প্রবাস ডেস্ক 07 June, 2023 01:04 PM
সৌদি আরবের নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেছেন, চলতি অর্থবছরের এপ্রিল মাস পর্যন্ত সৌদি প্রবাসীরা দেশে প্রায় ৩.৪ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। সৌদি আরব থেকে হুন্ডি পরিহার করে বৈধ পথে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স প্রেরণ করা হলে তা অনেকাংশে বৃদ্ধি পাবে। চলতি অর্থবছরের এপ্রিল মাস পর্যন্ত সৌদি প্রবাসীরা দেশে প্রায় ৩.৪ বিলিয়ন ডলার পাঠিয়েছেন। তবে সৌদিতে বসবাসরত ২৮ লাখ প্রবাসী বৈধ পথে রেমিট্যান্স প্রেরণ করলে তা আরো অনেকাংশে বৃদ্ধি পেতে পারে। দেশের প্রয়োজনে সৌদি প্রবাসীদের হুন্ডি প্রতিরোধে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
মঙ্গলবার (৬ জুন) সৌদি আরবের রিয়াদে বাংলাদেশ দূতাবাসে ‘রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধি ও হুন্ডি প্রতিরোধে আমাদের করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে এ তথ্য জানান রাষ্ট্রদূত। সেমিনারে রিয়াদের কমিউনিটির বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধি, ব্যবসায়ী, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর, রিয়াদের বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের অধ্যক্ষ ও বিওডি সদস্যসহ অন্যান্যরা যোগ দেন। এছাড়া দূতাবাসের কর্মকর্তারা সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন দূতাবাসের শ্রম কল্যাণ উইংয়ের কাউন্সেলর রেজা-ই রাব্বী। সেমিনারে প্যানেল আলোচক হিসেবে দূতাবাসের মিশন উপ-প্রধান মো. আবুল হাসান মৃধা, ইকনোমিক মিনিস্টার মুর্তুজা জুলকার নাঈন নোমান, সোনালী ব্যাংকের এ জি এম মো. তৌফিকুর রহমান, প্রকৌশলী মোয়াজ্জেম হোসেন, রিয়াদ আওয়ামী পরিষদের সভাপতি এম আর মাহাবুব বক্তব্য দেন। দূতাবাসের প্রেস উইংয়ের উদ্যোগে আয়োজিত সেমিনার সঞ্চালনা করেন প্রথম সচিব মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম।
কমিউনিটির সবাইকে হুন্ডি প্রতিরোধে সাধারণ প্রবাসীদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে রাষ্ট্রদূত জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, বিদেশে আসার আগে দক্ষতা অর্জন করে এলে ভালো বেতনের চাকরি পাওয়া সম্ভব। দক্ষ কর্মী প্রেরণ করা হলে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়ে যাবে। সৌদি আরবে বাংলাদেশি কর্মীদের গ্রহণযোগ্যতা বাড়ানোর পাশাপাশি শ্রমবাজার সম্প্রসারণে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ দূতাবাস। সৌদির সরকারি প্রতিষ্ঠান তাকামলের মাধ্যমে দক্ষতা যাচাই করার সুযোগ তৈরি হয়েছে সৌদি গমনে ইচ্ছুক বাংলাদেশি কর্মীদের। সৌদির সরকারি প্রতিষ্ঠান তাকামল হোল্ডিং বাংলাদেশে বসেই দক্ষ/আধা দক্ষ কর্মীদের দক্ষতা যাচাইয়ের কাজ করবে এবং সনদ প্রদান করবে। প্লাম্বিং, ইলেকট্রিশিয়ান, মেকানিক, ওয়েল্ডিং, কার্পেন্টার পেইন্টার, প্লাস্টারার, বিল্ডারসহ ২৩টি বিষয়ে দক্ষতা যাচাই ও সনদ প্রদান করা হবে। এছাড়া সৌদি প্রবাসীদের জন্য বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায় বিভিন্ন প্রোগ্রাম চালু আছে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, সৌদিতে আসার ব্যয় কমানোর লক্ষ্যে ভিসা ট্রেডিং বন্ধে দূতাবাস কাজ করছে এবং প্রত্যেকটি ভিসা যাচাই করার বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ভিসা ট্রেডিং বন্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করা হয়ের্ছে। প্রবাসী কর্মীর মাইগ্রেশন কষ্ট না কমানো হলে তাদের আয়ের সুফল পাওয়া যায় না। কারণ একজন প্রবাসী কর্মীর কয়েক বছর লেগে যায় তার বিদেশে আসার ব্যয় তুলে আনতে।
রাষ্ট্রদূত বৈধ পথে রেমিট্যান্স প্রেরণ করে সরকারি আড়াই শতাংশ প্রণোদনা গ্রহণ করার পাশাপাশি দেশের রিজার্ভ বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখার জন্য প্রবাসীদের আহ্বান জানান। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের বিভিন্ন ব্যাংকের অ্যাপস ব্যবহার করে নিজের অ্যাকাউন্ট সৌদিতে বসেই পরিচালনা করার কথা তিনি উল্লেখ করেন। এক্ষেত্রে সৌদি আরবে বসেই সোনালী ব্যাংকের ই-ওয়ালেট ব্যবহারের বিষয়টি তিনি তুলে ধরেন। যেসব বাংলাদেশি প্রবাসী সৌদি আরবে ব্যবসা করছেন তাদের ব্যবসা নিজের নামে রেজিস্ট্রেশন করে বৈধভাবে ব্যবসা করার আহ্বান জানান। এতে সৌদিতে বৈধ ব্যবসার সুযোগের পাশাপাশি দেশে রেমিট্যান্স প্রেরণেও সুবিধা পাওয়া যায়। বিভিন্ন শ্রমিক ক্যাম্পে দূতাবাসের সোনালী ব্যাংকের সেবা প্রদানের জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন তিনি।