ্গে আওয়ামী লীগ, পেশাজীবীরা ও অন্যান্য নেতাকর্মী, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, কৃষকলীগের কয়েকশ জন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন ও আক্রমণ করেন। তারা গুলি চালাতে থাকেন। এতে মিরাজসহ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হন। পরে তাকে মিটফোর্ড হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে, একইদিনে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরীর আদালতে ২২ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা হয়েছে। মোহাম্মদপুরের বসিলায় বুড়িগঙ্গা ফিলিং স্টেশনের মেশিন অপারেটর মনসুর মিয়া নিহতের ঘটনায় তার ভাই আয়নাল হক এ মামলা করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে অভিযোগটি মোহাম্মদপুর থানা পুলিশকে এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন।
এ মামলায় শেখ হাসিনা ছাড়া উল্লেখ্যযোগ্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম, সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক সংসদ সদস্য সাদেক খান, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান, সাবেক ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদ, ডিএমপির সাবেক যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার প্রমুখ।
মনসুর হত্যা মামলার অভিযোগে বলা হয়, কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় গত ১৯ জুলাই মনসুর মিয়া মোহাম্মদপুরের বসিলা ব্রিজ এলাকায় তার সন্তানকে মাদরাসা থেকে আনতে যাচ্ছিলেন। পথে গুলিবিদ্ধ হন তিনি। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এছাড়া ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসানের আদালতে শেখ হাসিনাসহ ৪১ জনকে আসামি করে আরও একটি মামলা করা হয়েছে। রাজধানীর মিরপুরে নাহিদুল ইসলাম নিহতের ঘটনায় তার ভাই সবুজ এ হত্যা মামলা করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে অভিযোগটি মিরপুর থানা পুলিশকে এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন।
মামলায় শেখ হাসিনা ছাড়া উল্লেখ্যযোগ্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, ডিএসসিসির সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ প্রমুখ।
নাহিদুল হত্যা মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ১৯ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে মিরপুরে নাহিদুলকে গুলি করে হত্যা করা হয়। হত্যার নির্দেশদাতা হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাম উল্লেখ করা হয়।