রহমত নিউজ 11 September, 2023 11:01 AM
খাদ্যপণ্যের দাম বাড়ায় দেশে খাদ্য মূল্যস্ফীতি হঠাৎ করে অনেক বেড়ে গেছে। গত আগস্টে সার্বিক খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছে ১২ দশমিক ৫৪ শতাংশ। গ্রাম ও শহরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি এখন ১২ শতাংশের বেশি। এর মধ্যে শহরের চেয়ে গ্রামে মূল্য বৃদ্ধির চাপ আরো বেশি।
রবিবার (৯ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) মূল্যস্ফীতির হালনাগাদ যে তথ্য প্রকাশ করেছে, তাতে মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
তথ্য বলছে, আগস্টে সার্বিক মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৯২ শতাংশ। মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৯২ শতাংশ হওয়ার মানে হলো, ২০২২ সালে আগস্টে একজন মানুষ যে পণ্য ও সেবা ১০০ টাকায় কিনতেন, চলতি বছরের আগস্টে একই পণ্য কিনতে তার খরচ হয়েছে ১০৯ টাকা ৯২ পয়সা। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে খরচ বেড়েছে ৯ টাকা ৯২ পয়সা। এর আগের দুই মাস জুন ও জুলাইতে দেশে মূল্যস্ফীতি সামান্য কমেছিল। জুলাইয়ে মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৬৯ শতাংশ। আর জুনে ছিল ৯ দশমিক ৭৪ শতাংশ। তবে গত মে মাসে দেশে মূল্যস্ফীতি হয়েছিল ৯ দশমিক ৯৪ শতাংশ। এই হার গত প্রায় এক যুগের মধ্যে সর্বোচ্চ।
সরকারের বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের হিসেবে (টিসিবি) গত এক বছরে দেশে সব চেয়ে বেশি বেড়েছে পেঁয়াজ, আদা, রসুন, মাছ, মাংস, ডিম ও চিনির দাম। নিত্যপণ্যের দামের প্রভাবেই খাদ্যে মূল্যস্ফীতি এতটা বেড়েছে। টিসিবির হিসেবেই, বর্তমানে রাজধানীর খুচরা বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৮০ থেকে ৯০ টাকা, আমদানিকৃত পেঁয়াজ ৬৫ থেকে ৭৫ টাকা, দেশি রসুন ২২০ থেকে ২৫০ টাকা, আমদানিকৃত রসুন ২২০ থেকে ২৪০ টাকা, রুই মাছ ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, গরুর মাংস ৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকা, চিনি ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকা ও ফার্মের ডিমের হালি ৫০ থেকে ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অথচ গত বছর প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, আমদানিকৃত পেঁয়াজ ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, দেশি রসুন ৬০ থেকে ৮০ টাকা, আমদানিকৃত রসুন ১১০ থেকে ১৩০ টাকা, রুই মাছ ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা, গরুর মাংস ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা, চিনি ৮৮ থেকে ৯০ টাকা ও ফার্মের ডিমের হালি ৪০ থেকে ৪৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। বিভিন্ন নিত্যপণ্যের পাশাপাশি মাছের দামও বেড়েছে। দাম কম থাকায় স্বল্প আয়ের মানুষের মাছ হিসেবে তেলাপিয়া ও পাঙাশ ছিল পছন্দের শীর্ষে। কিন্তু দাম বাড়ায় এই মাছও কিনতে এখন দুই বার ভাবতে হচ্ছে স্বল্প আয়ের মানুষকে। গতকাল বাজারে আকারভেদে প্রতি কেজি পাঙাশ ২২০ থেকে ২৫০ টাকায় ও তেলাপিয়া ২৫০ থেকে ২৮০ টাকায় বিক্রি হয়। যা এক বছর আগেও যথাক্রমে ১৮০ থেকে ২০০ টাকা ও ২০০ থেকে ২২০ টাকায় পাওয়া গেছে।
বিবিএসের হালনাগাদ তথ্যে দেখা গেছে, আগস্টে সার্বিক খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছে ১২ দশমিক ৫৪ শতাংশ। জুলাইয়ে এ হার ছিল ৯ দশমিক ৭৬ শতাংশ। অর্থাত্, আগস্টে খাদ্য মূল্যস্ফীতি বেড়েছে ২ দশমিক ৭৮ শতাংশ। এর মধ্যে গ্রামে আগস্টে খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছে ১২ দশমিক ৭১ শতাংশ। আর শহরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ১২ দশমিক ১১ শতাংশে। অন্যদিকে সার্বিক খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি জুলাইয়ের ৯ দশমিক ৪৭ শতাংশ থেকে কমে আগস্টে ৭ দশমিক ৯৫ শতাংশ হয়েছে। এর মধ্যে আগস্টে গ্রাম এলাকায় খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি ৭ দশমিক ৩৮ শতাংশ ও শহর এলাকায় এটি ৮ দশমিক ৪৮ শতাংশ। এ ছাড়া গ্রামে আগস্টে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৯ দশমিক ৯৮ শতাংশ। যা জুলাইয়ে ছিল ৯ দশমিক ৭৫ শতাংশ। আর শহরে এখন সার্বিক মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৬৩ শতাংশ। যা গত জুলাইয়ে ছিল ৯ দশমিক ৪৩ শতাংশ।