| |
               

মূল পাতা রাজনীতি ইসলামী দল গোলটেবিল বৈঠকে নির্বাচন বর্জনের আহ্বান


গোলটেবিল বৈঠকে নির্বাচন বর্জনের আহ্বান


রহমত নিউজ     05 January, 2024     07:38 PM    


একতরফা প্রহসনের নির্বাচন, জনগণের করণীয় শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস। শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) বিকেলে পুরানা পল্টনস্থ দারুল খিলাফাহ মিলনায়তনে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। 

সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ ও যুগ্মমহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমীনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত গোলটেবিল বৈঠকে বক্তব্য রাখেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, জমিয়তে উলামায়ে ইসলমের সহ-সভাপতি মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফী, গণ-ফোরাম এর সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি সাধারণ সম্পাদক কমরেড সাইফুল হক, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী, খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমীর মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন-এনডিএম এর চেয়ারম্যান ববী হাজ্জাজ, গণ-অধিকার পরিষদ বাংলাদেশের সভাপতি নুরুল হক নুর (সাবেক ভিপি), আমার বাংলাদেশ পার্টি-এবি পার্টির সদস্য সচিব মুজিবুর রহমান মঞ্জু, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের মহাসচিব কাজী আবুল খায়ের ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্মমহাসচিব মাওলানা আতাউর রহমান ।

বৈঠকে নেতৃবৃন্দ বলেছেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন একতরফা প্রহসনের নির্বাচন দেশের জনগণের কর্তব্য তা বর্জন করা। আজ দেশের স্বাধীনতা ও স্বার্বোভৌম হুমকির সম্মুখীন। একটি অর্থব নির্বাচন কমিশন সরকারে রোড ম্যাপে ৭ জানুয়ারির নির্বাচন করছে। এ নির্বাচন করে দেশকে মহাসংকটের দিকে ধাবিত করা হয়েছে। দেশের জনগণ ও অধিকাংশ দল নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন চেয়েছিলো। কিন্তু কারো কথায় কর্ণপাত না করে একতরফা নির্বাচন করছে। এ নির্বাচন বাতিল করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিলে সরকার ও দেশের জন্য কল্যাণকর হবে।

নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, নির্বাচনে কে জিতবে এটাতো আগেই তালিকা হয়েগেছে। দেশের অর্থ খরচ করে এধরণের তামাশার নির্বাচনের কোনো প্রয়োজন নেই। তিনি বলেন, শিক্ষা ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করা হয়েছে। আগামী প্রজন্মকে ঈমানহারা করতে পাঠ্য বইয়ে হিন্দুয়ানী সংস্কৃতি ও শিক্ষা সংযুক্ত করা হযেছে। বর্তমান শিক্ষা সিলেবাসে বিতর্কিত ও ইসলাম বিরোধী শিক্ষা বাতিল করতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের ভারপ্রাপ্ত মহাসিচব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ বলেন, দেশ আজ মহাসংকটে। মানুষ ৩ বেলা খেতে পারে না। বিচার, প্রশাসনসহ সকল বিভাগ এক ব্যক্তির অধীনে চলে। দেশের রিজার্ভ কমেগেছে। রফতনির খতে আয় কমেগেছে। দেে নিরব দুর্ভিক্ষ চলছে ঠিক এ মুহূর্তে জনগণের ট্যাক্সের টাকা দিয়ে ভাগ বাটাওয়ারার নির্বচন করার মানেটা কী? এ সরকার দেশ ও জনগণের শত্রু। তিনি জনগণের প্রতি ভাগ বাটাওয়ার নির্বাচন বর্জন করার আহ্বান জানান। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হকসহ অনেক রাজনৈতিক নেতা ও কর্মী এবং সমর্থক সরকারের প্রতিহিংসার শিকার হয়ে কারগারে বন্দি রয়েছেন এবং রাজনৈতিক ভিন্নতার কারণে বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। অবিলম্বে মাওলানা মামুনুল হকসহ রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও কর্মী সমর্থকদের মুক্তি দিতে হবে। অন্যথায় পরিণতি ভালো হবে না। 

গোলটেবিল বৈঠকে নগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ২০১৪ ও ২০১৮ এবং ২৪ সালের নির্বাচনের মধ্যে প্রার্থক্য ১৪ সালে জঙ্গিবাদ দমনের নামে প্রহসনের নির্বাচন করে বিশ্ব নেতৃবৃন্দকে ধোকা দেওয়া হয়েছে। ১৮ সালে দিনের ভোট আগের রাতে হয়েগেছে। এবারের প্রহসনের বিরুদ্ধে ৪৫ টি দল যুগপথ আন্দোলন করছে। তিনি বলেন, অর্থনৈতিক যে দুর্ভিক্ষ আসবে তা ঠেকানো যাবে না। এ সরকারের পদত্যাগে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সহ-সভাপতি মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফী বলেন,  ভোটের নামে দেশ ও জাতির সাথে প্রহসন করা হচ্ছে এর যথাযথ জবাব দিতে আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। যারা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছে তাদের মধ্যে এমন কোনো দল নেই, যারা সরকারের সাথে আতাত করেনি। সুতরাং আতাতের এ নির্বাচন প্রত্যক্ষান করতে হবে।

