রহমত নিউজ ডেস্ক 31 May, 2023 06:47 PM
আসন্ন ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে পারিবারিক কৃষিকে স্বীকৃতি দেওয়াসহ গ্রামীণ নারী ও আদিবাসী মানুষের জন্য বরাদ্দের প্রয়োজনীয়তা কথা উল্লেখ করে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সভাপতি ড. আবুল বারকাত বলেছেন, বৈষম্য হ্রাস ও দারিদ্র্য বিমোচনে জাতীয় বাজেট যথেষ্ট কার্যকর হাতিয়ার হতে পারে যদি বাজেটের মূল লক্ষ্য হয় বৈষম্য হ্রাস ও দারিদ্র্য বিমোচন। করোনার পরে দেশে বহুমাত্রিক দরিদ্র মানুষের সংখ্যা বেড়েছে। গত ২-৩ বছরে ৩ কোটি ৪০ লাখ মানুষ নতুন করে দরিদ্র হয়েছেন। এসব নব্য দরিদ্ররা আছেন পারিবারিক কৃষিতে, গ্রামীণ নারী সমাজে, আদিবাসী সমাজে, শহর নগরের বস্তি ও স্বল্প আয়ী আবাসস্থলে।
আজ (৩১ মে) বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট রিসার্চ সেন্টার-এইচডিআরসির সহায়তায় অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট-এএলআরডি আয়োজিত ‘জাতীয় বাজেটে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে অংশীদারত্ব, বাজেট ভাবনা এবং মনিটরিং’ শীর্ষক জাতীয় সেমিনারে তিনিএসব কথা বলেন। সেমিনারে বক্তব্য রাখেন মানবাধিকার কমিশনের সাবেক সদস্য নিরূপা দেওয়ান, নিজেরা করির চেয়ারপারসন খুশী কবির, এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক শফিক উজ জামান, এএলআরডি'র নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা প্রমুখ।
ড. আবুল বারকাত বলেন, সরকারের আসন্ন বাজেট ৭ লাখ ৬৪ হাজার কোটি টাকা হতে পারে। সে হিসাবে আমাদের গড় মাথাপিছু জাতীয় আয় ৪৪ হাজার ৯৫১ টাকা। এই টাকাটা প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষ, অবহেলিত মানুষের কাছে পৌঁছাতে হবে। দেশে গ্রামীণ নারীদের সংখ্যা ৪১ শতাংশ। কিন্তু এই গ্রামীণ নারীরা বাজেটে ৫ দশমিক ৭ শতাংশ বরাদ্দ পান। এটা চরম বাজেট বৈষম্য। আদিবাসীদের জন্য বাজেট বরাদ্দ ১ দশমিক ৪২ শতাংশ। এ ক্ষেত্রেও বাজেটে বরাদ্দ বাড়ানো জরুরি। কৃষি, ভূমি, জলা সংস্কার হলে ৮২ শতাংশ মানুষ সুবিধা পাবে। তাই এই খাতে বরাদ্দ বাড়াতে হবে। পারিবারিক কৃষিকে স্বীকৃতি দিতে হবে। এটি স্বীকৃতি পেলে কৃষি অর্থনীতি আরো শক্তিশালী হবে। যে পরিমাণ কালো টাকা আছে তার ২ শতাংশও যদি উদ্ধার করা হয়, তাহলে এর পরিমাণ হবে ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা। এই কালো টাকার উদ্ধারে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
সমাজকল্যাণ বিষয়ক সংসদীয় কমিটির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এমপি বলেন, আইএমএফের শর্ত পূরণ করে কীভাবে বাজেট প্রণয়ন করা যায়, মুদ্রাস্ফীতি কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায় সেটিই হয়ত এবার বিবেচ্য হবে। আগে পার্লামেন্টারি মেম্বারদের নিয়ে একটি প্রাক বাজেট আলোচনা করা হত, এখন আর তেমন করা হয় না। এখন অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে বাজেট তৈরি করে প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রেরণ করা হয়। তারপর প্রধানমন্ত্রী তার বিবেচনা অনুযায়ী তা পাস করেন। তারপর সংসদে 'হ্যাঁ/না' ভোটের দ্বারা বাজেট পাস করা হয়। কিন্তু সংসদ সদস্যদের 'হ্যাঁ/না' এর মধ্যে না রেখে বাজেটের সাথে সম্পৃক্ত করলে আরও ভালো হতো। বৈষম্য কমিয়ে আনার বিষয়টি বাজেটে গুরুত্ব দেওয়া উচিত। গ্রামীণ নারী, আদিবাসীসহ প্রান্তিক পর্যায়ের বিভিন্ন অবহেলিত কমিউনিটিকে চিহ্নিত করে বাজেটে আলাদা বরাদ্দ রাখা উচিত। এই বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দিয়ে ভবিষ্যতে বাজেটে যাতে তাদের জন্য বরাদ্দ থাকে সেজন্য সবাইকে কাজ করতে হবে।