রহমত নিউজ 02 February, 2024 06:11 AM
‘বর্তমান শিক্ষাক্রম ও মুসলিম জাতিসত্ত্বার স্বকীয়তা সমুন্নত রাখার অপরিহার্যতা’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারী) রাজধানীর সেগুনবাগিচাস্থ রিপোর্টার্স ইউনিটিতে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের আয়োজনে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
এতে আলোচকগণ বলেন, শিক্ষা যেকোনো জাতির জাতিসত্ত্বার রক্ষাকবচ, শিক্ষা প্রত্যেক জাতির মূলভিত্তি। আমরা মুসলিম জাতি, তাই আমাদের জাতীয় শিক্ষানীতি এবং শিক্ষা কারিকুলামও হওয়া চাই আমাদের জাতিসত্ত্বার মানদণ্ডে। এর বাইরে একজন প্রকৃত মুসলিমের ভিন্ন কিছু ভাবার কোন অবকাশ নেই। দুর্ভাগ্যবশত বাংলাদেশের মত একটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যবইয়ে ট্রান্সজেন্ডার ও বিবর্তনবাদসহ এমন কিছু বিষয়াদিকে প্রমোট করা হয়েছে যা সম্পূর্ণ রূপে ইমান ও ইসলামী বোধবিশ্বাসপরিপন্থী। স্বাভাবিক কারণে বিতর্কিত এই শিক্ষনীতি ও শিক্ষা কারিকুলাম বাতিলে গড়িমসি করার কোন সুযোগ নেই। সরকারকে দ্রুত এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
দলের সহ-সভাপতি মাওলানা আবদুর রব ইউসুফীর সভাপতিত্বে ও প্রচার সম্পাদক মাওলানা জয়নুল আবেদীনের সঞ্চালনায় সেমিনারে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন দলের মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী।
সেমিনারে বক্তব্য রাখেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সহ-সভাপতি মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস কাসেমী, খেলাফত মজলিসের মহাসচি ড. আহমদ আবদুল কাদের, নায়েবে আমীর মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মাওলানা আজীজুল হক ইসলামবাদী, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্মমহাসচিব মাওলানা তোফাজ্জল হোসাইন মিয়াজী, ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের অর্থ সম্পাদক মাওলানা ফারুক আহমদ, জমিয়তের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি আফজাল হোসাইন রহমানী, মুফতি বশীরুল হাসান খাদিমানী, মুফতি মাহবুবুল আলম প্রমুখ।
সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা আবদুর রব ইউসুফী বলেছেন, কোনো মুসলিম দেশের পাঠ্যবইয়ে এ রকম ঈমানবিরোধী বিষয়াবলী থাকতে পারে না। সরকার যদি এই কারিকুলাম বাতিল না করে তাহলে আমরা বাধ্য হব আন্দোলনে নামতে।
খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আব্দুল কাদের বলেছেন, ভারতমুখী শিক্ষানীতি ও শিক্ষাক্রম বাংলাদেশে চলতে পারে না, এই শিক্ষা কারিকুলামে আগামী প্রজন্মের ধর্মীয় চেতনা ধ্বংস করার চক্রান্ত করা হয়েছে। আমাদেরকে সম্মিলিতভাবে এই অপতৎপরতা রুখে দিতে হবে।
সেমিনারে উপস্থাপিত প্রবন্ধে বর্তমান পাঠ্যবইয়ের ঈমান ও ইসলামী ভাবধারাবিরোধী বিষয়গুলো তুলে ধরে ৮ দফা প্রস্তাবনা পেশ করা হয়।
প্রস্তাবনাগুলো হল-
১. যেহেতু ২০১০ সালের প্রণীত জাতীয় শিক্ষানীতির প্রভাবেই আজকের এই বিতর্কিত শিক্ষা কারিকুলাম,তাই উক্ত শিক্ষানীতি বাতিল করে একটি মুসলিম দেশের ধর্মীয় ভাবধারার আলোকে নতুন রূপে জাতীয় শিক্ষানীতি প্রণয়ন করা।
২.বর্তমান পাঠ্যপুস্তক থেকে বিতর্কিত ও ইসলামবিরোধী সকল বিষয় ও আলোচনা বাদ দেওয়া।
৩. জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডে একাধিক বিশেষজ্ঞ আলেম ও ইসলামী স্কলারকে যুক্ত করা।
৪. শিক্ষার সর্বস্তরে ধর্মশিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করা এবং মাধ্যমিক স্তরে পাবলিক পরীক্ষায় ধর্মশিক্ষাকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা।
৫. পাঠ্যপুস্তকে ভিনদেশী সংস্কৃতিকে প্রমোট করার মানসিকতা পরিপূর্ণ রূপে পরিহার করা।
৬. শিক্ষার্থীদের সুপ্ত প্রতিভা বিকাশে বিজ্ঞ ও প্রাজ্ঞ ব্যক্তিবর্গ দ্বারা শিক্ষক প্রশিক্ষণকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া।
৭. শিশু ও কিশোর শিক্ষার্থীদের চারিত্রিক বিপর্যয় রোধে তাদেরকে অনলাইনমুখী না করে পাঠ্যবইমুখী করা।
৮.সরকারী-বেসরকারী সকল স্কুল,কলেজ ও বিশ্বিদ্যালয়ে মুসলিম নারী শিক্ষার্থীদের পর্দার সাথে শিক্ষা গ্রহণে কোন প্রকার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না করা।