| |
               

মূল পাতা আন্তর্জাতিক এশিয়া সীমান্ত অচলাবস্থার অগ্রগতি অর্জনে ব্যর্থ বেইজিং ও নয়াদিল্লি


সীমান্ত অচলাবস্থার অগ্রগতি অর্জনে ব্যর্থ বেইজিং ও নয়াদিল্লি


আন্তর্জাতিক ডেস্ক     17 August, 2023     09:46 AM    


চীন ও ভারতের মধ্যকার সীমান্ত বিরোধ বেশ পুরোনো। সময়ে সময়ে এ বিরোধ সংঘর্ষেও পর্যবসিত হয়। সীমান্ত উত্তেজনা বন্ধে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দেশ দুটি প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করলেও মূলত কোনো পক্ষই ন্যূনতম ছাড় দিতে রাজি নয়। ফলে অচলাবস্থায় রূপ নিয়েছে এ সমস্যা। সর্বশেষ বিরল দু’দিনের বৈঠকেও সীমান্ত অচলাবস্থার কোনো অগ্রগতি অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে বেইজিং ও নয়াদিল্লি। অবশ্য উভয় পক্ষ সংলাপ অব্যাহত রাখতে সম্মত হয়েছে।

আগামী সপ্তাহে দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠেয় ব্রিকস সম্মেলনে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাক্ষাৎ হতে যাচ্ছে। এর কয়েক দিন আগে গত সোম ও মঙ্গলবার হওয়া কর্পস কমান্ডার পর্যায়ের সীমান্ত বৈঠকটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছিল। এটি সীমান্ত বিরোধ নিয়ে দু’দিন ধরে প্রথম কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠক ছিল। শেষ পর্যন্ত এ আলোচনাও ব্যর্থ হয়েছে। মঙ্গলবার যৌথ বিবৃতিতে আলোচনাকে ‘ইতিবাচক, গঠনমূলক ও গভীরতাপূর্ণ’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। এর আগে গত এপ্রিলেও আলোচনার পর দু’পক্ষ একই ধরনের যৌথ বিবৃতি দিয়েছিল। সুতরাং বিবৃতির মতো আলোচনাতেও নতুন কিছু নেই বলেই ধারণা করা হচ্ছে। খবর সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট ও এপির।

সর্বশেষ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নেতৃত্বের দিকনির্দেশনার সঙ্গে সংগতি রেখে তারা খোলামেলা এবং দূরদর্শী উপায়ে মতামত বিনিময় করেছে। সামরিক ও কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে সংলাপ এবং আলোচনার গতি অব্যাহত রাখতে সম্মত হয়েছে বেইজিং ও নয়াদিল্লি। পাশাপাশি অন্তর্বর্তীকালে উভয় পক্ষ সীমান্ত অঞ্চলে শান্তি ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে সম্মত হয়েছে।

প্রতিরক্ষা সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, উভয় পক্ষই পূর্ব লাদাখ অঞ্চলের বিরোধপূর্ণ হিমালয় সীমান্তে ৩ হাজার কিলোমিটার লাইন অব অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল (এলএসি) বরাবর সৈন্যসংখ্যা এবং সরঞ্জাম না বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। বিভিন্ন ধরনের প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও এলএসি বরাবর গালওয়ান উপত্যকায় ২০২০ সালের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর থেকে ভারত ও চীন উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সৈন্য এবং উন্নত অস্ত্র মোতায়েন অব্যাহত রেখেছে। ওই সংঘর্ষে অন্তত ২০ ভারতীয় এবং চার চীনা সৈন্য নিহত হয়। এটি ছিল কয়েক দশকের মধ্যে দেশ দুটির সবচেয়ে মারাত্মক সীমান্ত সংঘর্ষ। গত ডিসেম্বরেও অরুণাচল প্রদেশের তাওয়াং সীমান্তে ছোটখাটো সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এর আগে ১৯৬৭ ও ১৯৭৫ সালে সীমান্তে দু’দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে বড় ধরনের সংঘর্ষ এবং প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। এরপর দেশ দুটি সীমান্তে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার না করার চুক্তিসহ প্রোটোকল গ্রহণ করলেও তা খুব বেশি টেকসই হয়নি।

ভারতীয় গণমাধ্যমের খবর অনুসারে, ভারত কৌশলগত এলাকায় প্রাক-গালওয়ান স্থিতাবস্থা পুনরুদ্ধার করতে চায়। ওই সংঘর্ষের পর থেকে নয়াদিল্লিও সীমান্তে নতুন অবকাঠামো তৈরি করছে।

সাবেক ভারতীয় কূটনীতিক ও রাষ্ট্রদূত রাজীব ডোগরা চীন-ভারত সম্পর্ক নিয়ে আশাবাদী। তিনি মনে করেন, সামনে একটি অস্বস্তিকর সময় আসছে। তিনি বলেন, ৯-১০ সেপ্টেম্বর বৃহত্তম অর্থনীতিগুলোর জোট জি২০-এর শীর্ষ সম্মেলনে শি জিনপিং নয়া দিল্লি সফর করবেন। এর আগে আগামী সপ্তাহে ব্রিকস সম্মেলন হবে। এ দুটি বৈঠকে কী ঘটবে, তার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করছে।

সম্প্রতি দিল্লি-ভিত্তিক থিঙ্ক ট্যাঙ্ক সেন্টার ফর পলিসি রিসার্চের কৌশলগত অধ্যয়নের অধ্যাপক ব্রহ্ম চেলানি বলেছেন, ‘এমন সময়ে চীনা প্রেসিডেন্ট ও ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে বসছেন, যখন উভয় পক্ষের হাজার হাজার সৈন্য হিমালয়ের বিশাল অংশে মুখোমুখি হচ্ছে। সীমান্ত উত্তেজনা প্রশমনের চেষ্টা না করেই জিনপিংয়ের নয়াদিল্লি সফর খুবই অদ্ভুত হবে।’