| |
               

মূল পাতা জাতীয় অর্থনীতি করজাল বাড়াতে ঘরে ঘরে গিয়ে করদাতা খোঁজার পরামর্শ এফবিসিসিআইর


করজাল বাড়াতে ঘরে ঘরে গিয়ে করদাতা খোঁজার পরামর্শ এফবিসিসিআইর


রহমত নিউজ ডেস্ক     04 June, 2023     11:36 AM    


করজাল বাড়াতে সরকারকে ঘরে ঘরে গিয়ে করদাতা খোঁজার পরামর্শ দিয়ে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি-এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেছেন, করজাল বাড়ানো দরকার। প্রয়োজনে করশুমারি হওয়া উচিত। এর মাধ্যমে বাসাবাড়িতে গিয়ে দেখা দরকার কে কে কর দেওয়ার যোগ্য। প্রস্তাবিত বাজেটে ৩৮ সেবা পেতে দুই হাজার টাকা ন্যূনতম কর দেওয়ার বিধানের পক্ষেও মত দেন। একই সঙ্গে করমুক্ত আয়ের সীমা সাড়ে তিন লাখ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে চার লাখ টাকা করার সুপারিশ করেন তিনি।

শনিবার (৩ জুন)  ঢাকার মতিঝিলে এফবিসিসিআই কার্যালয়ে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির সহসভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী, হাবিব উল্লাহ, আমিন হেলালি, ঢাকা চেম্বারের সভাপতি সামীর সাত্তার প্রমুখ।

লিখিত বক্তব্যের শুরুতেই এফবিসিসিআই সভাপতি বিভিন্ন ধরনের সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও জাতীয় স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিয়ে উন্নয়ন ও জনকল্যাণমুখী বাজেট দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। বাজেট বাস্তবায়নে সুশাসন, দক্ষতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিতে সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন তিনি। কিছুক্ষণ পরে জসিম উদ্দিন বলেন, ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার বিশাল বাজেট বাস্তবায়নে বেশ কয়েকটি চ্যালেঞ্জ রয়েছে। ডলার–সংকট ও বিশ্ব পরিস্থিতির কারণে বিনিয়োগ, আমদানি, রপ্তানি, প্রবাসী আয়, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সবকিছুই নিম্নমুখী। অথচ মূল্যস্ফীতি ঊর্ধ্বমুখী। সরকারকে এই বাজেট মেয়াদে জাতীয় নির্বাচন করতে হবে। সেখানে সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা অনেক।

সংবাদ সম্মেলনে এফবিসিসিআই বলছে, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে অনুৎপাদনশীল ও অপ্রয়োজনীয় খাতে খরচ কমানোর পাশাপাশি বিলাসী ও দরকারি নয়, এমন পণ্যের আমদানি নিয়ন্ত্রণে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তবে সরকারের ব্যয় সংকোচন নীতি আরও শক্ত হওয়া প্রয়োজন। সরকারের ব্যয় তদারকির জন্য আইএমইডি বিভাগকে আরও শক্তিশালী করা দরকার। আগামী অর্থবছরের বাজেটে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে পাঁচ লাখ কোটি টাকা। এই বিশাল রাজস্ব সংগ্রহ করা সরকারের জন্য একটি বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ। বেশি রাজস্ব আদায় করার বিষয়ে আমরা দ্বিমত করি না। তবে আদায় কীভাবে করা হবে, সে বিষয়ে দিকনির্দেশনা থাকলে আমাদের জন্য সুবিধা হয়।’ রাজস্ব আদায় বাড়াতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) দক্ষতা ও সক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি অটোমেশনে জোর দেন তিনি।

এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি  বলেন, দেশে যখন গ্যাস–বিদ্যুৎ পরিস্থিতি ভালো ছিল, তখন সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ হয়েছে। বর্তমানে আমাদের গ্যাস ও বিদ্যুৎ খাত অনেকটা আমদানিনির্ভর হয়ে পড়েছে। আমাদের মতো ব্যবসায়ীদের কাছে অন্ধকার বেশি ব্যয়বহুল। বিদ্যুৎ কীভাবে স্মার্টলি দেওয়া যায়, সেটি ভাবতে হবে। উৎপাদনের খরচ যতটা কমিয়ে আনা সম্ভব, সেটি করতে হবে। গ্যাসের জোগান বাড়াতে বাপেক্সের সক্ষমতা বাড়ানো দরকার। এখানে বিনিয়োগ করতে হবে। কাতারের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির পর তারা এলএনজি সরবরাহ করতে চাইছিল না। তার মানে টাকা থাকলেই সব সময় জ্বালানি পাওয়ার নিশ্চয়তা নেই। অগ্রিম আয়কর বিলুপ্ত না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন, অগ্রিম আয়কর বা এআইটি ও আমদানি পর্যায়ে অগ্রিম কর (এটি) ব্যবসায়িক খরচ বাড়িয়ে দিচ্ছে। অগ্রিম আয়কর যথাসময়ে সমন্বয় না হওয়ায় পরিচালন ব্যয় বেড়ে যায়। অগ্রিম আয়কর যদি পরে ফেরত দেওয়া হয়, তাহলে কেন নেওয়া হয়।

সভাপতির লিখিত বক্তব্য শেষ হওয়ার আগেই চারটার কয়েক মিনিট পর লোডশেডিংয়ে পুরো মিলনায়তন অন্ধকার হয়ে যায়। তখন কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই জেনারেটর চালু হয়। আবার বক্তব্য শুরু করেন সভাপতি। কিছুক্ষণ পর শুরু হয় প্রশ্নোত্তরপর্ব। তিনজন সাংবাদিক প্রশ্ন করেন। উত্তর দিচ্ছিলেন জসিম উদ্দিন। ৪টা ২৫ মিনিটে আবার পুরো মিলনায়তন অন্ধকার হয়ে যায়। জেনারেটর ব্যাকআপ দিতে না পারায় এমনটা হচ্ছে বলে জানান এফবিসিসিআইয়ের দু-একজন কর্মকর্তা। এমন অন্ধকারে কয়েক মিনিট সংবাদ সম্মেলন বন্ধ ছিল। গরমে নিজের স্যুট খুলে ফেলেন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি। পাশে বসা সহসভাপতি হাবিব উল্লাহ ডনকে গরম থেকে বাঁচতে কাগজ দিয়ে বাতাস করতে দেখা যায়। এমন পরিস্থিতিতে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তর দেন সভাপতি। আরও দু-তিনজন সাংবাদিক প্রশ্ন করার জন্য অনুমতি চাইছিলেন। তবে বেশি দেরি না করে সংবাদ সম্মেলন শেষ করেন জসিম উদ্দিন।