মূল পাতা আন্তর্জাতিক ইউরোপ পশ্চিমা সাহায্যের জন্য ইউক্রেনের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা উচিৎ: ব্রিটিশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী
আন্তর্জাতিক ডেস্ক 13 July, 2023 10:40 AM
অন্যদিকে রাশিয়ার আক্রমণ মোকাবেলায় পশ্চিমা দেশগুলোর কাছ থেকে যথেষ্ট সামরিক সহযোগিতা না পাওয়ার অভিযোগের ব্যাপারে ইউক্রেনকে সতর্ক করে দিয়ে পশ্চিমা দেশগুলো এখনও পর্যন্ত ইউক্রেনকে যে সাহায্য দিয়েছে তার জন্য আরো কৃতজ্ঞতা প্রকাশের জন্য কিয়েভের প্রতি আহবান জানিয়ে ব্রিটিশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেন ওয়ালেস বলেন, ইউক্রেন যখন যুদ্ধ করছে, তাদেরকে এটাও মনে রাখতে হবে যে তারা বিভিন্ন দেশকে তাদের নিজেদের মজুদ থেকে অস্ত্র দিতে বলছে। ইউক্রেনের কাছে লোকজন আরো কৃতজ্ঞতা দেখতে চায়। ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা গত বছর ব্রিটেনের কাছে অস্ত্র চাইলে তিনি তাদেরকে বলেছিলেন, আমরা তো আমাজন (অনলাইন সুপারমার্কেট) নই। ন্যাটোর সম্মেলনে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
এর আগে, লিথুয়ানিয়ার রাজধানী ভিলনিয়াসে দুদিন ধরে অনুষ্ঠিত পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতিরক্ষা জোট ন্যাটোর বার্ষিক সম্মেলনের শেষ দিনে বিশ্বের ধনী দেশগুলোর জোট জি-সেভেনের নেতারা ইউক্রেনকে দীর্ঘমেয়াদী নিরাপত্তা দেয়ার ব্যাপারে আনুষ্ঠানিকভাবে একমত হয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, ইউক্রেন যাতে স্থলে, সমুদ্রে এবং আকাশে শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারে সেজন্য সাহায্য করার ব্যাপারে জি-সেভেনের সদস্য দেশগুলো প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
জি-সেভেনের এই ঘোষণার সমালোচনা করেছে রাশিয়া। ক্রেমলিন বলছে, তাদের এই উদ্যোগের ফলে রাশিয়ার নিরাপত্তা লঙ্ঘিত হবে। জি-সেভেনের ঘোষণাকে তারা অত্যন্ত বিপজ্জনক।
এই সম্মেলনে অন্যান্য বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিও। জি-সেভেনের এই ঘোষণাকে তিনি স্বাগত জানিয়েছেন। কিন্তু এর আগে পর্যাপ্ত সামরিক সাহায্য না পাওয়ার কথা উল্লেখ করে হতাশা প্রকাশ করে জেলনস্কি বলেন, জি-সেভেনের এই ঘোষণা ন্যাটোর সদস্য হওয়ার বিকল্প হতে পারে না।
রাশিয়ার প্রতিবেশী ইউক্রেন কয়েক বছর আগে থেকেই তাদেরকে ন্যাটোতে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানিয়ে আসছিল। কিন্তু গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন ইউক্রেনে সর্বাত্মক যুদ্ধ ঘোষণা করার পর কিয়েভের এই দাবি আরো জোরালো হয়েছে।
ইউক্রেন এখনই ন্যাটোর সদস্য হতে চায় কারণ এই জোটের সংবিধানের পাঁচ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে এর কোনো একটি সদস্য দেশ আক্রান্ত হলে বাকি দেশগুলো তাকে নিজেদের ওপর আক্রমণ হিসেবে গণ্য করবে এবং আক্রান্ত দেশকে সাহায্য করার জন্য এগিয়ে আসবে। কিন্তু সংবিধানে এও বলা আছে যে, কোনো দেশ যুদ্ধে লিপ্ত থাকলে তাকে সদস্য করা যাবে না। ইউক্রেনকে এখনই সদস্য না করার কারণে কিয়েভের দিক থেকে ন্যাটোর সমালোচনা করা হচ্ছিল। তারা চাইছিল ইউক্রেনকে সদস্য করার ব্যাপারে এবারের সম্মেলনে যেন সুনির্দিষ্ট কিছু ঘোষণা করা হয়।
প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কিও ন্যাটোর সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন এবিষয়ে ন্যাটোর সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ন্যাটোতে ইউক্রেনের যোগদানের বিষয়ে বিস্তারিত ঘোষণা না দেওয়া গ্রহণযোগ্য নয়। কিন্তু সম্মেলনে ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার ব্যাপারে ইউক্রেনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। এমনকি দেশটিকে কবে নাগাদ সদস্য করা হতে পারে তার কোনো সময়ও উল্লেখ করেনি।
পরে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক বলেছেন, প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বেশ কয়েকবারই সাহায্যের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
এদিকে ন্যাটোর এই সম্মেলন চলাকালে ইউক্রেনের ওপর আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে রাশিয়া। ইউক্রেন বলছে, তারা রাজধানী কিয়েভ লক্ষ্য করে সোমবার রাতে ছোড়া ১১টি ড্রোন গুলি করে ধ্বংস করেছে। আগের রাতেও কিয়েভে একই ধরনের হামলা চালানো হয়েছে। ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে, রাজধানীর বাইরে অন্যান্য এলাকাতেও যাতে বেশ কিছু লোক আহত হয়েছে। মঙ্গলবারেও তারা রাশিয়ার ২০টি ড্রোন ধ্বংস করেছে। এর মধ্যে দক্ষিণাঞ্চলীয় বন্দর শহর ওডেসাতে কয়েকটি ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে।