| |
               

মূল পাতা শিক্ষাঙ্গন ‘ছাত্রলীগে পদ পেয়ে ফেসবুকে পোস্টকারী ছাত্রকে সতর্ক করবে বুয়েট’


‘ছাত্রলীগে পদ পেয়ে ফেসবুকে পোস্টকারী ছাত্রকে সতর্ক করবে বুয়েট’


রহমত নিউজ ডেস্ক     16 July, 2023     08:46 AM    


বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক পদ প্রাপ্তির বিষয়টি ফেসবুকে পোস্ট করায় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী হাসিন আজফার পান্থকে সতর্ক করবে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়-বুয়েট কর্তৃপক্ষ।

২০১৯ সালে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের রাতভর নির্যাতনে শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের পর থেকে বুয়েটে রাজনীতি করা, কাউকে উদ্বুদ্ধ করা এবং রাজনীতিতে পদ পাওয়ার বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানানো নিষিদ্ধ করেছে বুয়েট প্রশাসন।  

গত বৃহস্পতিবার রাতে ৩০১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি দিয়েছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। এতে বুয়েটের ইলেকট্রিক অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) ১৭তম ব্যাচের হাসিন আজফার পান্থকে তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ও সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ হোসেন রাহিমকে কার্যনির্বাহী সদস্য পদ দেয়া হয়েছে।

শনিবার (১৫ জুলাই) রাতে বুয়েট শিক্ষার্থীদের পরিচালিত ‘বুয়েটিয়ান’ নামক ফেসবুক পেজে লেখা হয়েছে, ছাত্ররাজনীতির কলঙ্কজনক কর্মকাণ্ডের ধারাবাহিকতায় ৭ অক্টোবর, ২০১৯ আবরার ফাহাদের হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে ইতিহাসের ভয়ংকরতম অধ্যায়ের সাক্ষী হয় বুয়েট। এরপরই শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে মাননীয় উপাচার্যের ক্ষমতাবলে বুয়েটে সকল প্রকার সাংগঠনিক ছাত্ররাজনীতি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। কোন নির্দিষ্ট ছাত্র সংগঠন নয় বরং সকল ধরনের রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠনই এই নিষেধাজ্ঞার আওতাভুক্ত। গত ১৩ জুলাই, ২০২৩ বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করা হয় যেখানে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইজন বর্তমান শিক্ষার্থী '২১ ব্যাচের ইমতিয়াজ হোসেন রাহিম রাব্বি (২১০৪১৪১) ও '১৭ ব্যাচের হাসিন আজফার পান্থ (১৭০৬১৭৭) -কে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে; যা সাংগঠনিক ছাত্ররাজনীতির সাথে তাদের সংশ্লিষ্টতা প্রমাণ করে। সামগ্রিকভাবে এই ঘটনায় পুনরায় ক্যাম্পাসে সাংগঠনিক ছাত্ররাজনীতি আবির্ভাবের আশঙ্কায় শিক্ষার্থীরা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদ্বয়ের প্রতি অত্যন্ত ক্ষুব্ধ এবং এটিকে ক্যাম্পাসের সুষ্ঠু, শৃঙ্খল ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশের জন্যে হুমকি হিসেবে মনে করছে। তদুপরি পদধারী শিক্ষার্থীদ্বয় অন্যান্যদেরকেও ছাত্ররাজনীতিতে যুক্ত হওয়ার ব্যাপারে প্ররোচিত করছে বলে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে অভিযোগ রয়েছে, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালার সম্পূর্ণ পরিপন্থী।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীর পক্ষ থেকে প্রশাসনের কাছে ইমতিয়াজ হোসেন রাহিম রাব্বি ও হাসিন আজফার পান্থকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালা ভঙ্গ এবং শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদ পরিবেশ নষ্ট করার অভিযোগে ডিসিপ্লিনারি কমিটি কর্তৃক তদন্তপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি। এহেন কর্মকাণ্ড ভবিষ্যতে বিশ্ববিদ্যালয়ের আর কোনো শিক্ষার্থী যেনো ঘটাতে না পারে সে ব্যাপারে কর্তৃপক্ষকে আরো দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহ্বান জানাচ্ছি। ২০০২ সালের সনি হত্যাকাণ্ড এবং তৎপরবর্তীতে র‍্যাগিং, ছাত্র নির্যাতন, ক্যাম্পাসে নৈরাজ্য সৃষ্টিসহ নানাবিধ অপকর্মের ক্ষেত্রে মূখ্য ভূমিকা রেখেছিল লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র রাজনৈতিক সংগঠনগুলোতে যুক্ত থাকা শিক্ষার্থীরা। ক্যাম্পাসের এরূপ ভয়াবহ অপতৎপরতার অবসান ঘটে ২০১৯ সালে আবরার হত্যাকাণ্ড পরবর্তী শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে সাংগঠনিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের মধ্য দিয়ে। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে দু’জন বুয়েটিয়ানের পদলাভ আবারো ক্যাম্পাসে রাজনীতি ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে প্রভাব সৃষ্টি করতে পারে বলে আমরা মনে করি। আমাদের বক্তব্য স্পষ্ট, ক্যাম্পাসের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আমরা যেকোনো রকম লেজুড়বৃত্তিক রাজনৈতিক সংগঠনের সাথে বুয়েট শিক্ষার্থীদের সংশ্লিষ্টতার বিরুদ্ধে এবং সর্বাবস্থায় এই আপসহীন অবস্থান বজায় রাখতে সংকল্পবদ্ধ। এসবের সাথে কারো দূরতম সংশ্লিষ্টতাও কখনো মেনে নেওয়া হবে না।

বুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক সত্য প্রসাদ মজুমদার বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের বিষয়গুলো ছাত্রকল্যাণ পরিদপ্তরের পরিচালক দেখেন। তিনি বলতে পারবেন।’

ছাত্রকল্যাণ পরিদপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমাদের শিক্ষার্থীরাও এ বিষয়ে অবহিত করেছে। কেন্দ্রীয় কমিটিতে পদ পেয়েছে, এতে আমাদের করার কিছু নেই। আমাদের সবগুলো নোটিশে বলা হয়েছে, ক্যাম্পাসের মধ্যে কেউ রাজনীতি করতে পারবে না। বাইরে কেউ কিছু করলে আমাদের এখতিয়ারের বাইরে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে শিক্ষার্থী পোস্ট করেছেন তাকে সতর্কমূলক জানানো হবে, না হলে নিয়মানুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। আর ভিসি স্যার ও অন্যান্যদের জানিয়েছি। তারা পরবর্তী ব্যবস্থা নেবেন।’

ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেছেন, ‘বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি থাকবে কি না সেটি ছাত্ররা সিদ্ধান্ত নেবে।’

ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বলেন, ‘বুয়েট ক্যাম্পাসে রাজনীতি নিষিদ্ধ। তবে তাদের অন্যান্য ইউনিটে রাজনীতি করতে বাধা নেই।’