রহমত নিউজ 28 July, 2023 11:18 AM
খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের বলেছেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তিন মাস আগেই ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। আর পদত্যাগের মধ্য দিয়েই জাতীয় সংসদ ভেঙ্গে দিতে হবে। তারপরই নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সব দলের অংশগ্রহণে জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে। আমরা সংঘাত চাই না, দেশবাসী সংঘাত চায় না। সংঘাত থেকে উত্তরণে এই সরকারের পদত্যাগের কোন বিকল্প পথ নেই। যদি সংঘাত না চান- তাহলে পদত্যাগ করে দেশকে সংঘাতমুক্ত পরিস্থিতি তৈরি করুন।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) বিকেলে খুলনা নগরীর নিউ মার্কেট সংলগ্ন বায়তুন নূর জামে মসজিদ চত্বরে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ, নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন, গ্রেফতারকৃত আলেম-উলামা ও রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের মুক্তি এবং জাতীয় সংকট উত্তোরণসহ ৮ দফা দাবিতে খেলাফত মজলিসের খুলনায় বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন। সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল নগরীর বায়তুন নূর মসজিদ চত্বর থেকে ডাকবাংলা চত্বরে গিয়ে শেষ হয়।
ড. আহমদ আবদুল কাদের বলেন, দেশ আজ এক মহাসংকটে পড়েছে। একদলীয় শাসনে সাধারণ মানুষ শোষিত হচ্ছে। দ্রব্যমূল্যের চরম ঊর্ধ্বগতি সরকার রোধ করতে ব্যর্থ হয়েছে। বিরোধী দলগুলোর রাজনৈতিক কর্মসূচিতে বাঁধা দেওয়া হচ্ছে। ঢাকায় আওয়ামী লীগ-বিএনপি’র সমাবেশকে কেন্দ্র করে দেশব্যাপী সংঘাতময় পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এ পরিস্থিতি থেকে জাতিকে বাঁচাতে হবে। কঠোর আন্দোলনের মধ্যদিয়ে নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের মাধ্যমে জনতার সরকার ও ইসলামী খেলাফত প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এখনও সময় আছে- পদত্যাগ করুন। পদত্যাগ করে নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন।
সমাবেশে বিশেষ অতিথির ভাষণে দলের নায়েবে আমীর অধ্যাপক সিরাজুল হক বলেন, ১৯৭১ সালের লড়াই ছিল জালেমের বিরুদ্ধে মজলুমের লড়াই। কিন্তু স্বাধীনতা অর্জনের ৫০ বছরেও সেই জালেমদের উৎখাত করতে পারিনি। আজকেও সেই জালেমরাই ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত রয়েছে। পকিস্তান ও ব্রিটিশদের তাড়িয়েছি। কিন্তু সেই ব্রিটিশদের প্রেতাত্মা আজও রয়েছে বাংলাদেশে। এই দেশে ধণী আরও ধণী হয়েছে-গরীব আরো গরীব হয়েছে। তাই আন্দোলনের মাধ্যমে চূড়ান্তভাবে জালিমদের পরাজিত করে মজলুমদের রাজত্ব কায়েম করতে সকলের প্রতি আহবান জানান তিনি।