গণ-ফোরাম এর সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেন, ইসলামী বইয়ে দুর্গার ছবি দিয়ে সরকার নতুন ইসু তৈরি করেছে। শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করা হয়েছে। এরশাদের চেয়ে চরম বিশ্ব বেহায়া শেখ হাসিনা। জনগণ তার থেকে মুক্তি চায় ১৮ কোটি মানুষকে বার বার বোকা বানানো হচ্ছে। মোদির পলিসি বাংলাদেশে বাস্তবায়ন করে দেশ ধ্বংস করা হট্ঠে। ৭ জনুয়রি তার পতন দিবস পালন করতে হবে।

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি সাধারণ সম্পাদক কমরেড সাইফুল হক বলেন, আমাদের আদর্শ ও রাজনৈতিক প্রর্থক্য থাকলেও আমরা আজ ঐক্যবদ্ধ। বাড়িতে ডাকাত ঢুকলে পাড়া প্রতিবেশি একসাথে হয়ে উদ্ধার করতে হয়। তেমনি এ সরকারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ মাঠে নামতে হবে। দেশ স্বাধীন হয়েছিলো ভোটাধিকার হরণ করাকে কেন্দ্র করে। সরকার জনগণের ভোটের অধিকার হরণ করছে। জনগণের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে কোনো স্বৈরাচার টিকে থাকতে পারবে না।

বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক আন্দোলনের এর চেয়ারম্যান ববী হাজ্জাজ বলেন, এ আন্দোলন কেবল নির্বাচন প্রতিহত করার আন্দোলন নয়। দেশের অর্থনীতিকে উদ্ধার করার আন্দোলন। দেশের টাকা লুটপাট করা হচ্ছে। সরকারের পক্ষে ৩ ভাগ ভোটও পড়বে না। 

জমিয়তে উলমায়ে ইসলামের মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, সরকারী অনুদান ও ভাতা বন্ধের হুমকি দিয়ে ভোট দানে বধ্য করা হচ্ছে। ভোটাধিকার অক্ষুন্ন রাখা মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম দাবী। সুতরাং প্রহসনের নির্বাচন করে পার পাওয়া যাবে না।

খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমীর মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী বলেন, রাস্ট্রের সকল সেক্টর ব্যবহার করে প্রহসনের নির্বাচনের ফজিলত বর্ণনা করা হচ্ছে। ভারতীয় আধিপত্যবদ থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।

গণ-অধিকার পরিষদ বাংলাদেশের সভাপতি নুরুল হক নুর (সাবেক ভিপি) বলেন,  একতরফা ডামী নির্বাচনকারীরা জাতির শত্রু তাদের সহযোগিরাও জাতির শত্রু। ভাগ ভাটোয়ারার নির্বাচন প্রত্যখ্যান করে ঈমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। মামুনুল হকের মতো লোকদের ইজ্জত হরণ  করে জেলখানায় বন্দি করা হয়েছে। মদীনার সনদের কথা বলে জনগণকে ধোকা দেওয়া হয়েছে।

আমার বাংলাদেশ পার্টি-এবি পার্টির সদস্য সচিব মুজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, করোনার সময় আমরা যেভাবে লকডাউন পালন করেছে ৭ জানুয়ারিও আমাদের লকডাউন পালন করতে হবে। পৃথিবীর ইতিহাসে স্বৈরশাসক ও জুলুমবাজদের নিকৃষ্ট পরিণতি বহন করতে হয়েছে।

বাংলাদেশ মুসলিম লীগের মহাসচিব কাজী আবুল খায়ের বলেন,  জাতীয় জীবন চরম সংকটময় মুহূর্ত অতিক্রম করছে বাংলদেশ। দলীয় সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। ৭৫ সালের বাকশালীয় কায়দায় এগিয়ে চলছে দেশ। ২৪ সালের নির্বাচন বাকশালেরই প্রতিচ্ছবি। ৯৭ ভাগ মানুষ প্রহসনের নির্বাচন বর্জন করছে।

 ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, একদলীয় প্রার্থীদের মাঝে প্রতিদন্ধিতা হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দলীয় ক্যাডার বাহিনীর মতো ব্যবহার করা হচ্ছে। দলীয় ক্যাডার বাহিনীর হাতে পুলিশের মতো অস্ত্র দেওয়া হয়েছে।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা কোরবান আলী কাসেমী, মুফতি শরাফত হোসাইন, মাওলানা তোফাজ্জল হোসাইন মিয়াজী, কেন্দ্রীয় অফিস ও সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুর রহমান হেলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা এনামুল হক মুসা, মাওলানা আবুল হাসানাত জালালী, মাওলানা মুহাম্মদ ফয়সাল, মাওলানা  মাওলানা আবু সাঈদ নোমান, প্রকাশনা সম্পাদক মাওলানা হারুনুর রশীদ ভূইয়া, সহ-সমাজকল্যাণ সম্পাদক মাওলানা শরীফ হোসাইন, সহ-বায়তুলমাল সম্পাদক মাওলানা ফজলুর রহমান,  নির্বাহী সদস্য মাওলানা রুহুল আমীন খান, মাওলানা আব্দুল মুমিন, মাওলানা হেদায়াতুল্লাহ হাদী, ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি মুফতি হাবীবুর রহমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সাধারণ সম্পাদক মাওলানা ছানাউল্লাহ আমিনী  প্রমুখ।