রহমত নিউজ ডেস্ক 15 May, 2023 09:34 PM
নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক এবং সিপিডির সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, বাংলাদেশে আগে থেকেই বিভিন্ন ক্ষেত্রে বৈষম্য রয়েছে। এখন আইএমএফের শর্ত পরিপালনে প্রয়োজনীয় খাতে ভর্তুকি তুলে দেওয়া হলে এ বৈষম্য আরও বেড়ে যেতে পারে। যেসব দেশে আইএমএফের কর্মসূচি চালু আছে সেসব দেশে বৈষম্য বাড়ছে। বাংলাদেশ আইএমএফ-এর কাছে থেকে ৫৭০ কোটি ডলার ঋণ নিচ্ছে। এজন্য বাংলাদেশ বেশ কিছু সংস্কারমূলক কর্মসূচি শুরু করেছে। এমনিতেই বাংলাদেশে বৈষম্য বেশি, আইএমএফ-এর কর্মসূচি বাস্তবায়নের ফলে বৈষম্য আরো বাড়াবে।
আজ (১৫ মে) সোমবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ারলগ-সিপিডি ও নাগরিক প্ল্যাটফর্ম যৌথভাবে আয়োজিত ‘আইএমএফ’র সময়কালে অসুবিধাগ্রস্ত মানুষের কথা জাতীয় বাজেটে কীভাবে প্রতিফলিত হতে পারে?’ বিষয়ক এক নাগরিক সংলাপে প্রবন্ধ উপস্থাপন করে তিনি এসব কথা বলেন। সিপিডি বোর্ড অব ট্রাস্টি অ্যাডভোকেট সুলতানা কামালের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন. পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, সংসদ সদস্য রানা মোহাম্মদ সোহেল, সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা, সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান, ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ, সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন, বিল্ড-এর নির্বাহী পরিচালক ফেরদৌস আরা বেগম প্রমুখ।
এ বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী মান্নান বলেন,আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল-আইএমএফের উপর আমরা নির্ভরশীল নয়। তাই তাদের শর্ত মেনে জাতীয় বাজেট তৈরি করা হয় না। আমাদের নিজস্ব প্রয়োজনে নিজেরা বাজেট তৈরি করি। আমাদের বাজেট তৈরির ক্ষেত্রে আইএমএফ কোন বিষয় নয়। আইএমএফ তৈরি হয়েছিল সদস্য দেশকে সহযোগিতা করার জন্য। বাংলাদেশ নিজেদের প্রয়োজনে ঋণ নিয়েছে। ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে সংস্থাটি কোন শর্ত দেয়নি।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, সরকারের চালের কর্মসূচিতে চাহিদা মতো চালের সরবরাহ নেই। সরকারের পক্ষ থেকে ১৫ টাকা কেজিতে ৩০ কেজি চাল দেওয়ার কর্মসূচি সম্পর্কে সবাই অবগত নয়। এটা কীভাবে কাজ করছে আমরা দেখেছি। আমরা দেখেছি চাহিদামত চালের সরবরাহ নেই। অনেক চালের বস্তা ওজনে কম, মুখ খোলা। চালের মান ভালো নয়। পরিমাণে দেওয়া হয় কম। গরিব মানুষের সংযোগ হয়নি। সংখ্যালঘু উর্দু ভাষাভাষী মানুষ দেশে বসবাস করেন। এসব মানুষসহ অসুবিধাগ্রস্ত মানুষের জন্য বেশি বরাদ্দ দিতে হবে।
অন্যদিকে সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, দেশে সরকারের কর ব্যয় জিডিপির শতাংশ হিসেবে দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে কম। সরকার অনেক টাকা খরচ করছে না। ট্যাক্স জিডিপি রেশিও সামগ্রিকভাবে সবচেয়ে কম দক্ষিণ এশিয়ায়। যাদের কর দেওয়ার কথা তারা কর দেন না। সরকার ব্যয় ও করতে পারে না। দেশের বড় অংশের মানুষকে পিছিয়ে রেখে উন্নয়ন সম্ভব না। ক্রয়ক্ষমতা না থাকলে উৎপাদক কোথায় পণ্য বিক্রি করবে। ট্যাক্স যাদের কাছ থেকে আদায় করা দরকার তাদের কাছ থেকে আদায়ে উদ্যোগী হবেন। আশা করছি এবারের বাজেটে ঋণ খেলাপি, কর খেলাপিদের সুযোগ বা প্রণোদিত করার ব্যবস্থা থাকবে না। তাদের আইনের আওতার আনার ব্যবস্থা করা দরকার।