সমাবেশে বিশেষ অতিথির ভাষণে দলের যুগ্ম মহাসচিব মুহাম্মদ মুনতাসির আলী বলেন, খেলাফত মজলিস বাংলাদেশে আপোষহীনভাবে রাজনীতি করে আসছে। খেলাফত মজলিস মনে করে বাংলাদেশে যে রাজনৈতিক সংঘাত ও সংকট সৃষ্টি হয়েছে, মানুষের ভোটাধিকার হরণ করা হয়েছে- তার মূল কারণ হচ্ছে- এ দেশে খেলাফত রাষ্ট্র ব্যবস্থা কায়েম নেই। এ দেশে রাজনৈতিক অধিকার, সাংবিধানিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে হলে চূড়ান্তভাবে খেলাফত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে সংগঠনের নায়েবে আমির ও খুলনা বিভাগীয় সমাবেশের তত্ত্বাবধায়ক মাওলানা সাখাওয়াত হোসাইন বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ, নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন, গ্রেফতারকৃত আলেম-উলামা ও রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের মুক্তি এবং জাতীয় সংকট উত্তোরণসহ ৮ দফা দাবিতে খেলাফত মজলিস সারাদেশে বিভাগীয় সমাবেশ করছে। খুলনায় ৯ম সমাবেশ অনুষ্ঠিত হলো। খুলনা বিভাগীয় সমাবেশ করার জন্য নগরীর সোনালী ব্যাংক চত্বর এবং ডাকবাংলা চত্বর ব্যবহারের অনুমতি চেয়ে খুলনার পুলিশ কমিশনার বরাবর আবেদন করা হয়। কিন্তু শেষ মুহূর্তে এসে এ দু’টি স্থানের কোনটিতে আমাদের সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়া হয়নি। ফলে বাধ্য হয়ে বায়তুন নূর মসজিদ চত্বরে সমাবেশ করতে হয়েছে। যে কারণে সকল প্রস্তুতি থাকা স্বত্বেও পরিপূর্ণ আয়োজন সম্ভব হয়নি। তারপরও বৈরি আবহাওয়াসহ সার্বিক পরিস্থিতিতে বিভিন্ন স্থান থেকে দলীয় নেতা-কর্মী এবং সাধারণ মানুষ সমাবেশে অংশ নেওয়ায় শুকরিয়া আদায় করেন তিনি।
দলের নায়েবে আমির ও খুলনা বিভাগীয় সমাবেশের তত্ত্বাবধায়ক মাওলানা সাখাওয়াত হোসাইনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন, সাংগঠনিক সম্পাদক মুহাম্মদ আব্দুল মজিদ, প্রশিক্ষণ সম্পাদক অধ্যাপক কাজী মিনহাজুল আলম, কেন্দ্রীয় পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক একেএম মাহবুব আলম, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র মজলিস সেক্রেটারি জেনারেল রায়হান আলী।
ইমদাদুল্লাহ আজমী ডালিমের সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন, দলের নির্বাহী সদস্য মুফতি আব্দুল হামিদ, হাফেজ মাওলানা আফতাব উদ্দিন, সমাবেশ বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক মাওলানা নাসির উদ্দিন, খুলনা জোন পরিচালক ডাক্তার মোঃ আসাদুল্লাহ, কুষ্টিয়া জোন পরিচালক মোঃ সিরাজুল ইসলাম,বাগেরহাট জেলা সভাপতি মাওলানা আমিরুল ইসলাম, খুলনা জেলা সভাপতি মাওলানা এমদাদুল হক, নড়াইল জেলা সভাপতি মাওলানা আব্দুল হান্নান সরদার, চুয়াডাঙ্গা জেলা সভাপতি মাওলানা মনিরুজ্জামান, ঝিনাইদহ জেলা সভাপতি মাওলানা আবুল হাসান, খুলনা মহানগর সভাপতি মাওলানা আলী আহমদ, যশোর জেলা সভাপতি হাফেজ মাওলানা আব্দুল্লাহ, মেহেরপুর জেলা সভাপতি মুফতি সাদিকুর রহমান, খুলনা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক এবং সমাবেশ বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য সচিব মাওলানা আব্দুল্লাহ যোবায়ের, মাওলানা শফিকুল ইসলাম ইসলাম, এ্যাড. শহিদুল ইসলাম, শ্রমিক মজলিস কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদক এইচ.এম এরশাদ, হাফেজ সাজ্জাদ হোসেন, জামান বিন রায়হান, মোঃ আকরামুল ইসলাম, হাঃ শোয়াইব আহমেদ, শেখ মিজানুর রহমান, মাওলানা ফয়জুল্লাহ সিদ্দিকী, মাওলানা সাজ্জাদুল্লাহ রায়হানী, মোঃ মামুনুর রশীদ, মাওলানা আজিজুর রহমান, মাওলানা মোহাম্মাদুল্লাহ, মাসুম বিল্লাহ প্রমূখ।
এই এলাকার অন্যান্য সংবাদ দেখতে ক্লিক করুন: খুলনা